কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবাহিনীর মহড়া
কৃষ্ণ সাগর হয়ে নিরাপদে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির চুক্তি থেকে সরে এসেছে রাশিয়া। এরপরেই সাগরটি দিয়ে ইউক্রেনের দিকে যাওয়া যে কোনো জাহাজই সামরিক বাহিনীর লক্ষ্যবস্তু হতে পারে বলে ঘোষণা দিয়েছিল ক্রেমলিন। এবার কৃষ্ণ সাগরে মহড়া শুরু করেছে রাশিয়ার নৌবাহিনী। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজ শুক্রবার (২১ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানায়, কৃষ্ণ সাগরের তীরে অবস্থিত ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরের শস্য কেন্দ্রিক অবকাঠামোগুলোতে টানা চারদিনের মতো হামলা চালিয়েছে মস্কো। শস্য চুক্তি থেকে বের হওয়ার পর থেকেই ইউক্রেনের শস্য সরবরাহ ও অতীব জরুরী অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া, যার মধ্যে রয়েছে বন্দর শহর ওডেসা ও মাইকোলাইভ।
ওডেসার আঞ্চলিক গভর্নর ওলেগ কিপার বলেন, ‘কৃষ্ণ সাগর থেকে ক্যালিবার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। মস্কো মূলত, বন্দরের শস্য কেন্দ্রিক অবকাঠামোগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। তাদের হামলায় ১০০ টন মটরশুঁটি ও ২০ টন বার্লি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে দুজন আহতও হয়েছে।’
হামলার প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘এ ধরনের হামলার প্রভাব ইউক্রেনজুড়ে ছড়িয়ে গেছে।’ এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘হামলার জেরে বিশ্বব্যাপী গম ও ভুট্টার দাম বেড়ে গেছে, তা আমরা দেখতে পারছি। এতে দক্ষিণের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দেশগুলোর মানুষ আরও ভোগান্তিতে পড়বে।’
ইউক্রেনের হামলায় ক্রিমিয়ার ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত ও দুজন রুশ নাগরিক মারা যাওয়ার প্রতিশোধ নেওয়ার কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পূর্ব ইউক্রেনের কোস্তিয়ানতিনিভকা শহরে রুশ হামলায় এক দম্পতি নিহত হয়েছেন। দোনেৎস্কের গভর্নর পাভলো কিরিলেঙ্কো এ তথ্য জানিয়েছেন।
কৃষ্ণ সাগরে মহড়ার বিষয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষেপণাস্ত্রবাহী একটি নৌযান সাগরের উত্তর-পশ্চিমাংশে অবস্থান করছে। জাহাজকে লক্ষ্যবস্তুকে করছে ওই নৌযান।’ এক বিবৃতিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘লক্ষ্যবস্তুতে থাকা জাহাজ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়ে গেছে। জাহাজ ও নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষ অস্থায়ীভাবে ওই এলাকাটিকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য কাজ করেছে। জাহাজটিকে আটকে রেখে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে, জাপান সাগরে যৌথভাবে মহড়া চালাচ্ছে চীন ও রাশিয়ার নৌবাহিনী।
গত বুধবার ক্রেমলিন থেকে বলা হয়েছিল, কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনে যাওয়া কার্গো জাহাজও তাদের লক্ষ্যবস্তুতে থাকবে। প্রতিক্রিয়ায় আজ শুক্রবার কিয়েভও হুমকি দিয়েছে। তারা বলছে, রাশিয়ার বন্দরের দিকে যাওয়া নৌযান ঝুঁকিতে থাকবে।
শস্য চুক্তি থেকে রাশিয়ার বের হওয়ার পরই এক বিকল্প রাস্তার কথা জানিয়েছে ইউক্রেন। তারা বলছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে থাকা বন্দর দিয়ে শস্য রপ্তানি করতে প্রস্তুত কিয়েভ। এ নিয়ে জাতিসংঘ ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাহায্যও চায় তারা।