ব্রিটিশ শাসকের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কবিগুরুর প্রতিবাদ
বাংলা ভাষার চিরনতুনের কবি রবীন্দ্রনাথ ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ জোড়া সাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা ভাষা সাহিত্য ও সংগীতের কিংবদন্তি মহাপুরুষ। তাঁর বহুমাত্রিক হিরন্ময় আলোকছটার ঔজ্জ্বল্যে ও মহিমায় বাঙালির জাতিসত্তা হয়েছে মহিমান্বিত এবং গৌরবান্বিত। বাঙালির প্রতিটি আবেগ, উচ্ছ্বাস, ভালোবাসায়, কৃষ্টি-সংস্কৃতির প্রতিটি আঙ্গিকে, হৃদয়ের গভীরতম আর সূক্ষ অনুভূতিকে স্পর্শ করে থাকা শুধু জন্ম ও মৃত্যু দিবসে নয়, এ মহাবানবকে বিনম্র শ্রদ্ধায় গভীর ভালোবাসায় স্মরণ করবে কৃতজ্ঞ বাঙালি। তাঁর লেখা সংগীত তিনটি দেশের জাতীয় সংগীত হয়ে জাতীয় চেতনার আধার হয়ে তিনটি দেশের মানুষের হৃদয়তন্ত্রীতে সুর সৃষ্টি করে চলছে। তাঁকে শ্রদ্ধা অবনতমস্তকে ঋষি বলা হয়, কারণ তিনি ছিলেন সত্যদ্রষ্টা।
দেশে দেশে সকল বৈষম্য ও ব্যবধান ঘুচিয়ে দিয়ে মহামানবের মিলনভূমি রচনা করে গিয়েছেন। এ মহামিলনের গান গেয়ে অশান্ত উপদ্রুত ধর্মান্ধ পৃথিবীকে শান্তি ও কল্যাণের বাণী তিনি সর্বদা শুনিয়েছেন তাঁর সকল সৃষ্টির মাধ্যমে। তিনি একাধারে কবি, গীতিকবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, অভিনেতা, বিপ্লবী সমাজ সংস্কারক, দার্শনিক, কর্মী, ঋষি, দ্রষ্টা, বিশ্ব হিতৈষী, দেশপ্রেমিক, অন্যায়ের প্রতিবাদকারী বাঙালি। বিশ্বের অন্যতম চিন্তাশীল মানুষ। সাহিত্যের এমন কোনো দিক বাকি থাকেনি যেখানে রবীন্দ্র প্রতিভা জাজ্জ্বল্যমান নয়। তাঁর জীবন একটি সুবিশাল ক্যানভাস। আমি অতি নগণ্য রবীন্দ্রপ্রেমী হিসেবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কবির কতিপয় যে বিদ্রোহ, সেদিকের কয়েকটি ঘটনা শুধু উল্লেখ করার চেষ্টা করব মাত্র।
প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় বলেছেন,
“কবির জন্মের পূর্বের পাঁচটা বৎসরকে বলা যেতে পারে বাংলার সমাজের পক্ষে মাহেন্দ্রক্ষণ। এই পর্বের মধ্যে পড়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, দেবেন্দ্রনাথের ব্রাক্ষধর্ম প্রচার, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বিধবা বিবাহ ও স্ত্রী শিক্ষাবিষয়ক আন্দোলন, নীল করের হাঙ্গামা ও হরিশ মুখুজ্জের ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকায় তাঁর প্রতিবাদ, বাংলার প্রত্যন্তদেশে সাঁওতাল-বিদ্রোহ, বাংলা সাহিত্যে ঈশ্বর গুপ্তের তিরোভাব, মাইকেল মধুসূদন ও দীনবন্ধু মিত্রের আবির্ভাব, সোমপ্রকাশ পত্রিকার অভ্যুদয়, দেশীয় নাট্যশালা স্থাপন এবং নাট্যসাহিত্য ও অভিনয়ের মধ্য দিয়ে যুগোচিত প্রতিভার আত্মপ্রকাশের প্রয়াস অতি বিচিত্র ঘটনাবলি। প্রতিটি আন্দোলন বাংলাদেশকে মধ্যযুগীয় মনোভাব থেকে বাইরে আসতে সহায়তা করেছিল। আধুনিকতার সূত্রপাত হলো এই পর্বে। রবীন্দ্রনাথের আবির্ভাব বাংলার এই নবজন্মেও প্রত্যুষে।” তাঁর আশি বছরের জীবন ছিল ব্রিটিশ শাসনের অধীন। কৈশোর জীবনে ইংরেজি সভ্যতার ভক্ত থাকলেও জীবনের শেষে এসে তিনি তা হারিয়েছেন। শেষে এসে তিনি দেখেছেন, ‘মনুষ্যত্বেও অন্তহীন প্রতিকারহীন পরাভব।’
