থাইল্যান্ডে মানবপাচারে জড়িত খোদ মেয়র?
মানবপাচার এবং বন্দিশিবিরে অকাতরে মানুষ হত্যার ঘটনায় বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোচিত থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের আলোচিত শংখলা প্রদেশের পেদাং বেসার শহরের মেয়রকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটিতে মানবপাচার প্রতিরোধে গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্স। ব্যাংকক পোস্ট জানিয়েছে, বোনজং পংফন নামের ওই মেয়রকে মানবপাচারকারী দলের প্রধান বলে সন্দেহ করছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। শংখলা প্রদেশের জঙ্গলে পাচার হওয়ার পর অপহৃত অভিবাসীদের বেশ কিছু গণকবরের খোঁজ পাওয়ার পর শুক্রবার তাঁকে আটক করে বিশেষ টাস্কফোর্স।
মেয়র বোনজং পংফন থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে অত্যন্ত জনপ্রিয় বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে ব্যাংকক পোস্ট। কিন্তু মানবপাচার প্রতিরোধে বিশেষ টাস্কফোর্স ও পুলিশ দাবি করেছে, ওই মেয়র বিভিন্ন সময় মানবপাচারকারীদের সহায়তা করেছেন বলে প্রমাণ আছে। এমনকি উদ্ধারকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, পেদাং বেসার এলাকার জঙ্গলের গণকবর থেকে গত সপ্তাহে প্রায় ৩০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ওই এলাকার বন্দিশিবির থেকে আরো কিছু মরদেহ উদ্ধার করে দেশটির পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সব মরদেহ বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা দুর্ভাগা নাগরিকদের। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য পাচার চক্রের পাল্লায় পড়ে এই পরিণতি বরণ করতে হয়েছে তাঁদের।
গত সপ্তাহে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় শংখলার পেদাং বেসার এলাকায় একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। এর আগে এর পাশেই আরেকটি গণকবর পাওয়া যায়, যেখান থেকে অন্তত ১০ বাংলাদেশিসহ ২৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বেশকিছু মানুষ অবৈধ উপায়ে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে সমুদ্রপথে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেয়। প্রথমে পাচারকারীদের সহায়তায় থাইল্যান্ডে পৌঁছায় তারা। এরপর অনেককে সড়কপথে গহিন জঙ্গলের ভেতরে থাকা বন্দিশিবিরে নেওয়া হয়। এই বন্দিশিবিরে জিম্মি রেখে পাচারকারীরা মুক্তিপণ নিয়ে অভিবাসীদের সীমান্তবর্তী মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দেয়।
মুক্তিপণ না পেলে তাদের নির্যাতন করে, এমনকি হত্যা করা হয়।
জাতিসংঘ (ইউএন) শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে নৌকায় করে ২৫ হাজার লোককে পাচার করা হয়েছে।