বাজেটে অবকাঠামো খাতে জোর ভারতের
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করতে অবকাঠামো খাতকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ভারতের সরকার। এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেশটির সরকার বাজেট ঘাটতি পূরণে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মেয়াদ পেছাবে।
আজ শনিবার ভারতের সংসদে নরেন্দ্র মোদির সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট (২০১৫-১৬ অর্থবছর) পেশ করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি। আগামী বছরের মধ্যে দেশটির রাস্তা, রেল, বন্দর ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নে ৭০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেট বক্তব্যে অরুন জেটলি বলেন, ‘ভারতের জ্বলে ওঠার সুযোগ এসেছে বলেই মনে করছে বিশ্ব। শিগগিরই দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি সম্ভব।’
এর আগে গত শুক্রবার ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, এপ্রিলে শুরু হতে যাওয়া অর্থবছর থেকে ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হবে। তবে সরকারের ওই তথ্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দেশটির অর্থনীতিবিদদের।
দেশটির বাজেট বক্তব্যে অরুন জেটলি বলেন, অর্থনীতি পুনর্গঠনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। দারিদ্র্য বিমোচনে ভর্তুকিও বাড়বে। প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন আনতে হবে, সে ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে।
ভারতের বাজেট প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বিনিয়োগ টানতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হবে। শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে চার বছরের জন্য কোম্পানির কর ৩০ শতাংশ থেকে নামানো হবে ২৫ শতাংশে। চার হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি অত্যাধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন। পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ ও তামিলনাড়ুতে (সর্বভারতি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান) এইমস চালু। বিহারে এইমসের সমপর্যায়ের একটি হাসপাতাল চালু হবে।
দেশটির ২৮ হাজার গ্রামকে যুক্ত করতে এক লাখ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পরিচ্ছন্ন ভারত প্রস্তুত করতে ৫০ লাখ শৌচাগার তৈরি হয়েছে। আরো ছয় কোটি শৌচাগার নির্মাণ করা হবে। রেল খাতের উন্নয়নে ধরা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। রাস্তা, রেল এবং সেচে বিনিয়োগের জন্য করমুক্ত পরিকাঠামো বন্ড চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।
রুগ্ণ কারখানাগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক মানের আইটি হাব তৈরি করতে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
আর নগদের ব্যবহার কমিয়ে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ডের ব্যবহার বাড়ানোয় জোর দেওয়া হয়েছে।
৪৩টি দেশের মানুষ ভারতবর্ষে নেমে বিমানবন্দরে ভিসা পান। এই সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫০-এ নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
গৃহ নির্মাণ ও শহরের উন্নয়নে মোট বরাদ্দ দেওয়া হবে ২২ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।
৮ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে প্রতিটি পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।