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের কৃত অন্যায়ের বিরুদ্ধে সব সময় তিনি ছিলেন সোচ্চার। ব্রিটিশ শাসকদের ব্যাপারে তার অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি এবং তার প্রকাশ ব্রিটিশদের এ দেশ থেকে চলে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে করেছে আরো সম্ভাবনাময় ও দিক নির্দেশনাময়। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর হিজলীতে হৃদয়বিদারক ঘটনার অবতারণা হয়েছিল। বিনা বিচারে আবদ্ধ বন্দিদের ওপর গুলি চালনা করা হয়। দুজনের মৃত্যু হয়, আহত হন অনেকে। সংক্ষুব্ধ মানুষ জমায়েত হন। প্রতিবাদ সভা হয় ও সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্রনাথ।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে বলে রাখা ভালো, আমি রাষ্ট্র-নেতা নই, আমার কর্মক্ষেত্র রাষ্ট্র আন্দোলনের বাইরে। কর্তৃপক্ষের কৃত কোনো অন্যায় বা ত্রুটি নিয়ে সেটাকে আমাদের রাষ্ট্রিক খাতায় জমা করতে আমি বিশেষ আনন্দ পাইনে। এই যে হিজলীর গুলি চালনার ব্যাপারটি আজ আমাদের আলোচ্য বিষয়, তার শোচনীয় কাপুরুষতা ও পশুত্ব নিয়ে যা কিছু আমার বলবার সে কেবল অবমানিত মনুষ্যত্বের দিকে তাকিয়ে। তিনি সেদিন আরো বলেন, প্রজাকে পীড়ন স্বীকার করে নিতে বাধ্য করা রাজার পক্ষে কঠিন না হতে পারে কিন্তু বিধিদত্ত অধিকার নিয়ে প্রজার মন যখন স্বয়ং রাজাকে বিচার করে, তখন তাকে নিরস্ত করতে পারে কোন শক্তি? এ কথা ভুললে চলবে না যে প্রজাদের অনুকূল বিচার ও আন্তরিক সমর্থনের পরেই অবশেষে বিদেশি শাসনের স্থায়িত্ব নির্ভর করে। কথাগুলো অবশ্যই ব্যথাভরা মানুষের মুখে দৃঢ়তার ছাপ এঁকে দিয়েছিল।”
১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগের সভায় সমবেত শান্ত নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় কবি মনে অসহ্য ব্যথার সঞ্চার হয়েছিল। অপমানে কবিহৃদয় বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল। তিনি প্রতিবাদ করলেন। ব্রিটিশদের দেওয়া ‘স্যার’ উপাধি ত্যাগ করেছিলেন।
মহাত্মা গান্ধী, সুভাষ চন্দ্র, জওহরলাল প্রমুখ নেতাদের গ্রেফতার করায় ক্ষুব্ধ কবি লেখেন :
“ভগবান, তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারে বারে
দয়াহীন সংসারে,
তারা বলে গেল ‘ক্ষমা করো সবে’ বলে গেল ভালোবাসো
অন্তর হতে বিদ্বেষবিষ নাশো।
বরণীয় তারা, স্মরণীয় তারা, তবুও বাহির-দ্বারে
আজি দুর্দিনে ফিরানু তাদের ব্যর্থ নমস্কারে।
কণ্ঠ আমার রুদ্ধ আজিকে, বাঁশি সংগীতহারা,
অমাবস্যার কারা
লুপ্ত করেছে আমার ভুবন দুঃস্বপনের তলে।
তাই তো তোমায় শুধাই অশ্রুজলে-
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?”
