স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল মিসর, রাস্তায় নেমেছে মানুষ
মিসরের স্বৈরশাসক জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির বিরুদ্ধে সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে এবং তা ক্রমে জোরদার হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে দেশটির বন্দরনগরী সুয়েজে সংঘর্ষ হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে এক প্রতিবেদনে জানায়, সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও তাজা গুলি ব্যবহার করেছে।
তবে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রচণ্ড বাধা উপেক্ষা করে সুয়েজ শহরে শত শত বিক্ষোভকারী জেনারেল সিসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালালে বেশ কয়েকজন আহত হন। সুয়েজ শহরের একজন অধিবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নিরাপত্তা বাহিনী এত বেশি মাত্রায় টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে যে তাতে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তিনি জানান, টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজালো গন্ধে রাতের বেলায় ঘরের ভেতরে থাকাও কষ্টকর হয়ে পড়েছিল।
সুয়েজ শহর ছাড়াও রাজধানী কায়রো, গিজা এবং উত্তরাঞ্চলীয় মাহাল্লা শহরে রাতের বেলায় বিক্ষোভ হয়েছে।
এদিকে, রাজধানী কায়রোর তাহরির চত্বরে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। এই তাহরির চত্বরে থেকেই ২০১১ সালে মিসরের সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের বিরুদ্ধে প্রবল গণআন্দোলন গড়ে তোলা হয়, যার ফল হিসেবে হোসনি মোবারক ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
এদিকে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য মিসরের প্রেসিডেন্ট জেনারেল সিসি নিউইয়র্কের যে ভবনে অবস্থান করছেন, সেখানে বহু মিসরীয় নাগরিক বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভকারীরা জেনারেল সিসির প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান।
মিসরের চলমান বিক্ষোভে অংশ নিতে গিয়ে এরই মধ্যে প্রায় একশর মতো মানুষকে আটক করা হয়েছে। সিসি সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ এনে জনগণ এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। ২০১৩ সালে মিসরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে উৎখাত করে জেনারেল সিসি ক্ষমতা দখল করেন।