রাশিয়া ও পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের সুসম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং মার্কিন ব্যবসায়ী। সম্প্রতি রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের বাণিজ্যিক বিভিন্ন সম্পর্কের কথা যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে এসেছে। আর এসব ব্যবসায়িক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের সুসম্পর্কের কথাও প্রকাশ পেয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, মিস ইউনিভার্স রাশিয়া পর্বের আয়োজনে দেশটিতে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই সময় অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে ভ্লাদিমির পুতিনকে আমন্ত্রণ পাঠান। ব্যক্তিগত ওই আমন্ত্রণপত্রে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ এবং এর আগে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা বলা হয়।
রাশিয়ার ধনকুবের আরাস আগালারভ পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যেকার সম্পর্কের সেতু হিসেবে কাজ করেন। তিনি জানান, শেষ মুহূর্তে ভ্লাদিমির পুতিন ট্রাম্পের আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করেন। তবে ট্রাম্পকে বিশেষ উপহার পাঠান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তবে এর পরও সফল ছিল ট্রাম্পের রাশিয়া ভ্রমণ। আরাস আগালারভসহ কয়েকজন রুশ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে এক কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার পান ট্রাম্প।
ট্রাম্পের ওই রাশিয়া সফর ছিল দেশটিতে সুন্দরী প্রতিযোগিতা আয়োজনের পঞ্চম প্রচেষ্টা। এ ছাড়া রাশিয়ায় ট্রাম্প টাওয়ার তৈরি বিষয়ে চুক্তিও করেন ট্রাম্প আগালারভ।
শুধু পুতিনের সঙ্গে সুসম্পর্কই নয়, রাশিয়া নিয়েও ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবশ্য ট্রাম্পের রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়া শুরু হয় গত শতাব্দীর আশির দশকে। তখনো রাশিয়া ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে রাশিয়ায় সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজন করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবশ্য এর আগে থেকে ভ্লাদিমির পুতিন সম্পর্কে মার্কিন রাজনীতিকদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব লক্ষ করা যায়। অনেকেই তাঁকে মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক প্রথা ভঙ্গকারী দাবি করেন। এর আগের মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী মিট রমনি রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনীতির জন্য হুমকির বলে মন্তব্য করেন।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। রাশিয়ায় ব্যবসা বাড়ানোর উদ্দেশে গত শতাব্দীর আশির দশক থেকেই রাশিয়ায় বহুবার ভ্রমণ করেছেন ট্রাম্প পরিবারের সদস্যরা। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর রাশিয়ার ধনকুবেরদের কাছে বিক্রি করেছেন তাঁরা। ২০০৮ সালে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয়ের কথা জানান ট্রাম্প নিজেই। আর সম্প্রতি পুতিনের কঠোর মনোভাবের একরকম প্রশংসা করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প সম্পর্কে নিজের ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছে ভ্লাদিমির পুতিন। সম্প্রতি ট্রাম্পকে বর্ণিল এবং প্রতিভাধর বলে উল্লেখ করেন তিনি। ট্রাম্পের মাধ্যম রুশ-মার্কিন সম্পর্কের কথাও বলেন ট্রাম্প।
বিশ্লেষকদের মতে, মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার প্রস্তাব, মেক্সিকোর নাগরিকদের ধর্ষক বলাসহ বিভিন্ন মন্তব্য করে এরই মধ্যে নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিরোধী রাশিয়া এবং এর বিতর্কিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সুসম্পর্ক কোনোভাবেই ট্রাম্পের ভাবমূর্তির জন্য ইতিবাচক হবে না।