শ্রীলঙ্কায় ইস্টার হামলার শিকারদের ন্যায়বিচারে জাতিসংঘের আহ্বান

বাসসে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া ছবি

শ্রীলংকায় পাঁচ বছর আগে বেসামরিক লোকদের ওপর ভয়াবহ হামলায় ২৭৯ জন প্রাণ হারিয়েছিল। আজ রোববার (২১ এপ্রিল) জাতিসংঘ ওই হামলার শিকারদের কথা স্মরণ করে, এই ঘটনায় ‘জবাবদিহিতার ঘাটতি’ পূরণ ও ‘ন্যায়বিচার’ নিশ্চিত করার জন্য শ্রীলঙ্কার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। 

জাতিসংঘের শীর্ষ দূত মার্ক-আন্দ্রে ফ্রাঞ্চ কলম্বোতে একটি স্মরণ সেবা প্রতিষ্ঠানকে বলেন, ২০১৯ সালে ইস্টার হত্যাকা-ের পিছনে যারা রয়েছে, তাদের তথ্য উদঘাটনের জন্য একটি ‘পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্ত’ হওয়া উচিত। খবর এএফপির।

বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে দ্বীপের সবচেয়ে মারাত্মক আত্মঘাতী  ওই হামলায় ইসলামপন্থীরা তিনটি গির্জা ও তিনটি হোটেলে আঘাত হানে। শোকাহত পরিবারগুলো বলছে, তারা এখনও বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪৫ জন বিদেশি ছিল, যাদের মধ্যে ১৯৭২ সাল থেকে লক্ষাধিক লোকের প্রাণঘাতি এক নৃশংস জাতিগত সংঘাত অবসানের এক দশক পরে দ্বীপে আসা পর্যটকরাও  ছিল।

ফ্রাঞ্চ বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা ক্রমাগত জবাবদিহিতার ঘাটতিতে ভুগছে। যার মধ্যে রয়েছে—যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি বা ক্ষমতার অপব্যবহার। জবাবদিহিতার ঘাটতি যা-ই হোক না কেন, দেশটিকে এগিয়ে যেতে হলে, অবশ্যই এসবের সমাধান করতে হবে।’ 

ফ্রাঞ্চ উল্লেখ করেন, দেশটির সুপ্রিম কোর্ট হামলা প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ও তার শীর্ষ কর্মকর্তাদের দায়ী করা সত্ত্বেও ভুক্তভোগীরা এখনও ন্যায়বিচার চাইছেন। 

ওই হামলার শিকারদের জন্য ন্যায়বিচার প্রদান করাই চলতে থাকা এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার অংশ হওয়া উচিত বলে উল্লেখ করে ফ্রাঞ্চ বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস কলম্বোকে ইস্টার সানডে বোমা হামলার পূর্ববর্তী অনুসন্ধানের সম্পূর্ণ ফলাফল প্রকাশ করার জন্য একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

দ্রুত তদন্তের দাবিতে  শ্রীলঙ্কার ক্যাথলিকরা রোববার হামলার নীরব প্রতিবাদ জানায়।

হামলার এক দেওয়ানি মামলা চলাকালীন কিছু প্রমাণে দেখানো হয়েছে, ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা প্রায় ১৭ দিন আগে কলম্বোকে বোমা হামলার বিষয়ে সতর্ক করা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ হামলা অকার্যকর করতে ব্যর্থ হয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা ও তার কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩১০ মিলিয়ন রুপি (এক মিলিয়ন ডলার) দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, সিরিসেনা আপিল করায় ও জুলাইয়ে নতুন করে শুনানি হওয়ার কথা থাকায় এই রায় এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।