লিবিয়ায় বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয় হাজারে পৌঁছেছে
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর ডেরনায় প্রলয়ঙ্কারী বন্যায় মৃতের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজারে পৌঁছেছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। তবে মারাত্মক ঝড় ‘ডানিয়েল’র আঘাতে বিপর্যস্ত উপকূলীয় এই শহরটিতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যায় মৃতের সংখ্যা ছয় হাজারে পৌঁছানোর পাশাপাশি নিখোঁজ রয়েছে আরও কয়েক হাজার মানুষ। কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে শুধু ডেরনা শহরেই পাঁচ হাজার ৩০০ মৃতদেহ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, তবে এই সংখ্যা বাড়ছে এবং তা দ্বিগুণও হয়ে যেতে পারে।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ক্ষমতায় থাকা সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী হিচেম চিকিওয়াত জানান, ডেরনা শহরের কাছে সাগর এলাকায় একের পর এক মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি এ ধরনের বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে লিবিয়ার অনভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে সঙ্কট উত্তরণে আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানান।
এদিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে ডেরনা শহরে কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এক বার্তায় আইওএম জানায়, ঝড়ে বেনগাজী শহরসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ছয় হাজার ৮৫ জন মানুষ বাড়িঘর হারিয়েছেন। এছাড়া কতজন লোক মারা গেছে তা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
প্রলয়ঙ্কারী এই বন্যায় উপকূলীয় শহর ডেরনায় বসবাসরত প্রায় এক লাখ লোকের জীবনে নেমে আসে এক ধ্বংসযজ্ঞ। বন্যায় নদী তীরবর্তী বহুতল ভবনগুলো ভেঙে পড়ে। তাছাড়া বন্যার পানির স্রোতে ভেসে যায় বাড়িঘর ও যানবাহন।
প্রবল ঝড় ডানিয়েলের কারণে অবিরাম বৃষ্টির কারণে সৃষ্টি হওয়া এই বন্যায় এ ধরনের ক্ষয়ক্ষতি নজিরবিহীন। রোববার লিবিয়ায় আঘাত হানার আগে ডানিয়েল গ্রিস, বুলগেরিয়া ও তুরস্কেও আঘাত হানে।
বেনগাজী শহর থেকে ২৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ডেরনা শহরটি পাহাড় ঘেরা এবং গ্রীষ্মকালের এই সময়টিতে সেখানকার আবহাওয়া শুষ্কই থাকে। তবে এবারের বৃষ্টি ও বন্যায় নদীর অববাহিকা কাদাপানিতে ছাপিয়ে যায় আর প্রচণ্ড স্রোতে ভেসে যায় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সেতুও।
এদিকে ঝড় ও বন্যায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর লিবিয়ার প্রধান চারটি তেল বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ব্রেগা, এস সিদরা ও রাস লানুফ বন্দর খুলে দেওয়া হয়। আর আজ বুধবার খুলে দেওয়া হয় জুয়েতিনা বন্দর।