‘হাজিদের ব্যর্থতা, আল্লাহর ইচ্ছায় পদদলন’
মিনায় পদদলিত হয়ে ৭১৭ জন নিহতের ঘটনায় হাজিদেরই দায়ী করেছেন সৌদি আরবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহ। তিনি বলেন, ‘হাজিরা নির্দেশাবলি অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন।
খালিদ আল-ফালিহ বলেন, ‘এ ধরনের দুর্ঘটনাকে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। যাই হোক, এটি আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটেছে।’
এদিকে, সৌদি আরবের মিনায় পদদলিত হয়ে হাজি নিহতের ঘটনার জন্য সৌদি রাজপরিবারকে দায়ী করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এক প্রিন্সের প্রাসাদে যাওয়ার পথ সুগম করে দেওয়ার জন্য রাস্তাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় মিনার একটি পবিত্র স্থানের কাছে এক মোড়ে হাজিদের বিপরীতমুখী দুটি স্রোত পরস্পরকে অতিক্রম করার সময় এ ঘটনায় আট শতাধিক হাজি আহত হয়েছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, শয়তানের উদ্দেশে পাথর মারার রীতি পালনের সময় পদদলনের ঘটনা ঘটে।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়েছে, হাজি ও মুসলিম গোষ্ঠীগুলো সৌদি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা অভিযোগ করে বলেছে, হাজার হাজার হাজি যে দুটি রাস্তা ব্যবহার করে, সৌদি পুলিশ তা বন্ধ করে দেওয়ায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
যুক্তরাজ্যের ওমরা হজ ব্যবস্থাপনাকারী প্রতিষ্ঠান ও হজের এক উপদেষ্টা মোহাম্মদ জাফরি বলেন, ‘হাজিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা বলেছেন, এ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো বাদশা ও তাঁর প্রাসাদ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সদস্যসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছিল। এ কারণে যে স্থানে শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপ করা হয়, সেখানকার দুটি প্রবেশপথ ও দুটি রাস্তা তারা বন্ধ করে দিয়েছিল। এ কারণে দুটি বাধার সৃষ্টি হয়।’
‘যেকোনো সময়ে একজন যুবরাজকে স্বাগত জানানোর জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এ ধরনের একটি দুর্ঘটনার ঘটতে পারে, তা না ভাবার জন্য সৌদি সরকারের ভুল হয়েছে,’ বলেন জাফরি।
রেডিও ফোরস টুডের এক অনুষ্ঠানে জাফরি আরো বলেন, ‘তিনি (ফালিহ) সৃষ্টিকর্তাকে দোষ দেওয়ার জন্য আমি ক্রুদ্ধ হয়েছি। প্রতিটি দুর্যোগের সময় সৌদি সরকার বলে, আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটেছে। এটি আল্লাহর ইচ্ছায় নয়, এটি মানুষের অযোগ্যতায় ঘটেছে।’
মুজদালিফা থেকে শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপের জন্য মুসল্লিরা মিনায় যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনায় আহতদের স্থানীয় মিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলটি মক্কা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে। এবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২০ লাখের বেশি মানুষ মক্কায় হজ পালন করতে গেছেন।