মিনা এখন ভুতুড়ে শহর!
মাত্র তিনদিন আগেও লাখো মানুষের পদভারে মুখর ছিল মিনা। দূর-দূরান্ত থেকে সারা বিশ্বের প্রায় ২০ লাখ মুসলমানের পা অন্তত একটিবারের মতো এ এলাকা স্পর্শ করতে এসেছিল। এ যে পুণ্যভূমি। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) একসময় এ মাটির ওপরেই হেঁটেছেন।
শেষ হলো হজ। মিনা এলাকায় এক লাখ ৬০ হাজার তাঁবু খুলে ফেলা হচ্ছে একে একে। হজের সময় এ তাঁবুগুলোই ছিল ২০ লাখ হাজির আবাস। লাখো মানুষের পদভারে কদিন আগেও ব্যস্তনগরী মিনা এখন ভুতুড়ে শহর। শূন্য হয়ে আছে পুরো শহর।
হজ পালনের সময় এই মিনাতেই পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আজ মঙ্গলবার এক হাজার ১০০-তে পৌঁছেছে। এর আগে দেশটির পক্ষ থেকে নিহতের সংখ্যা জানানো হয়েছিল ৭৬৯ জন। আর আহতের সংখ্যা বলা হয়েছিল ৯৩৪ জন।
সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেট জানিয়েছে, গত রোববার থেকে মিনা ছাড়তে শুরু করেছেন হাজিরা। ওই দিনই প্রায় পাঁচ লাখ হাজি মসজিদে নামাজ পড়ে বিদায় নিয়েছেন মিনা থেকে।
১৩ হাজারেরও বেশি কর্মী পবিত্র এ শহরটি পরিষ্কারে কাজ করছেন এখন। উদ্দেশ্য একটাই, আগামী হজ আয়োজনের জন্য প্রস্তুত করে ফেলা।
সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের পরিচালক তুর্কি আল দাহিব বলেন, গত শনিবার ৬৬টি ফ্লাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ২০ হাজার হাজিকে নিজেদের দেশে পৌঁছে দেওয়া হয়। গত রোববার ১৪৪টি ফ্লাইটে সৌদি আরব ত্যাগ করেন ৫০ হাজার হাজি।
দাহিব বলেন, বৃহৎ সংখ্যক হাজিদের প্রস্থানের জন্য হজ টারমিনালকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিদিন ৯১ হাজার হাজি টারমিনাল ব্যবহার করতে পারেন। প্রায় ৩১২টি ফ্লাইট পরিচালিত হবে।
হাজিদের নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে দেশের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা বলেছে সৌদি আরবের পাসপোর্ট বিভাগ জাওয়াজাত। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও যদি কোনো ব্যক্তি না যান, তবে তাঁর শাস্তি হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে জাওয়াজাত। এ ব্যাপারে হজবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সতর্ক করে দিয়েছে জাওয়াজাত।
সৌদি আরবের বেসামরিক বিমান পর্যটন সংস্থা দ্য জেনারেল অথরিটি অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (জিএসিএ) হজবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাসময়ে ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে হাজিদের নিজেদের দেশের উদ্দেশে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। কেবল জরুরি অবস্থা আর খারাপ আবহাওয়ার কারণে কিছুটা বিলম্ব করতে পারবে ফ্লাইট।