সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘আজ ও আগামীকাল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

লেখক, গবেষক, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৮৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একক আত্মজৈবনিক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিভিন্ন সংগঠন তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন।
স্মৃতি বক্তৃতায় সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমার বাবা ছিলেন আমলাতান্ত্রিক, মা ছিলেন গণতান্ত্রিক। বাবা ছিলেন আশাবাদী, মা তার বিপরীত। অর্থাৎ জীবনের সব ক্ষেত্রে খুব বাস্তববাদী। ফলে আমি যতটা না বাবার সন্তান তারচেয়ে অধিক মায়ের সন্তান আমি। মায়ের অনেক গুণ পেয়েছি, আর তা বুঝলাম ধীরে ধীরে চলতে চলতে।’
এভাবে শৈশব, কিশোরের নানান গল্প। শিক্ষা জীবনে মা বাবার ভূমিকা, দেশ-বিদেশে উচ্চশিক্ষার অভিজ্ঞতা বয়ান। শিক্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভয়াবহ সময় মোকাবিলা। একাত্তরে তিনি মারা গেছেন এমন সংবাদ ছাপা হয়েছে বিদেশে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউজ লেটারে—এমন অসামান্য কিছু স্মৃতি উপস্থিত অগণিত দর্শকের মধ্যে সাবলীলভাবে বলে যান প্রায় দেড় ঘণ্টায়।
ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ড. আনু মুহাম্মদ, কবি মোহাম্মদ সাদেক, আন্দালীব রাশদী, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, মাজহারুল ইসলাম বাবলাসহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী নির্বাচিত সাক্ষাৎকার ‘আজ ও আগামীকাল’ বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করা হয়েছে। মোড়ক উন্মোচন করেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আজফার হোসেন এবং বইটির সম্পাদক ইমরান মাহফুজ।
বইটি প্রকাশ করেছে ডেইলি স্টার বুকস, সম্পাদনা করেছেন ইমরান মাহফুজ। ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে বিভিন্ন পত্রিকা ও সাময়িকীতে প্রকাশিত ২১টি সাক্ষাৎকার। প্রচ্ছদ করেছেন মনন মোরশেদ। দাম ৪০০ টাকা।
বইতে উঠে এসেছে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সাম্যবাদী রাজনৈতিক দর্শনে অবিচল চিন্তা, সমাজ বিপ্লবে তরুণদের ভূমিকা। একই সঙ্গে বিভিন্ন সময়ের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে গভীর দার্শনিকতা ও ইতিহাস চেতনা। সামাজিক সংকট ও সামাজিক মুক্তিতে সংস্কৃতি চর্চার প্রয়োজনীয়তা।
উল্লেখ্য, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন বিক্রমপুরের বাড়ৈখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার কর্মসূত্রে তার শিক্ষাজীবনের প্রথম ভাগ কেটেছে রাজশাহীতে। পরে ঢাকা, কলকাতা ও যুক্তরাজ্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন তিনি।