ভিলাভিসেনসিওকে হুমকিদাতা গ্যাং নেতা মাসিয়াস বিশেষ কারাগারে
খুন হওয়ার আগে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিওকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি শক্তিশালী অপরাধচক্রের প্রধানের বিরুদ্ধে। তাকে দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১২ আগস্ট) ভোর থেকে ‘ফিতো’ নামে পরিচিত অ্যাডোলফো মাসিয়াস নামের ওই অপরাধীকে এক জেলখানা থেকে আরেক জেলখানায় স্থানান্তরের কাজে অংশ নেয় প্রায় চার হাজার সৈন্য ও পুলিশ সদস্য। খবর আলজাজিরার।
লস কোনেরস গ্যাংয়ের প্রধান হিসেবে মাসিয়াস মাদক পাচার, সংঘবদ্ধ অপরাধসহ নরহত্যার দায়ে ৩৪ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
মাসিয়াসকে বন্দর নগরী গোয়াকুইলের অপেক্ষাকৃত কম নিরাপত্তার জেলখানা থেকে ১৫০ জনের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন উচ্চ নিরাপত্তার কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
এ প্রসঙ্গে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসো বলেছেন, নাগরিক ও কয়েদিদের নিরাপত্তার স্বার্থেই মাসিয়াসকে সরানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘ইকুয়েডরে শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসবে। যদি সহিংস প্রতিক্রিয়া বাড়ে, তবে আমরা পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাজ করব।’
গত বুধবার (৯ আগস্ট) ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটোতে এক নির্বাচনি প্রচারণায় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিও আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। এরপর দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে।
খুন হওয়ার আগে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের জন্য জনপ্রিয় ৫৯ বছর বয়সী সাবেক সাংবাদিক ভিলাভিসেনসিও অভিযোগ করেছিলেন, মাসিয়াস তাকে ও তার নির্বাচনি দলকে হুমকি দিয়েছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমে ভিলাভিসেনসিও বলেছিলেন, ওই গ্যাং সর্দারের একজন দূত তার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং লস কোনেরসের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যদি নির্বাচনি প্রচারণা চলতে থাকে, তবে তারা আমাকে সরিয়ে ফেলবে’।
সরকারি কর্মকর্তারা ভিলাভিসেনসিওর হত্যাকাণ্ডকে সংঘবদ্ধ অপরাধ হিসেবেই ধরে নিয়েছে।
এদিকে, কারা কর্মকর্তারা জানান, মাসিয়াসকে স্থানান্তরের কাজ শেষ হয়েছে। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীরা বেশকিছু অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে।
ছবিতে দেখা যায়, মাসিয়াস নামে পরিচিত শশ্রুমণ্ডিত ব্যক্তি অন্তর্বাস পরা অবস্থায় হাত মাথার ওপরে তুলে দাঁড়িয়ে আছেন।
এদিকে, ভিলাভিসেনসিওর হত্যাকাণ্ডে বিশ্বজুড়ে নিন্দার বার্তা বইছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে।
ছয়জন সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তারা সবাই কলম্বিয়ার নাগরিক।
ভিলাভিসেনসিওর স্ত্রী ভোরোনিকা সারাউজ শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তার স্বামীর হত্যাকাণ্ডের জন্য রাষ্ট্রকে সরাসরি দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘এতকিছু ঘটনার পর সরকারকে অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।’
অন্যদিকে, আগামী ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ভিলাভিসেনসিওর ডেপুটি ৩৬ বছর বয়সী পরিবেশকর্মী আন্দ্রে গনজালেজ তার স্থলাভিষিক্ত হবেন বলে জানিয়েছে তাদের দল।