অবশেষে ব্রেক্সিট চুক্তিতে সম্মত ইউরোপীয় ইউনিয়ন
বহু চড়াই-উতরাইয়ের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের আলাদা হয়ে যাওয়ার চুক্তির শর্তগুলোতে রাজি হয়েছে সংস্থাটি। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দরকষাকষির পর এটির অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক।
জিব্রাল্টার নিয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে লিখিত নিশ্চয়তা পাওয়ার পর এই চুক্তি সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।
যুক্তরাজ্য নিয়ন্ত্রিত জিব্রাল্টার প্রণালিসহ বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক এলাকাটিতে এক ধরনের চলাচলের অধিকার চায় স্পেন। এটি না দিলে ইইউ সম্মেলন বয়কটের হুমকি দিয়েছিলেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী।
আজ রোববার ইইউ সম্মেলনে এটি পাস হবে। এ উপলক্ষে ব্রাসেলসে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকও সেরে নিয়েছেন।
এদিকে ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, ‘রোববার দীর্ঘ দরকষাকষির ফসল দেখতে পাবেন সবাই, এতে কারো জন্যই খুশি হওয়ার মতো কিছু নেই। তবে এই দুঃসময়ে অন্তত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ ঐক্য ও সংহতির পরীক্ষায় পাস করতে সক্ষম হলো।’
অন্যদিকে ব্রেক্সিটের ঘোরবিরোধী যুক্তরাজ্যের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ‘চুক্তির আওতায় এবার যুক্তরাজ্য একটি স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে।’
সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের ২৯ মে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে যাবে যুক্তরাজ্য।
২০১৬ সালের জুন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর আগে গণভোটে ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ যুক্তরাজ্যের নাগরিক ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেয়। তবে রোববারের বিশেষ ইইউ সম্মেলনে পাস হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টেও এটি পাস হতে হবে, যেখানে বেশ কিছু এমপি এখন পর্যন্ত এর বিরোধিতা করে আসছেন।
আজকের সম্মেলনে যা হবে
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জাঁ-ক্লদ জাঙ্কার ও ডোনাল্ড টাস্কের সঙ্গে শনিবার সন্ধ্যায় বৈঠক করেছেন। আজ রোববার বিশেষ ব্রেক্সিট সম্মেলনে ইইউ নেতাদের কাছে দুটি চুক্তিপত্রের অনুমোদন চাওয়া হবে। সে দুটি হচ্ছে :
রাজনৈতিক ঘোষণা : এতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার বাণিজ্য ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো কীভাবে সমাধা হবে, তা নির্ধারিত থাকবে এই চুক্তিপত্রে।
৫৮৫ পাতার ইইউ প্রত্যাখ্যানপত্র : ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়তে যুক্তরাজ্যের যেসব আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেসব লেখা থাকবে এতে। এ ছাড়া এতে যুক্তরাজ্যের ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ‘ডিভোর্স বিল’, নাগরিকদের অধিকার এবং যুক্তরাজ্যের অংশ নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও স্বাধীন রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সীমান্তের বিষয়াশয় লিপিবদ্ধ থাকবে।
তবে রোববার তেমন কোনো ভোট হতে যাচ্ছে না, আগে থেকেই ইইউ নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে একপ্রকার সর্বসম্মতি রয়েছেই। তবে শেষ বেলায় এসে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী জিব্রাল্টার নিয়ে দাবিদাওয়া তুলে ধরে বেঁকে বসেন এবং থেরেসা মে তাও মিটিয়ে দিয়েছেন।