যেভাবে হত্যা করা হয় হামাস নেতা সিনওয়ারকে
গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের শীর্ষনেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়। ইসরায়েলে সম্পন্ন করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে সিনওয়ারকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। খবর এএফপির।
ময়নাতদন্ত তত্ত্বাবধানকারী চিকিৎসক চেন কুগেল নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, সিনওয়ার প্রথমে আঘাত পান তার বাহুতে। কোনো ক্ষেপণাস্ত্র বা ট্যাঙ্কের গোলার আঘাতে আহত হন তিনি।
আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে হামাস নেতা একটি বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে সেটিকে তার বাহুতে টর্নিকুয়েট হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা চালান। কিন্ত এতেও তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি এবং তার বাহু প্রায় অকেজো হয়ে যায়।
ইসরায়েলের ন্যাশনাল ফরেনসিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. কুগেল জানান, ইয়াহিয়া সিনওয়ার মারা যান গুলির আঘাতে। তবে কে গুলিটি করেছিল, কখন করেছিল এবং কোন ধরনের অস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছিল সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিতে পারেনি মার্কিন গণমাধ্যমটি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুসারে গত বুধবার তাদের রুটিন টহলের সময় হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুন : হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
সেনাবাহিনীর ৮২৮ ব্রিগেডের (বিসলাচ) একদল সৈন্য রাফাহ শহরের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় তিনজন ফিলিস্তিনি মিলিশিয়ার মুখোমুখি হয়। এ সময় সৈন্যরা তাদের ধাওয়া করলে ইয়াহিয়া সিনওয়ার বাকী দুজনের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যান।
এরপর ওই দুই মিলিশিয়া যে বাড়িটিতে আশ্রয় নেয় সেটি লক্ষ্য করে ট্যাঙ্কের গোলা ছোড়া হয়। এছাড়া ইয়াহিয়া সিনওয়ার যেখানে লুকিয়ে পড়েন সেখানেও গোলাবর্ষণ করা হয়।
এরপর গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়িতে ড্রোন প্রবেশ করিয়ে সেটির ফুটেজে দেখা যায় একটি আর্মচেয়ারে ধুরোবালির আবরণে পড়ে রয়েছেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। এসময় মাথায় ঐতিহ্যবাহী স্কার্ফ পরা সিনওয়ার তার অক্ষত হাতটি দিয়ে ড্রোনটি লক্ষ্য করে একটি লাঠি ছুড়ে মারেন।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম এবং সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই এলাকায় হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের অবস্থানের বিষয়ে আগে থেকে তাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না।
পরে ডিএনএ পরীক্ষা করে হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যু নিশ্চিত করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলে গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস যে হামলা চালায় তার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে দায়ী করে আসছিল ইহুদি রাষ্ট্রটি। তবে হামাসের জন্য এই নেতার মৃত্যুকে একটি বেশ বড় আঘাত হিসেবেই দেখা হচ্ছে।