মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি
মিয়ানমারে কয়েক যুগ ধরে চলা গৃহযুদ্ধ অবসানে আটটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশটির সরকার।দুই বছর আলোচনার পর বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী নাইপিদোতে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মিয়ানমার সরকার এই চুক্তিকে চূড়ান্ত রাজনৈতিক নিষ্পত্তির প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছে।
মিয়ানমারের জাতীয় টেলিভিশনে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানে দেশটির প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন, সেনা প্রধান ও বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন বলেন, ‘আজ মিয়ানমারের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। আমাদের দেশের জন্য আমরা ভবিষ্যত শান্তির জন্য একটি নুতন পথ খুলতে সক্ষম হয়েছি।’যেসব বিদ্রোহী গ্রুপ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি, ভবিষ্যতে তারাও শান্তিচুক্তি করবে আশাবাদ ব্যক্ত করে থেইন সেইন বলেন,‘বাকী দলগুলোকে শান্তি প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তাদের জন্য দরজা উন্মুক্ত।’
চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি হিসেবে চলতি সপ্তাহের শুরুতে চুক্তি স্বাক্ষরকারী সকল গ্রুপকে সরকারের ‘আইন না মানা সংস্থার’ তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (কেএনএলএ) পিস কাউন্সিল, আরাকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি), চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সিএনএফ), পা-ও ন্যাশনাল লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএনএলও) ও ডেমোক্রেটিক কারেন বেনেভোলেন্ট আর্মি (ডিকেবিএ) কে ওই তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। এর আগে সোমবার বার্মা স্টুডেন্টস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এবিএসডিএএফ), রেস্টোরেশন কাউন্সিল অব শান স্টেট (আরসিএসএস) ও মায়ানমারের সবচেয়ে পুরানো সশস্ত্র সংগঠন কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) কে তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, শান্তি চুক্তি হলেও দেশটির ১৫টি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে সক্রিয় সাতটি গোষ্ঠী এই চুক্তিতে অংশ নেয়নি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চীন সীমান্তে লড়াইরত ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি ( ইউডব্লিউএসএ) ও কোচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স অর্গানাইজেশনও (কেআইও)। এদের মধ্যে কেআইওদেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যের বিরাট এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। মায়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের নিয়মিত সংঘর্ষও হচ্ছে।
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন দাবি করা বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে অনেক দিন ধরেই মিয়ানমার সরকারের দীর্ঘ সশস্ত্র সংঘাত চলছে।