অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে বড় ধস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে উদ্বেগের কারণে বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে বড় ধস নেমেছে। বিশেষ করে এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোতে বড় ধরনের বিক্রির চাপ তৈরি হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের পতনের ধারাবাহিকতারই অংশ। খবর বিবিসির।
নিউইয়র্কের শেয়ারবাজারে প্রযুক্তি খাতের শেয়ারের ওপর বড় ধাক্কা আসে, যার ফলে নাসডাক সূচক ২০২২ সালের পর সবচেয়ে খারাপ দিন পার করেছে।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এই ধরনের পূর্বাভাস দিতে চাই না। তবে এটা বলা যায়, আমরা একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, কারণ আমরা আমেরিকায় সম্পদ ফিরিয়ে আনছি, যা একটি বড় বিষয়।’
আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিনের শুরুতেই জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ২ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পায়, দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমে যায় এবং অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে যায়।
গতকাল সোমবার (১০ মার্চ) নিউইয়র্ক শেয়ারবাজারে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ২ দশমিক ৭ শতাংশ হ্রাস পায়, ডাও জোন্স ২ শতাংশ কমে যায় এবং নাসডাক ৪ শতাংশ পতন ঘটে।
বিশেষ করে টেসলার শেয়ারের দাম ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পায়, এনভিডিয়া ৫ শতাংশ কমে এবং মেটা, অ্যামাজন ও অ্যালফাবেটের শেয়ারের মূল্যও ব্যাপকভাবে কমেছে।
বৈশ্বিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন ট্রাম্পের শুল্ক নীতি মুদ্রাস্ফীতির কারণ হতে পারে এবং এতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। বিনিয়োগ ব্যবস্থাপক র্যাচেল উইন্টার বলেন, ‘ট্রাম্প যে হারে শুল্ক আরোপ করছেন, তাতে ভবিষ্যতে মুদ্রাস্ফীতি হওয়া নিশ্চিত।’

অন্যদিকে, হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টারা আশ্বস্ত করেন, এসব নীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বাড়ছে এবং উৎপাদন পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ এল-এরিয়ান বলেন, ‘প্রথম দিকে বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্পের কর ছাড় ও নিয়ন্ত্রণ শিথিলের পরিকল্পনা নিয়ে আশাবাদী ছিলেন। তবে এখন তারা বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি উপলব্ধি করতে শুরু করেছেন।’
তবে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হাসেট জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে এবং ট্রাম্পের শুল্ক নীতি ইতোমধ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বাজারে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা ব্যবসা ও ভোক্তাদের ব্যয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করতে পারে।