বাংলাদেশকে কিছু সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে হবে : যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীর বিচারের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশকে কিছু সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হবে। ওয়াশিংটনে গতকাল মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র মেরি হার্ফ বলেন, ‘আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানাতে পারি। কিন্তু সেটা থেকে খুব বেশি কোনো বিশ্লেষণ আমি করব না।’
বার্তা সংস্থা ইউএনবি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত রোববার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতি পাওয়ার পরও বাংলাদেশ অগ্রসর হয়েছে এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করেছে, এই প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মেরি হার্ফ। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কীভাবে এই পুরো প্রক্রিয়াটাকে দেখি তা আমরা আগের বিবৃতিতেই বলেছি। এখন ওই বিবৃতির ব্যাপারে আমার বেশি কিছু বলার নেই। যারা ১৯৭১ সালে নৃশংসতা চালিয়েছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করাকে অবশ্যই আমরা সমর্থন করি। আমরা বুঝি যে, বাংলাদেশের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া।’
মেরি হার্ফ বলেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন যে এই বিচার অবশ্যই সুষ্ঠু-স্বচ্ছ এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হতে হবে এবং বাংলাদেশও তাতে সম্মত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই প্রক্রিয়ার মধ্যে অগ্রগতি লক্ষ করেছি, আমি মনে করি, একটা ভালো ব্যাপার হয়েছে।’
মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অগ্রগতি সব ধরনের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পূরণ করবে। হার্ফ যোগ করেন, ‘আর এটাই বাংলাদেশ সম্পর্কে আমরা বলতে পারি, যা হয়েছে সে বিষয়ে এর চেয়ে বেশি বিশ্লেষণ করাটা ঠিক হবে না।’
মৃত্যুদণ্ডের ফলাফল সম্পর্কিত আরেকটি প্রশ্নের জবাবে মেরি হার্ফ বলেন, ‘আমরা মনে করি যে, এটা একটা জটিল বিষয় এবং আমি মনে করি, বাংলাদেশের সঙ্গে এই বিষয়ে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের মতামত পরিষ্কার করেছি। বিভিন্ন দেশ যারা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে তাদের সঙ্গে আমি এবং যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে মার্কিন অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ স্টিফেন জে র্যাপ দুজনেই কথা বলেছি যেন তারা তা বন্ধ করে।’
ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে মেরি হার্ফ বলেন, এ বিষয়ে তিনি তেমন কিছু জানেন না। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, নির্বাচনের এখনো কয়েক (দুই) সপ্তাহ বাকি আছে। তাই আমি খুশি যে, আমার দলকে নিয়ে সেখানে পর্যবেক্ষণ করতে পারব এবং কিছু বিশ্লেষণও করতে পারব।’ বাংলাদেশে কয়েক মাস ধরে চলা অস্থিতিশীল অবস্থা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলেও জানান তিনি। এখন সেখানে নির্বাচন হচ্ছে দেখে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন এবং বলেন, এ বিষয়ে আরো কিছু জানানোর হলে সময়মতো তা জানানো হবে।
একই দিনে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফান ডুজারিক বলেন, ‘নীতিগতভাবে বাংলাদেশের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে মহাসচিব ও জাতিসংঘ অবস্থান নেবে।’