পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখতে অর্থ দিতে বলেন ট্রাম্প : আদালতে কোহেন
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ বন্ধ রাখতে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় অন্যতম প্রধান সাক্ষী মাইকেল কোহেন। সোমবার (১৩ মে) নিউইয়র্কের আদালতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি।
এদিন কোহেন বিচারকদের বলেন, ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে পর্ন তারকাকে অর্থ দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করেছিলেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনি প্রচারে এই যৌন কেলেঙ্কারির প্রভাব যাতে না পড়ে, তাই ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে কোহেন জানিয়েছেন।
ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী কোহেন বলেন, “স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে এক লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার বিষয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘জাস্ট ডু ইট’।” ট্রাম্প অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কোহেন ২০১৭ পর্যন্ত ট্রাম্পের একটি কোম্পানির কর্মী ও আইনজীবী ছিলেন। সোমবার সাক্ষ্য দেওয়ার সময় কোহেন বলেন, ট্রাম্পের সংস্থায় কাজ করার সময় তিনি ‘ফিক্সার’ হিসেবেই কাজ করেছেন।
মাইকেল কোহেন বলেন, ‘স্টর্মি ড্যানিয়েলস ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আনার পরিকল্পনা করছেন শুনেই ট্রাম্প ভয়ঙ্কর রেগে যান। তিনি আমাকে বলেন, এটা বিপর্যয়কর ঘটনা হবে। মেয়েরা আমাকে ঘৃণা করবে। প্রচারে তার প্রভাব পড়বে।’
কোহেন বলেছেন, তিনি শুনেছিলেন, একটা অডিও রেকর্ডিং সামনে আসার পরই ড্যানিয়েলস ওই ঘটনাটা সামনে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। ট্রাম্প তখন তাকে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার পর প্রচুর নারী তার কাছে আসছেন।
আদালতে কোহেনকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি ট্রাম্পের হয়ে আগে মিথ্যা বলেছিলেন? এ প্রশ্নের জবাবে কোহেন বলেন, ‘আমি কাজটা করার জন্য মিথ্যা বলেছি। আমার কাজ ছিল, ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে বিল নিয়ে আলোচনা করা, মানুষকে মামলা করার হুমকি দেওয়া এবং ট্রাম্পের নামে যাতে ইতিবাচক খবর আসে তা নিশ্চিত করা।’
কোহেনের দাবি, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিজস্ব কোনো ই-মেইল আইডি ছিল না। তিনি মনে করতেন, ই-মেইলে কী লেখা হলো, তার ভিত্তিতে মামলা হতে পারে। ট্রাম্প বলেছিলেন, পত্রিকায় স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে নিয়ে খবর প্রকাশিত হলে তার (কোহেন) বিচার হতে পারে।
কোহেন বলেন, ‘ড্যানিয়েলসকে অর্থ দিয়ে তার মুখ বন্ধ রাখার বিষয়টি ট্রাম্প অনুমোদন করেন। খবরের কাগজেও যাতে ড্যানিয়েলস ও অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে খবর প্রকাশ ঠেকানো যায়, সেজন্য সচেষ্ট হন।’
ইতোমধ্যে কোহেনকে মার্কিন কংগ্রেসের সামনে মিথ্যা বলার জন্য এবং অর্থনৈতিক অপরাধ করার দায়ে ১৩ মাস জেল খাটতে হয়েছে।
এদিকে, নিউইয়র্কে ফৌজদারি মামলা ছাড়াও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা চলছে। এর ফলে বাইডেনের বিরুদ্ধে তার প্রার্থী হওয়া নিয়েও জটিলতা দেখা দিতে পারে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তিনি বেআইনিভাবে গোপনীয় নথিপত্র নিজের কাছে রেখেছিলেন। ট্রাম্প যাতে প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন, সেজন্য জালিয়াতি করার অভিযোগে তার ১৮ জন সহযোগী অ্যারিজোনায় অভিযুক্ত হয়েছেন।