মেয়ের ভর্তিতে জালিয়াতি, হলিউড অভিনেত্রীর কারাদণ্ড
মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদান করে জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর অভিযোগে হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ফেলিসিটি হাফম্যানকে ১৪ দিনের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত। এ ছাড়া তাঁকে জরিমানা হিসেবে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ও ২৫০ দিন সামাজিক সেবামূলক কর্মকাণ্ড পালনের জন্য বলা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একটি পরীক্ষায় মেয়ের উত্তরপত্র সংশোধন করতে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন ‘ডেসপারেট হাউজওয়াইভস’ তারকা হাফম্যান। আর এ বিষয়টি স্বীকারও করেছেন তিনি।
এদিকে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর হাফম্যান বলেন, ‘এমন কাজের বিরুদ্ধে কোনো অজুহাত ও যুক্তি আমার কাছে নেই। আমি আমার কৃতকর্মের জন্য আমার মেয়ে, আমার স্বামী, আমার পরিবারসহ শিক্ষাক্ষেত্রে জড়িত সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’
হাফম্যান আরো বলেন, ‘এবং আমি সেসব শিক্ষার্থীদের কাছেও ক্ষমা চাই, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করে। এ ছাড়া ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছেও ক্ষমা চাই, যারা নিজের সন্তানদের জন্য অনেক কিছু বিসর্জন দেন।’
বিচারক ইন্দিরা তিলওয়ানি জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, হাফম্যান তাঁর অপরাধ স্বীকার করেছেন। বিচারক তিলওয়ানি আরো বলেন, ‘নিজের সন্তানের জন্য এ ধরনের কাজ করে ভালো মা হওয়া কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না, যেটি হাফম্যান করেছেন।’
এদিকে জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি করানোর অভিযোগে হাফম্যান ছাড়াও অন্যান্য অভিভাবক ও অ্যাথলেটিক কোচসহ ৫০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে কারো সন্তানকেই অভিযুক্ত করা হয়নি। অভিযুক্তদের মধ্যে হাফম্যান প্রথম, যাঁকে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
তদন্তে বেরিয়ে আসে, অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষায় ঘুষ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া ক্রীড়া ক্ষেত্রে সন্তানদের ভুয়া কাগজপত্র প্রদর্শন করেন কোনো কোনো অভিভাবক।
কৌঁসুলিরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ইয়েল, জর্জটাউন ও স্ট্যানফোর্ডের মতো জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য প্রতারণামূলক কাজ করেছিলেন এসব অভিভাবক।
বড় মেয়ে সোফিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ‘এসএটি টেস্ট’ (স্যাট)-এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কেলেঙ্কারির মাস্টারমাইন্ড উইলিয়াম সিংগারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন হাফম্যান।
পরে সিংগার সোফিয়ার স্যাট টেস্টের জন্য একটি বিশেষ জায়গার ব্যবস্থা করেন।
এ ব্যাপারটির সঙ্গে সোফিয়া কোনোভাবেই জড়িত ছিল না বলে দাবি করেছেন হাফম্যান।
হাফম্যান আরো বলেন, “আমার মেয়ে সোফিয়া বলেছিল, ‘কেন তুমি আমার ওপর বিশ্বাস রাখলে না, কেন তুমি চিন্তা করোনি যে, এটি আমি নিজেই করতে পারব।’ মেয়ের এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর আমার কাছে ছিল না।”