মালালার সঙ্গে ছবি তুলে বিপাকে পড়লেন এই শিক্ষামন্ত্রী
শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাইয়ের সঙ্গে ছবি তুলে বিপাকে পড়েছেন কানাডার কুইবেক অঙ্গরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী।
আলোচিত ওই ছবিতে দেখা যায়, কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রী জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জের পাশে দাঁড়িয়ে আছে মাথায় হিজাব পরিহিতা মালালা ইউসুফজাই।
গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মালালার সঙ্গে কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রীর দেখা হয় ফ্রান্সে। সেখানেই ছবিটি তোলা হয়েছিল। আর জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জে জানিয়েছেন, মালালার সঙ্গে ওই সাক্ষাতে শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ে কথা হয়েছে তাঁর।
কিন্তু ছবিটিতে গোল বাঁধল কোথায়? গত মাসে কুইবেকের প্রাদেশিক সরকার পাস করা একটি আইনের কারণেই আসলে ছবিটি নিয়ে কথা উঠেছে। বিতর্কিত ওই আইনে সরকারি কর্মকর্তাদের কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় চিহ্ন বহন করে এমন পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এই আইন অনুযায়ী, গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আছেন এমন কোনো সরকারি কর্মকর্তা ধর্মীয় চিহ্নবাহী কোনো কিছু পরতে পারবেন না। অর্থাৎ ইহুদি ও মুসলিম পুরুষদের জন্য মাথায় টুপি, শিখ বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মাথায় পাগড়ি কিংবা মুসলিম নারীদের হিজাব পরে কর্মক্ষেত্রে আসা নিষিদ্ধ।
এই আইনের আওতায় আছেন বিচারক, পুলিশ কর্মকর্তা, শিক্ষকসহ আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবী ব্যক্তিত্ব।
মালালা ইউসুফজাইকে বিশ্ব চেনে শিক্ষা নিয়ে তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে। কুইবেকের আইন অনুযায়ী সেখানে হিজাব পরে পড়াতে পারবেন না মালালা। অথচ সেই মালালার সঙ্গেই কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রীর হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে ছবি তোলাকে ‘ভণ্ডামি’ বলছেন অনেক নেটিজেনবাসী।
বিতর্কিত আইনটি পাস করার পর থেকেই কুইবেকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও বিতর্ক চলছে।
বিতর্কিত আইনটিতে নির্দিষ্ট করে কোনো ধর্মের কথা উল্লেখ না করা হলেও সমালোচকরা বলছেন, এই আইনের শিকার হবেন রাজ্যের হিজাব ও পর্দাধারী মুসলিম নারীরাই।
এদিকে মালালার সঙ্গে কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রীর ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর টুইটারে সালিম নাদিম নামের এক সাংবাদিক জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জের কাছে জানতে চান—মালালা যদি কুইবেকে পড়াতে চান, তাহলে কী পদক্ষেপ নেবেন তিনি?
উত্তরে জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জ বলেন, ‘আমি অবশ্যই তাঁকে বলব যে, বিষয়টি কুইবেকের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। আমি তাঁকে আরো বলব, কুইবেক ও ফ্রান্সসহ (এখন যেখানে আছি আমি) বিশ্বের অন্যান্য উদারপন্থী ও ধর্মসহিষ্ণু দেশে শিক্ষকরা শিক্ষাদানের সময় ধর্মীয় চিহ্ন পরিধান করতে পারবেন না।’