জাতিসংঘ সদর দপ্তরে উড়বে ফিলিস্তিনের পতাকা
জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এখন থেকে ফিলিস্তিনের পতাকাও উড়বে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভের পথে আরো এক ধাপ এগোল।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, এ প্রস্তাবের পক্ষে ১১৯ সদস্য ভোট দিয়েছে। ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্রসহ আটটি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ৪৫ সদস্য ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।
এখন থেকে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক মর্যাদার ফিলিস্তিন ও ভ্যাটিকান সিটির পতাকা উড়বে। এ ছাড়া জেনেভা ও ভিয়েনায় জাতিসংঘের কার্যালয় ভবনের বাইরে ফিলিস্তিন ও ভ্যাটিকান সিটির পতাকা ওড়ানো হতে পারে।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এ পতাকা ওড়ানো হবে।
ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, জাতিসংঘের সদর দপ্তরে পোপের সফরের আগে তারা পতাকা ওড়াবে না।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি রিয়াদ মানসুর বলেন, এটি একটি প্রতীকী বিষয়; কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার আরেকটি পদক্ষেপ।’
জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ পেতে ফিলিস্তিনকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্যারিসে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহ জাতিসংঘের সদর দপ্তরে পতাকা ওড়ানোর মর্যাদা লাভের ওপর এই ভোটাভুটির আহ্বান করেন। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভলসের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি আশা প্রকাশ করেন, ফ্রান্সও একদিন ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে পতাকা ওড়ানোর অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নে ইউরোপীয় দেশগুলো বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ফ্রান্স, রাশিয়া ও সুইডেন এর পক্ষে ভোট দিয়েছে। ব্রিটেন, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও সাইপ্রাস ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। চীনও পক্ষে ভোট দিয়েছে।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো দেলাত্তা বলেন, শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার মধ্যে ফিলিস্তিনের জন্য এই পতাকা ওড়ানোর মর্যাদা একটি শক্তিশালী প্রতীক, একটি আশার আভাস। ফিলিস্তিন ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পায়।
জাতিসংঘের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে ইসরায়েল ও এর মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ার বলেছেন, ‘জাতিসংঘের সদর দপ্তরের বাইরে ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানো ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সমঝোতার বিকল্প পথ নয় এবং এর মাধ্যমে উভয়কে শান্তির কাছাকাছি আনতে পারবে না।’
ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রন প্রোসর বলেন, ‘এটি ফিলিস্তিনের নেতাদের স্বার্থে কাজ করবে। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কোনো সাহায্য করবে না।’