মাথায় কাপড় না দিয়ে বিতর্কে মিশেল ওবামা
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/01/30/photo-1422613578.jpg)
ইন্দোনেশিয়ার একটি মসজিদ পরিদর্শনের সময় মাথায় কাপড় দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। ভ্যাটিকানে যখন গিয়েছিলেন, তখনও তা করেছিলেন। কিন্তু সেই তিনিই সৌদি আরব সফরে গিয়ে মাথায় কাপড় না দেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়লেন।
এবারের সৌদি আরব সফরে মিশেল ওবামা একটি কালো রঙের ঢিলেঢালা প্যান্ট এবং থ্রি কোয়ার্টার দৈর্ঘ্যের নীল রঙের কোট পরেছিলেন। সৌদি আরবের মতো রক্ষণশীল মুসলমানদের একটি দেশ, যেখানে নারীদের মাথা ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক, সেখানে গিয়ে মিশেলের কোনো স্কার্ফ বা কাপড় ছিল না মাথা ঢাকার জন্য। তাই মিশেলের সমালোচনায় মুখর সৌদি আরবের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা। সফরের পর থেকে কিছু ব্লগার টুইটারে মিশেলকে কটূক্তি করে বক্তব্য দিচ্ছেন। তাঁরা ‘মিশেল ওবামা উন্মোচিত’ হ্যাসট্যাগ ব্যবহার করে টুইট করছেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে দেশটির রাজধানী রিয়াদে সফরের সময় পশ্চিমা পোশাকেই ছিলেন মিশেল।
এর আগে জেরুজালেমের কুব্বাত আস-সাখরা গম্বুজ এবং সৌদি আরব সফরের সময় মাথায় কাপড় দিয়েছিলেন সাবেক ফার্স্ট লেডি লরা বুশ। তবে ইরিত্রিয়া ও পাকিস্তান সফরে মাথায় কাপড় দিলেও সৌদি আরব সফরে মাথায় কাপড় দেননি হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন।
মার্কিন ফার্স্ট লেডিকে অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয়। এমনকি তিনি কী পরবেন বা কোনো সফরে গেলে কী করবেন, সেটাও ঠিক করে দেওয়া থাকে।
২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রটোকল বিভাগের প্রধান ক্যাপ্রিসিয়া পেনাভিক মার্শাল বলেছেন, কোথাও সফরে গেলে মিশেল সাধারণত সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবার থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক—সব বিষয় দেখতে চান। তাঁর সফরের সব বিস্তারিত সেভাবেই ঠিক করা হয়। তাই হঠাৎ করেই কোনো পোশাক নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। কারণ, তিনি কী পরবেন, তা আগেই ঠিক করা থাকে।
ফার্স্ট লেডির পোশাক একটি রাজনৈতিক সফরের বেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ, এই পোশাকের মাধ্যমেই তিনি সফররত দেশে পশ্চিমা সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন।
২০০৭ সালে তৎকালীন ফার্স্ট লেডি লরা বুশ যখন সৌদি আরব সফরে যান, তখন তাঁর মাথায় কোনো স্কার্ফ বা কাপড় ছিল না। তবে সেখানে ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত একদল নারী যখন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন, তখন তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে তাঁদের হাতে তৈরি গোলাপি ব্যাজওয়ালা কালো রঙের একটি হিজাব মাথায় দেন তিনি।
ক্যাপ্রিসিয়া পেনাভিক জানান, হোয়াইট হাউসের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের পোশাক তৈরি করে দিতে প্রস্তুত থাকে।
তবে ওবামার এবারের সৌদি আরব সফরের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন। কেননা, ভারত সফরের সময়ে হঠাৎ করেই বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দ্রুত নিদ্ধান্ত নিয়ে সৌদি আরব যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট দম্পতি।
সৌদি আরব সফরের কথা আগে থেকেই মিশেল জানতেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাব স্পষ্ট নয়। তবে মিশেল কী পরবেন, তা নিয়ে কোনো প্রশ্নের ব্যাপারে মন্তব্য করেনি হোয়াইট হাউস।