আরেক পুরুষ মায়ের গল্প
জন্ম পরিচয়ে সন্তুষ্ট থাকতে না পেরে অস্ত্রোপচার করে নিজের লিঙ্গ পাল্টে ফেলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের ট্রেসি লিউয়ানানি লা গোনডিনো। ২০০২ সালে লিঙ্গ পরিবর্তনের মাধ্যমে নারী থেকে পুরুষ হয়ে যাওয়া ট্রেসির নতুন নাম হয় থমাস ট্রেস বেটি। এরপর সিক্স প্যাক শরীর, শ্মশ্রূমণ্ডিত মুখমণ্ডল– অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সবই সম্ভব করেছিলেন থমাস। সেই থমাস বেটির তিন সন্তান নিয়ে সারা পৃথিবীতে কত তোলপাড় !
থমাস বেটির ঘটনার এক বছর পর আরেক ‘রূপান্তরকামী’কে নিয়ে সারাবিশ্বে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্রের এই রূপান্তরকামীর নাম কেডেন কোলেম্যান। এই কোলেম্যান আবার থমাস বেটির উল্টো ! তিনি ছিলেন পুরুষ।কিন্তু নিজেকে নারী হিসেবে দেখতে চাওয়ার ইচ্ছায় চিকিৎসাশাস্ত্রের সাহায্য নিয়ে নারী হিসেবে গড়ে তুললেন নিজেকে ।
ডেইলি মেইলকে দেওয়া কোলেম্যানের সাক্ষাৎকার থেকে জানা গেছে, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জননাঙ্গে পরিবর্তন এনে ২০১১ সালে তাঁকে ‘পূর্ণাঙ্গ’ নারীতে রূপান্তর করেন চিকিৎসকরা। এরপর ২০১২ থেকে কোলেম্যান ফিলাডেলফিয়ার এলিজা ম্যাশকে বিয়ে করেন। ২০১৩ সালে এসে কোলেম্যান অনুভব করেন, ‘মা’ হতে চলেছেন তিনি।
এরপরের গল্পটা একটু কষ্টের। গর্ভধারণের পর কোলেম্যান আর এলিজাকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও নানা সামাজিক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এ ছাড়া ফিলাডেলফিয়া রাজ্যের আইন কোনো ‘পুরুষ মা’কে স্বীকৃতি না দেওয়ায় কোনো চিকিৎসাসেবা পাননি কোলেম্যান। কিন্তু সব বাধা জয় করে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে এক ফুটফুটে মেয়ের জন্ম দেন তিনি। নাম রাখেন আজাইলিয়া। স্পেনিশ ভাষার এই নামটির অর্থ হলো ‘স্বর্গের ফুল’।
কোলেম্যানের জন্ম দেওয়া সন্তানের এখন বয়স ২২ মাস! পুরুষের শরীরধারী ‘মায়ের’ কোলে একটু একটু করে বেড়ে উঠেছে সে। আর ‘মাতৃস্নেহ’ বলে যেটা আছে তার অভাব একটুও বুঝতে দেননি কোলেম্যান। স্বামী এলিজা ম্যাশ ডেইলি মেইলকে জানান, আজাইলিয়াকে ছেড়ে একটা মুহূর্তও থাকতে পারেন না কোলেম্যান। নিজের ‘নারীত্ব’ আর ‘মাতৃত্বকে’ লালন করে খুব ভালো আছেন তিনি।