যে শরণার্থীরা পৃথিবী পাল্টে দিয়েছিলেন
নানা কারণে নিজ ঘর, নিজ দেশ ছেড়ে ভিন দেশে আশ্রয় নিতে হয়েছিল তাঁদের। শরণার্থী জীবনের নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তাঁরা ঠিকই বের করে নিয়েছিলেন নিজের সঠিক পথ। আর সে পথে চলে বদলে দিয়েছিলেন গোটা দুনিয়ার গতিপথ। সিএনএনের চোখে পৃথিবী পাল্টে দেওয়া পাঁচ শরণার্থীকে চিনে নিন আপনিও।
আলবার্ট আইনস্টাইন
বিংশ শতকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বিজ্ঞানীর শেষ জীবন কেটেছিল শরণার্থী হিসেবে। হিটলারের রোষে পড়ে আপেক্ষিকতাবাদের জনক আইনস্টাইন ১৯৩৩ সালে জার্মানি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন। ১৯৫৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রেই মারা যান তিনি।
মেডেলিন অলব্রাইট
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেডেলিন অলব্রাইটও ছিলেন একজন শরণার্থী। নাৎসি বাহিনী থেকে বাঁচতে ১৯৩৭ সালে মেডেলিনের পরিবার চেকোস্লোভাকিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেয়। এর পর ১৯৪৮ সালে দেশটি কমিউনিস্টদের শাসনাধীন হলে তাঁদের পরিবারকে আবারো দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। এর পর নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে প্রথম মার্কিন নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি।
সিগমুন্ড ফ্রয়েড
মনোবিজ্ঞান ও মনোবীক্ষণের উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিত সিগমুন্ড ফ্রয়েডও জীবনের শেষ দিনগুলো কাটিয়েছিলেন শরণার্থী হিসেবে। ১৯৩৮ সালে জার্মানি অস্ট্রিয়া আক্রমণ করলে অসুস্থ ফ্রয়েডকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী প্রথমে ভিয়েনা ও পরে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে আসেন। পরের বছর লন্ডনের একটি অ্যাপার্টমেন্টেই আত্মহত্যা করেন ফ্রয়েড।
ভিক্টর হুগো
‘লা মিজারেবলের’ স্রষ্টা ফরাসি সাহিত্যিক ভিক্টর হুগো রাজনীতিতেও বেশ সক্রিয় ছিলেন। উনিশ শতকের মধ্যভাগে ফ্রান্সে তৃতীয় নেপোলিয়নের কর্তৃত্ববাদী শাসনের কঠোর বিরোধীতা করেন। তাঁর সোচ্চার লেখনীর কারণে তিনি নেপোলিয়নের বিরাগভাজন হন। একপর্যায়ে শাসক তাঁকে দেশছাড়া করেন। পরে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেন। সেখানেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন হুগো।
থাবো এমবেকি
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট থাবো এমবেকির বাবা ছিলেন নেলসন মেন্ডেলার সহচর। সত্তরের দশকের পুরোটা জুড়ে যখন এমবেকির বাবা রোবেন দ্বীপে মেন্ডেলার সঙ্গে জেলে আটক ছিলেন, তখন দেশটির সামরিক শাসকরা এমবেকির পরিবারকে দেশত্যাগে বাধ্য করে। অনেক ঘুরে জিম্বাবুয়ে হয়ে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিল তাঁর পরিবার। ১৯৯৯ সালে সেই শরণার্থী যুবকটিই হয়েছিল দেশটির প্রেসিডেন্ট।