আফগান তরুণীকে পাথর ছুড়ে হত্যা
প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় আফগানিস্তানে এক তরুণীকে পাথর ছুড়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগ আনা হয়। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় ঘর প্রদেশের তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এই ঘটনার ভিডিও গতকাল সোমবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
৩০ মিনিটের এই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি গর্তে দাঁড় করিয়ে রাখা ওই তরুণীকে লক্ষ্য করে পাগড়ি পরা একদল লোক পাথর ছুড়ে মারছে। পাথরের আঘাতে তিনি চিৎকার করছেন। কিন্তু কেউ তাঁকে বাঁচাতে আসেননি।
বিবিসি খবরে বলা হয়েছে, ওই তরুণীর নাম রুখসানা, বয়স আনুমানিক ১৯ থেকে ২১ বছর। তাঁর প্রেমিককে চাবুক মারা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে এক সপ্তাহ আগে।
রেডিও ফ্রি ইউরোপ জানিয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের মুঠোফোনে পাথর ছুড়ে হত্যা করার এ দৃশ্য ধারণ করে। বিয়ে করার উদ্দেশ্যে রুখসানা তাঁর প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
ঘর প্রদেশের কয়েকজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, তালেবান, স্থানীয় ধর্মীয় নেতা ও সশস্ত্র যুদ্ধবাজদের একটি দল রুখসানাকে পাথর ছুড়ে হত্যা করেছে।
আফগানিস্তানে মাত্র দুজন নারী গভর্নরের একজন হলেন এই প্রদেশের সীমা জয়েন্দা। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘রুখসানার পরিবার তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ের আয়োজন করেছিল। বিয়ের আগে প্রেমিকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তাঁর প্রেমিককে শুধুমাত্র চাবুক মেরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
সীমা আরো বলেন, ‘এই এলাকায় এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম। এটাই শেষ নয়, সারা দেশে নারীরা নানা সমস্যায় ভুগছে। কিন্তু রক্ষণশীলতার সঙ্গে এই প্রদেশের নারীদেরই বেশি লড়াই করতে হয়।’
আফগানিস্তানে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গত মার্চে পবিত্র কোরআন পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগে ফারখুন্দা নামে এক নারীকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করে একদল লোক। এই হত্যাকাণ্ডের পর সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে।