জোবায়ের মিলনের তিন কবিতা

Looks like you've blocked notifications!

আলো কোথায়... কোথায় আলো

অজস্র অন্ধকার বুকে পুঞ্জীভূত করে
এক বিন্দু আলোর প্রত্যাশায় দৌড়ে চলেছি
আলো কোথায়... কোথায় আলো... আলো কোথায়?

পেছন থেকে ছুরি বসায় ঘাতকের হাত
চাপাতির ধারালো মুখ শুষে নেয় সমস্ত রক্ত
তাক করা নল উড়িয়ে দেয় মুক্ত খুলি
উবু হয়ে পড়ে থাকে সত্য সৈনিক- পথের ধুলায়. . .

ভয়ংকর সুন্দর সকাল ওই তো হারিয়ে যাচ্ছে
কাকের মিছিলে
রোদেলা দুপুর ওই তো ম্রিয়মাণ হয়ে যাচ্ছে
জোনাক পোকার ভিড়ে
সন্ধ্যার প্রদীপ ওই তো নিভে যাচ্ছে
মেঘলা আকাশে
কে তাকে ফেরাবে... ফেরাবে কে... কে ফেরাবে তাকে?

একজন বাপি লিখে সাদা সাদা বকের গান,
বাপির পিঠে বসে ছোরার তীক্ষ্ণ ডগা!
চোখের জলে ভেসে যায় শুদ্ধ বিবেক
পতাকাটা মৌন হাঁটে এদ্বার ওদ্বার
রক্ষীরা দেখো শোনায়- আজগুবি বয়ান!

চাপাতিওয়ালারা ওই দেখো চা খায়
মোড়ের দোকানে
এ মাটি ফাঁক খোঁজে লজ্জা ঢাকার...
আর আমার স্বরে বিউগল বেজেই যায় বেজেই যায়-
আলো কোথায়... কোথায় আলো... আলো কোথায়

 

মাতৃভূমির জন্য রক্তক্ষরণ

নীরবতা দুই কারণে হয়
প্রচণ্ড ভয়ে, অফুরান সুখে
আমাদের নীরবতা আজ কোন কারণে
তার জন্য একজন গবেষক প্রয়োজন।

সাপ দেখলে জোরে চিৎকার করি না
হয়তো ছোবলের ভয় উবে গেছে
না হয় সহ্য হয়ে গেছ; কিছু একটা হবে

আঘাত পেলে আমরা মাগো মাগো করতাম
এখন এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেই নিজের ক্ষতে
হাত বুলিয়ে নিজেকে সান্ত্বনা দিই!
সুখের সংবাদে কতই না আয়োজন হতো
ঢাক ঢোল, মিষ্টি মালাই, নাচ গান কত উল্লাস
এখন নিজেই নিজেকে মিষ্টিমুখ করাই

নিজেই নিজের গায়ে নরম চাপড় দিয়ে ঢোল বাজাই
নিচু স্বরে গাই দু-একটা রবীন্দ্রনাথ
শব্দ করতে ভয় হয়!

এখন আর কেউ কারো জন্য সময় নষ্ট করে না 
নিজের জন্য সঞ্চয় করে
প্রচণ্ড ভয়ে, না হয় সুখে

 

এটাই কথা ছিল

অনেক দিন মেশার পরে
অনেকগুলো রাত ভোর হবার পরে
শয্যা ছেড়ে উঠে যাবার সময় 
ভ্রমরী ভ্রমরকে বলল, তোমাকে, চেনা চেনা লাগছে?
...এটাই কথা ছিল!

ভ্রমরী বাঁধবে না ঘর ভ্রমরের সাথে
রাতের পর রাত কাটাবে হৃদয় লগ্নিহীন
ভোরে ছুঁড়ে দেবে শুধু মাংসের গন্ধ, ঠোঁটের পচা বিষ্ঠা।
বরুণারা কোনোদিন সোনার মোহরহীন রাত কাটায় না-
পুরুষের সাথে
কোনোদিন ভাগাভাগি করে না আতরের গন্ধ,
রুমাল তাকেই দেয়-
যে জমি ফসলের বদলে রাত-দিন শুধু আঁচড়ায়।

বরুণা কথা রাখবে, বরুণা ঘর বাঁধবে- 
এটা মিথ্যা;
বরুণারা কোনোদিন সোনার মোহরহীন রাত কাটায় না-
পুরুষের সাথে;
বরুণা উড়ে যাবে সোনার নেকলেস মোহে কোনো এক সন্ধ্যায়
...এটাই কথা ছিল!