লাখো অভিবাসীকে বৈধ করার পক্ষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত পাঁচ লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসীকে বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ করে দেওয়ার পক্ষে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে তেমন ইঙ্গিতই মিলেছে বরিস জনসনের কথায়।
অবশ্য যুক্তরাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত অনথিভুক্ত অভিবাসীদের বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়ে করের আওতায় আনার জন্য অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন বরিস জনসন।
এর আগে লন্ডনের মেয়র থাকাকালে বরিস জনসন তৎকালীন সরকারের কাছে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবও উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সে প্রস্তাব বাতিল করে দেন।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র দি ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় সময় গত বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে বক্তব্য দেন বরিস জনসন।
এ সময় তিনি এমপিদের উদ্দেশে বলেন, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ দিলে কী ধরনের ‘অর্থনৈতিক সুবিধা ও অসুবিধা’ হতে পারে, তা ব্রিটেনের খতিয়ে দেখা উচিত।
জনসন দাবি করেন, আইন মেনে চলা কিন্তু প্রয়োজনীয় নথিবিহীন পাঁচ লাখ মানুষকে যুক্তরাজ্য থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইলে তা আইনত অস্বাভাবিক বলেই বিবেচিত হবে।
Prime Minister @BorisJohnson addresses questions from MPs @RupaHuq and @KateGreenSU about pledging an #amnesty for undocumented migrants in the UK, and lifting the ban on asylum seekers working if the State takes more than 6 months to resolve their case. pic.twitter.com/lozxoY3FHx
— Migrant Voice (@MigrantVoiceUK) July 25, 2019
লন্ডনের মেয়র থাকার সময় অনথিভুক্তদের সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনার অঙ্গীকারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে এ বিষয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ‘কথার সঙ্গে কাজের মিল’ রাখবেন কি না, তা জানতে চেয়ে বরিস জনসনকে প্রশ্ন করেন লন্ডনের ইলিং এলাকা থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।
রুপা হকের প্রশ্নের জবাবে জনসন বলেন, ‘আমি মনে করি, দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা এখানে বসবাস করছেন, কাজ করছেন, কিন্তু (বৈধ) কাগজপত্র না থাকায় আমাদের অর্থনীতিতে ঢুকতে (অবদান রাখতে) পারছেন না, (দেশের কাজে) সঠিকভাবে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না কিংবা কর পরিশোধ করতে পারছেন না, তাঁদের জন্য আমরা কী পরিকল্পনা করছি, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’
বরিস জনসন আরো বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আনা উচিত। আর সত্যি বলতে কী, আইন এরই মধ্যে তাঁদের থাকার অনুমতি দিয়েই রেখেছে। এটা অবশ্যই সত্যি যে আমি সরকারে থাকাবস্থায় বিষয়টি কয়েকবার উত্থাপন করেছি। আমাকে বলতেই হচ্ছে, মন্ত্রীসভার এক বৈঠকেও বিষয়টি উত্থাপন করেছিলাম। কিন্তু আমাদের আগের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ওই প্রস্তাবে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।
‘আমি বলবো, সঠিক কাগজ না থাকা পাঁচ লাখ মানুষ যাঁরা কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে না জড়িয়ে বছরের পর বছর এখানে বসবাস করছেন, আমি মনে আইনিভাবে তাঁরা সঠিক অবস্থানেই আছেন। উইন্ডরাশ এর ঘটনায় আমরা দেখেছি এ ধরনের ব্যাপারে অনেক জটিলতা রয়েছে’, যোগ করেন জনসন।
এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের ক্ষেত্রে অভিবাসীর সংখ্যা সীমিত না করে অস্ট্রেলিয়ার মতো পয়েন্ট-ভিত্তিক ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনার কথাও জানান বরিস জনসন।