চীনপন্থী মোহামেদ মুইজ্জু মালদ্বীপের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট
নির্বাচনে জয়লাভ করলে দক্ষিণ এশিয়ার বিলাসী পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র মালদ্বীপকে বেইজিংয়ের বলয়ে নিয়ে আসবেন এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর দ্বীপদেশটির নাগরিকেরা চীনা বিনিয়োগে ব্যাকুল একজন প্রার্থীকেই তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন করেছে।
মোহামেদ মুইজ্জু (৪৫) ক্ষমতাসীন নেতা ইবরাহিম মোহামেদ সলিহকে পরাজিত করে আগামী ১৭ নভেম্বর মালদ্বীপের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। খবর এএফপির।
ব্রিটেন থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী মুইজ্জুর প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ারই কোনো কথা ছিল না। আবদুল্লাহ ইয়ামিন সরকারের নির্মাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। তবে দুর্নীতির দায়ে ইয়ামিন জেলে যাওয়ার কারণে তার ওপর দলকে নেতৃত্ব দিতে আর ভারত না চীন কার প্রতি ঝুঁকবে দেশ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নির্বাচনের মাঠে নামতে হয়।
বর্তমানে মালদ্বীপের রাজধানী মালের মেয়রের দায়িত্বে থাকা মোহামেদ মুইজ্জু চীনা অর্থায়নে অবকাঠামো নির্মাণের অংশ হিসেবে ২০০ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্পেরও তত্ত্ববধানে রয়েছেন। এই প্রকল্পের আওতায় সেতু নির্মাণের মাধ্যমে দ্বীপমালার এয়ারপোর্টের সঙ্গে রাজধানী মালেকে সংযুক্ত করা হবে।
গত বছর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক অনলাইন বৈঠকে মুইজ্জু বলেছিলেন যে তার দল যদি ক্ষমতায় আসে তবে দুই দেশের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরও দৃঢ় হবে।
মুইজ্জুর নির্বাচনী সাফল্য ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে নতুন মোড় দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই দ্বীপদেশটিতে ১৯৮৮ সালে অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে সৈন্য মোতায়েনসহ বিভিন্ন ঘটনায় ভারতের সরাসরি জড়িয়ে পড়ার ইতিহাস রয়েছে। তবে মুসলিম অধ্যুষিত দেশটিতে বিভিন্ন সময়ে ভারতের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষে অসন্তোষও দেখা দিয়েছে। গত বছর মালের একটি ফুটবল স্টেডিয়ামে ইয়োগা সেশন বন্ধ করতে হামলা চালায় ইসলামপন্থী একটি গ্রুপ। পরে পুলিশ ওই হামলাকারীদের কাঁদানো গ্যাস ছুঁড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এই নির্বাচনে মুইজ্জুর প্রগ্রেসিভ পার্টি অব মালদ্বীপ (পিপিএম) জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় উত্তরের প্রতিবেশির হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত হতে অনেকটা অভিভাবকের ভূমিকা নেয়।