১৬০০ সালে ৩১ ডিসেম্বর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রাচ্যে বাণিজ্য করার অধিকার লাভ করে। কোম্পানি ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে নেয় ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধ এবং ১৭৬৪ সালে বক্সাসের যুদ্ধের পর। ১৮৯৮ সালে লর্ড কার্জন ভাইসবয় নিযুক্ত হয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও কংগ্রেস নেতৃত্বে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে। তারা ভাগ কর শাসন কর নীতির ভিত্তিতে বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনা করে। হিন্দু মুসলমান দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে।
বঙ্গভঙ্গ কার্যকরের আগে থেকেই বাংলা এবং সমগ্র ভারতে মানুষ এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয় এবং প্রবল আন্দোলনের সূচনা করে। বাঙালি জাতির এই সংকটের সময়, বাংলার আকাশে ওঠা নতুন অন্ধকারের ঘনঘটাকে কাটিয়ে ওঠার জন্য বাঙালির অতি আপনজন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর লেখনী, মননশীলতা, লেখনীশক্তি, চিন্তাশক্তি দিয়ে জনগণকে আন্দোলনমুখী করে তোলেন। জনগণকে প্রত্যয়ী করে তুলতে সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, “আগামী ৩০ আশ্বিন (১৬ অক্টোবর ১৯০৫) বাংলাদেশ আইনের দ্বারা বিভক্ত হইবে। কিন্তু ঈশ্বর যে বাঙালিকে বিছিন্ন করেন নাই, তাহাই বিশেষরূপে স্মরণ ও প্রচার করিবার জন্য সেই দিনকে আমরা বাঙালির রাখিবন্ধনের দিন করিয়া পরস্পরের হাতে হরিদ্রা বর্ণেও সূত্র বাধিয়া দিব। রাখি বন্ধনের মন্ত্রটি এই- ভাই ভাই এক ঠাঁই।”
একটি সভায় রবীন্দ্রনাথ বঙ্গভঙ্গকে ‘বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদ’ আখ্যা দিয়ে জনগণকে বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ব্যক্ত করেন- বঙ্গভঙ্গ হলে বাঙালির ঐক্য বিনাশ, বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা খর্ব এবং হিন্দু মুসলিম সম্পর্কেও অবনতি হবে। তিনি সভায় একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। ঘোষণাটি হলো : “যেহেতু বাঙালি জাতির সর্বজনীন প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করিয়া পার্লামেন্ট বঙ্গের অঙ্গচ্ছেদ করিয়াছে, সেহেতু আমরা এই প্রতিজ্ঞা করিতেছি যে, বঙ্গের অঙ্গচ্ছেদের কুফল নাশ করিতে এবং বাঙালি জাতির একতা সংরক্ষণ করিতে আমরা সমস্ত বাঙালি জাতি আমাদের শক্তিতে যাহা কিছু সম্ভব তাহার সকলই প্রয়োগ করিব। বিধাতা আমাদের সহায় হউন।” কী অপূর্ব দেশপ্রেম, অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ।
ব্রিটিশ শাসকদের এই ন্যক্কারজনক বিভেদনীতি যা কবিহৃদয়কে অত্যন্ত বিচলিত করেছিল। এর জন্য তিনি রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “মুসলমানদের হিন্দুদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় ইহাই আসলে ভাবনার কথা। কে তাহাদের ব্যবহার করে তাহা এতখানি গুরুত্বপূর্ণ নয়। নষ্টের গোড়াটা লুকিয়ে আছে হিন্দুদের সামাজিক ধারার ভিতর, যাহা তাহাদের মুসলিমদের ছোট করিয়া দেখিতে শিখিয়েছে।”
জীবনসায়াহ্নে এসে তাঁর অনুভূতি আরো সৃজনশীল রূপ ধারণ করে। ভারতীয়দের বঞ্চনা তাঁর হৃদয়কে অত্যন্ত আহত করেছিল। তিনি তাঁর হৃদয় থেকে উৎসারিত আবেগ প্রকাশ করলেন তাঁর লেখনীর মাধ্যমে। তিনি লিখলেন :
“জনসাধারণের যে নিদারুণ দারিদ্য আমার সম্মুখে উদ্ঘাটতি হলো তা হৃদয়বিদারক। অন্নবস্ত্র পানীয় শিক্ষা আরোগ্য প্রভৃতি মানুষরে শরীরমনের পক্ষে যা - কিছু অত্যাবশ্যক তার এমন অভাব বোধ হয় পৃথিবীর আধুনিক-শাসনচালিত কোনো দেশেই ঘটেনি। অথচ এই দেশে ইংরেজকে দীর্ঘকাল ধরে তার ঐশ্বর্য জুগিয়েছে। যখন সভ্যজগতের মহিমাধ্যানে একান্তমনে নিবিষ্ট ছিলাম, তখন কোনোদিন সভ্যনামধারী মানব-আদর্শের এত বড় নিষ্ঠুর বিকৃত রূপ কল্পনা করতেই পারিনি; অবশেষে দেখেছি, একদিন এই বিকারের ভেতর দিয়ে বহুকোটি জনসাধারণরে প্রতি সভ্যজাতির অপরিসীম অবজ্ঞাপূর্ণ ঔদাসীন্য।”
অবশেষে তিনি তাঁর শেষ আকাঙ্ক্ষা ব্যাক্ত করলেন ও বললেন :
“ভাগ্যচক্রের পরিবর্তনের দ্বারা একদিন না একদিন ইংরেজকে এই ভারতসাম্রাজ্য ত্যাগ করে যেতে হবে। কিন্তু কোন ভারতবর্ষকে সে পিছনে ত্যাগ করে যাবে? কি লক্ষ্মীছাড়া দীনতার আবর্জনাকে? একাধিক শতাব্দীর শাসনধারা যখন শুষ্ক হয়ে যাবে, তখন এ কী বিস্তীর্ণ পঙ্কশয্যা দুর্বিষহ নিষ্ফলতাকে বহন করতে থাকবে? জীবনের প্রথম আরম্ভে সমস্ত মন থেকে বিশ্বাস করেছিলুম য়ুরোপের অন্তরের সম্পদ এই সভ্যতার দানকে। আর আজ আমার বিদায়ের দিনে সে বিশ্বাস একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেল। আজ আশা করে আছি, পরিত্রাণকর্তার জন্মদিন আসছে আমাদের এই দারিদ্র্যলাঞ্ছিত কুটিরের মধ্যে; অপেক্ষা করে থাকব, সভ্যতার দৈববাণী সে নিয়ে আসবে, মানুষের চরম আশ্বাসের কথা মানুষকে এসে শোনাবে এই পূর্বদিগন্ত থেকেই। আজ পাড়ের দিকে যাত্রা করেছি—পিছনের ঘাটে কী দেখে এলুম, কী রেখে এলুম, ইতিহাসের কী অকিঞ্চিৎকর উচ্ছিষ্ট সভ্যতাভিমানের পরিকীর্ণ ভগ্নস্তূপ! কিন্তু মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ, সে বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত রক্ষা করব। আশা করব, মহাপ্রলয়ের পরে বৈরাগ্যের মেঘমুক্ত আকাশে ইতিহাসের একটি নির্মল আত্মপ্রকাশ হয়তো আরম্ভ হবে এই পূর্বাচলের সূর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে। আর-একদিন অপরাজিত মানুষ নিজের জয়যাত্রার অভিযানে সকল বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হবে তার মহৎ মর্যাদা ফিরে পাবার পথে। মনুষ্যত্বের অন্তহীন প্রতিকারহীন পরাভবকে চরম বলে বিশ্বাস করাকে আমি অপমান মনে করি।”
এই কথা আজ বলে যাব, প্রবল প্রতাপশালীরও ক্ষমতা মদমত্ততা আত্মম্ভরিতা যে নিরাপদ নয়, তারই প্রমাণ হবার দিন আজ সম্মুখে উপস্থিত হয়েছে; নিশ্চিত এ সত্য প্রমাণিত হবে যে-
অধর্মেণৈধতে তাবৎ ততো ভদ্রাণি পশ্যতি।
ততঃ সপত্নান্ জয়তি সমূলস্তু বিনশ্যতি॥
ঐ মহামানব আসে।
দিকে দিকে রোমাঞ্চ লাগে
মর্ত্যধূলির ঘাসে ঘাসে।
সুরালোকে বেজে ওঠে শঙ্খ ,
নরলোকে বাজে জয়ডঙ্ক—
এল মহাজন্মের লগ্ন।
আজি অমারাত্রির দুর্গতোরণ যত
ধূলিতলে হয়ে গেল ভগ্ন।
উদয়শিখরে জাগে মাভৈঃ মাভৈঃ রব
নবজীবনের আশ্বাসে।
‘ জয় জয় জয় রে মানব - অভ্যুদয়'
মন্দ্রি উঠিল মহাকাশে।”