যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও লেবাননে পূর্ণমাত্রায় ইসরায়েলের হামলা
যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্র দেশের যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার দেশের সামরিক বাহিনীকে ‘পূর্ণ শক্তি’ নিয়ে লেবাননে সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। খবর বিবিসির।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৯২ জন নিহত হয়েছে। লেবাননে গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলায় ইতোমধ্যে কয়েকশ’ লোক মারা গেছে। এছাড়া রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণে একটি এপার্টমেন্ট ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় মোহাম্মদ শূরুর নামে হিজবুল্লাহর ড্রোন ইউনিটের প্রধান নিহত হয়েছেন।
এদিকে গত সোমবার থেকে লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলার মাধ্যমে নাটকীয় মোড় নেয় মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি। এর ফলে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। যুদ্ধের রেশ বাড়তে থাকায় গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইরোপীয় ইউনিয়নসহ ১২টি ব্লক তিন সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুলে ধরে।
এই প্রস্তাব তুলে ধরার পর জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতে ড্যানি ড্যানন বলেছিলেন, তার দেশ ধারণা গ্রহণের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। এতে সবার মাঝে বেশ আশার সঞ্চার হলেও বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের রাজনীতিবিদরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের যোগ দিতে এসেই এক প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, লেবাননে তার দেশের লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত হামলা থামবে না।
নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যের পর হোয়াইট হাউস জানায় যে, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনা ইসরায়েলের সঙ্গে ‘সমন্বয়’ করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেন, কূটনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, এই যুদ্ধ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়লে তা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না।
গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে তাতে ৭০ হাজারেরও বেশি ইসরায়েলি তাদের দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।
অন্যদিকে, জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে লেবাননে সংঘাত শুরুর পর গত সোমবারই ৯০ হাজার লেবানন অধিবাসী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আগে থেকেই সংঘাতপূর্ণ অবস্থার কারণে দেশটির ১ লাখ ৯০ হাজার নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছিল সেখানে।