‘ইঁদুর-খেকো’ মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ
তাঁর পেশা ছিল ইঁদুর ধরা। অভাব-অনটনে অনেক সময় এই ইঁদুরকেই পরিবারের খাবার হিসেবে নিতে হতো। কিন্তু গত বছর তিনিই হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভারতের বিহারের এক ‘অস্পৃশ্য’ সম্প্রদায় থেকে উঠে এসেছেন জিতান রাম মানঝি। গরিবদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় এই রাজনীতিবিদ গত বছর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলেন। কিন্তু ১০ মাস না পেরোতেই পদত্যাগ করতে হলো তাঁকে।
গতকাল শুক্রবার জিতান রাম মানঝি বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। পরে তাঁর ওপর দলের মধ্যেই আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। ওই ভোটে তাঁর হার প্রায় নিশ্চিত ছিল। এর আগেই এলো পদত্যাগের সিদ্ধান্ত।
ইঁদুর ধরার পেশা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বনে গিয়ে জিতান রাম মানঝি ভারতের অনেক দরিদ্রের কাছেই আদর্শে পরিণত হয়েছিলেন। ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত এত বড় রাজনৈতিক উত্থান আর দেখা যায়নি।
এক সপ্তাহ ধরেই মানঝিকে নিয়ে তাঁর ‘জনতা দলের (ইউনাইটেড)’ মধ্যে সমালোচনা চলছিল। দলের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
জিতান রাম মানঝি নিজেও একাকী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে এটিই পদত্যাগের একমাত্র কারণ নয় বলে তিনি জানান। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগের পর এক সাক্ষাৎকারে জিতান রাম মানঝি বলেন, তাঁর দলের অনেক রাজনীতিবিদই একজন ইঁদুর-ধরা পেশার ব্যক্তিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারেননি।
বিহারের দুই কোটি নিম্নবিত্ত মহাদলিত ‘অস্পৃশ্য’ সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে জিতান রাম মানঝি তুমুল জনপ্রিয়। গত বছরের নির্বাচনে এটিই কাজে লাগায় জনতা দল (ইউনাইটেড)।
জিতান রাম মানঝির নিজের সম্প্রদায় অতিদরিদ্র ‘মুসাহার’। বিহারের ভূমিহীন এই সম্প্রদায়ে শিক্ষার হার ভারতের মধ্যে সবচেয়ে কম। প্রায় দাসের মতোই তাঁদের জীবন-যাপন। এই সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষুধার কারণে ইঁদুর খাওয়ার রীতি প্রচলিত। জিতান মানঝি নিজেও পরিবারের সঙ্গে ইঁদুর খেয়ে বেঁচে থাকার কথা জানান।