জার্মানির নাৎসি যুগের জাতীয় সংগীত গাওয়ায় দর্শকের ‘শাস্তি’
ইউএস ওপেনের ম্যাচ চলার সময় এক দর্শক নাৎসি আমলের জাতীয় সংগীত গাওয়ায় তাকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে৷ জার্মানির টেনিস খেলোয়াড় আলেকসান্ডা স্ভেরেফের অভিযোগের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত মঙ্গলবারের ওই ম্যাচে স্ভেরেফ ইটালির ইয়ানিক সিনার বিরুদ্ধে খেলছিলেন৷ একপর্যায়ে এক দর্শককে ওই সংগীত গাইতে শুনে তিনি ম্যাচ রেফারির কাছে অভিযোগ করেন৷
খেলা শেষে স্ভেরেফ বলেন, ‘তিনি (দর্শক) হিটলারের জাতীয় সংগীত গাওয়া শুরু করেন৷ একজন জার্মান হিসেবে আমি ইতিহাসের ওই সময়টা নিয়ে গর্বিত নই এবং সেজন্য এটা করা ঠিক নয়৷’ তিনি জানান, তিনি (দর্শক) প্রথম সারিতে ছিলেন, ফলে অনেক মানুষ সেটা শুনেছে৷ আমি যদি প্রতিক্রিয়া না দেখাতাম, তাহলে সেটা তার দিক থেকে খারাপ হতো৷
স্ভেরেফ আরও বলেন, ‘তিনি (দর্শক) শুধুমাত্র হিটলারের সবচেয়ে পরিচিত বাক্যটা বলছিলেন৷ এটা গ্রহণযোগ্য নয়, এটা অবিশ্বাস্য৷’
২৬ বছর বয়সি স্ভেরেফের মা-বাবা রাশিয়ার৷ তবে ১৯৯০ সালের দিকে তারা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ত্যাগ করেছিলেন৷
জার্মানির জাতীয় সংগীত নেওয়া হয়েছে ‘জার্মানদের গান’ কবিতা থেকে৷ এই কবিতায় তিনটি চরণ আছে৷ প্রথম চরণের প্রথম লাইনটি এমন ‘জার্মানি, সবার ওপরে, বিশ্বের সবকিছুর ওপরে জার্মানি৷’ একসময় জাতীয় সংগীতে কবিতার এই অংশটি ব্যবহৃত হতো৷ নাৎসি আমলেও সেটি বলবৎ ছিল, কিন্তু অতীতের তুলনায় বেশি আক্ষরিক অর্থে গানের কথাগুলো গ্রহণ করেছিল নাৎসি সরকার৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতীয় সংগীতে ওই কবিতার প্রথম চরণ বাদ দিয়ে শেষ চরণটি নেওয়া হয়৷ সুর একই রাখা হয়৷ শেষ চরণের প্রথম লাইনটি এমন, ‘জার্মান পিতৃভূমির জন্য ঐক্য এবং ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতা!’ বর্তমানে এটিই জাতীয় সংগীত হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে৷
ওই দর্শক রাজনৈতিক কোনো বক্তব্য প্রদর্শন করতে নাৎসি আমলের জাতীয় সংগীত গাইছিলেন কি-না, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি৷ কিংবা ওই জাতীয় সংগীতকে যে অনেক আধুনিক জার্মান নেতিবাচক হিসেবে দেখেন, ওই দর্শক সেটা জানতেন কি-না, তা-ও জানা যায়নি৷ কারণ, জাতীয় সংগীতে যে পরিবর্তন এসেছে সেটি জার্মান ভাষাভাষী দেশগুলোর বাইরের মানুষ যে জানবেনই, বিষয়টা তেমন নয়৷’