নাগাল্যান্ডে পিটুনিতে নিহত সেই যুবক ধর্ষণ করেননি
ভারতের নাগাল্যান্ডে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনিতে নিহত সেই যুবক ধর্ষণ করেননি বলে জানিয়েছে রাজ্যটির সরকার। তাদের ভেতরে ‘সম্মতির ভিত্তিতে যৌনমিলন’ হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার এক বিবৃতির মাধ্যমে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে এ কথা জানিয়েছে নাগাল্যান্ড সরকার। দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
গত ৫ মার্চ প্রায় চার হাজার মানুষ দিমাপুর কারাগারে থাকা যুবক সৈয়দ আরিফ খানকে বের করে এনে পিটিয়ে হত্যা করে। ধর্ষণের একটি মামলায় তিনি কারাগারে ছিলেন।
সৈয়দ আরিফ খানকে করা জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে নাগাল্যান্ড সরকার কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, ‘আরিফ খান ওই নারীকে ধর্ষণ করেননি।’
সরকারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ খান জানান, পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই নারীর সঙ্গে দুবার তার ‘সম্মতির ভিত্তিতে যৌনমিলন’ হয়। এর পর ওই নারী তাঁর কাছে আরো অর্থ দাবি করেন। কিন্তু তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই নারী ধর্ষণের অভিযোগ এনে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন।
এখনো ওই নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করা হচ্ছে এবং পুলিশ ফরেনসিক প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছে।
নাগাল্যান্ড পুলিশের মহাপরিদর্শক ওয়াবাং জামির ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, সরকারের এ প্রতিবেদন সম্পর্কে জানেন না তদন্তকারীরা। তারা অন্যান্য ধর্ষণ মামলা হিসেবেই এ ঘটনার তদন্ত করছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় মোট দুটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এর কোনোটিতেই ধর্ষণের কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে মামলার আলামত পরীক্ষার জন্য গোহাটির কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে বলে রাজ্য সরকার জানিয়েছে। ফরেনসিক প্রতিবেদন হাতে না আসা পর্যন্ত তাঁকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বলা সম্ভব না বলেও কেন্দ্রকে লেখা এক চিঠিতে জানিয়েছিল নাগা সরকার।
এদিকে, আইন অমান্য করে বিচারাধীন আসামিকে হত্যার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিশ।
আরিফ খানকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বর্ণনা করা হলেও কলকাতার বাংলা দৈনিক ‘এই সময়’ জানিয়েছে, তিনি নাগাল্যান্ডেরই এক পরিবারের সদস্য ছিলেন। তাঁর বাবা ভারতের সামরিক বাহিনীর সদস্য ছিলেন।