‘শামসুর রাহমান ছিলেন বর্ণাঢ্য কবিজীবনের অধিকারী’

Looks like you've blocked notifications!
বক্তব্য দিচ্ছেন বিশিষ্ট গবেষক ও কবি অধ্যাপক খালেদ হোসাইন। ছবি : বাংলা একাডেমি

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রহমানের ৯৩তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আজ রোববার সকাল ১১টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান। বক্তৃতা প্রদান করেন বিশিষ্ট গবেষক ও কবি অধ্যাপক খালেদ হোসাইন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। শামসুর রাহমানের কবিতা থেকে পাঠ করেন বাচিকশিল্পী ডালিয়া আহমেদ।

স্বাগত বক্তব্যে এ. এইচ. এম. লোকমান বলেন, শামসুর রাহমান ছিলেন বর্ণাঢ্য কবিজীবনের অধিকারী। তিনি এবং তাঁর প্রজন্ম আমাদের কবিতাকে আধুনিকতার গভীর ধারার সঙ্গে যুক্ত করেন।

অধ্যাপক খালেদ হোসাইন বলেন, শামসুর রাহমান তাঁর কাব্যিক ঊন্মেষলগ্ন থেকেই সমসাময়িকদের মধ্যে ছিলেন স্বতন্ত্র। হৃদয়ের আকুতির সঙ্গে পরিপার্শ্বের কোলাহল তাঁর কবিতায় অপরূপ ব্যাঞ্জনা লাভ করেছে। একান্ত পাঠ-উপযোগিতার পাশাপাশি তাঁর কবিতা হয়ে উঠেছে সর্বত্রগামী।

অধ্যাপক খালেদ হোসাইন আরও বলেন, জীবন ও জনতা শামসুর রাহমানের কবিতায় নমিত এবং সোচ্চার ভাষাবিন্যাসে ভাস্বর হয়েছে। দেশীয় এবং পাশ্চাত্য পুরাণের অনন্য ব্যবহারে কবিতাকে তিনি বৈচিত্রপূর্ণ করে তুলেছেন। একই সঙ্গে অসমসাহসে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং শোষণমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দশকের পর দশক তিনি কাব্যিক লড়াই চালিয়ে গেছেন। কবিতাকে তিনি জনমানুষের হৃদয়ের প্রিয় বিষয়ে পরিণত করেছেন এবং প্রতিরোধের নন্দনকলায় সকল অসুন্দরের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা দিয়ে চলেছেন।

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, শামসুর রাহমান আমৃত্যু পঙ্কে পদ্ম ফোটানোর সাধনা করেছেন। তাঁর কবিতা বাঙালি জাতিসত্তার কাব্যিক ভাষ্য নির্মাণে ভূমিকা রেখেছে। পাকিস্তান আমল থেকে বাংলা ভাষা, বাঙালি জাতিসত্তা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রকে তিনি তাঁর কাব্যিক হাতিয়ার দিয়ে মোকাবিলা করেছেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং এর পর এ দেশের সকল গণতান্ত্রিক সংগ্রামে তাঁর কবিতা আমাদের মাঝে উজ্জীবক-অস্ত্র হিসেবে কাজ করেছে।

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা আরও বলেন, কবি শামসুর রাহমান গেরিলা পদ্ধতিতে আজীবন বাংলা, বাঙালিত্ব এবং মানবতার সংগ্রামে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন এবং ক্রমশ হয়ে উঠেছেন চিরজীবিত স্বাধীনতার কবি।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহপরিচালক কাজী রোমানা আহমেদ সোমা।