জাতীয় নাট্যশালায় আগামীকাল শেক্সপিয়রের ‘হ্যামলেট’

Looks like you've blocked notifications!

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সৈয়দ শামসুল হক রূপান্তরিত এবং আতাউর রহমান নির্দেশিত হ্যামলেট নাটকের মঞ্চায়ন আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত উইলিয়াম শেক্সপিয়রের হ্যামলেট নাটকটি অনুবাদ করেছন সৈয়দ শামসুল হক। নির্দেশনা দিয়েছেন মঞ্চসারথী আতাউর রহমান এবং প্রযোজনা উপদেষ্টা শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

উইলিয়াম শেক্সপিয়রের বিয়োগান্তক নাটক ‘হ্যামলেট’ রচিত হয় ১৫৯৯ ও ১৬০২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যকালীন। এই নাটকটি শেক্সপিয়রের সবচেয়ে শক্তিশালী ও জনপ্রিয় নাটক হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত।

নাট্যকাহিনীর সূচনা হয় ডেকমার্কের রাজা হ্যামলেটের মৃত্যু ঘটনাকে কেন্দ্র করে; যিনি ছিলেন তরুণ যুবরাজ হ্যামলেটের বাবা। রাজার মৃত্যুর পর তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ক্লডিয়াস (যুবরাজ হ্যামলেটের পিতৃব্য) সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং প্রয়াত অগ্রজের স্ত্রী (যুবরাজ হ্যামলেটের জননী) গারট্রুডের সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। জনককে হারানোর ব্যথা, জননীর সঙ্গে পিতৃব্যের পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হওয়া এবং সর্বোপরি পিতৃব্যের সিংহাসনে আসীন হওয়া ইত্যাদি যুবরাজ হ্যামলেটের জীবনের মর্মমূলে নাড়া দেয়। যুবরাজ শোকে-দুঃখে পাগলপ্রায় হয়ে পড়েন। তিনি কিছুতেই এই দুর্বিষহ অন্যায় ঘটনাপ্রবাহ মেনে নিতে পারেন না। পিতার প্রেতাত্মা জীবনের এই দুঃসহ লগ্নে তার সামনে আবির্ভূত হয়ে তাকে জানিয়ে দেয় যে, যদিও প্রচারিত হয়েছে তিনি সর্পদংশনে নিহত হয়েছেন; আসল সত্য হল, তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ক্লডিয়াস কানে বিষ ঢেলে তাকে হত্যা করেছে।

অপরদিকে মন্ত্রী পলোনিয়াস হ্যামলেটের জননী রানি গারট্রুডের ঘরে মা-ছেলের কথোপকথন শোনার জন্যে আড়ি পাততে গিয়ে যুবরাজ হ্যামলেটের তরবারির আঘাতে নিহত হয়। হ্যামলেট তাকে রাজা ক্লডিয়াস ভেবে ভ্রমবশত হত্যা করে। পলোনিয়াসের মেয়ে ও যুবরাজ হ্যামলেটের প্রেমিকা ওফেলিয়া বাবার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মনোবেদনায় ভেঙে পড়ে এবং জলে ডুবে আত্মহত্যা করে জীবনের যন্ত্রণা মেটায়। পিতা ও ভগ্নির মৃত্যুতে মন্ত্রীপুত্র লেয়ার্তেস প্রায় পাগল হয়ে পড়ে। রাজা ক্লডিয়াস ষড়যন্ত্র করে হ্যামলেট ও লেয়ার্তেসের মধ্যে তরবারির দ্বৈতক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। লেয়ার্তেসের তরবারির মাথায় বিষ মাখানো ছিল। সে বিষাক্ত তরবারির আঘাতে লেয়ার্তেস হ্যামলেটের ঊর্ধ্ববাহু রক্তাক্ত করে। হ্যামলেট লেয়ার্তেসেরই বিষাক্ত তরবারি দিয়ে তাকে প্রত্যাঘাত করে। রানি গারট্রুড তৃষ্ণার্ত হয়ে বিষাক্ত পানীয় পান করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন, যা হ্যামলেটের পান করার কথা ছিল। পাত্রে বিষ মেশানোটাও ছিল রাজা ক্লডিয়াসের ষড়যন্ত্র। রাজার সব ষড়যন্ত্র যখন প্রকাশ হয়ে পড়ে, বিশেষ করে মৃত্যু পথযাত্রী লেয়ার্তেসের স্বীকারোক্তির মাধ্যমে, তখন যুবরাজ হ্যামলেট রাজা ক্লডিয়াসকে তরবারি দিয়ে আঘাত করে এবং বিষ মেশানো পানীয় পান করতে বাধ্য করে এবং সে নিজেও প্রাণত্যাগ করে। এভাবে চার চারটি জীবনের অবসান ঘটে তরবারি-ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে। হ্যামলেটের সার্বক্ষণিক অনুগামী প্রিয় বন্ধু হোরেশিও থেকে যায় পরবর্তী প্রজন্মকে এই বেদনা বিধুর কাহিনী শোনাবার জন্যে।

নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করবেন আমিনুর রহমান মুকুল, মাস্উদ সুমন, শামীম সাগর, সংগীতা চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম শফিক, মো. সোহেল রানা, মেহেজাবীন মুমু, শরীফ সিরাজ, বাপ্পি আমীন, তৃপ্তি রাণী মণ্ডল, ফখরুজ্জামান চৌধুরী, সাঈদ রহমান, শরীফ সিরাজ, মেরিনা মিতু, শেখ তানভীর আহমেদ, মো. সাইফুল ইসলাম মন্ডল, মেরিনা মিতু, কুমার প্রাঙ্গণ, তপন কুমার, আল-আমীন সোহাগ, সাইফুল ইসলাম, আহসান হবীব বিপু, আতাউর রহমান, ফারজানা কামাল মিম, স্বর্ণালী রায় পুতুল প্রমুখ।