মেলা থেকে

আমাদের বইমেলা ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত দলিল : ফকির আলমগীর

Looks like you've blocked notifications!

ফকির আলমগীর—স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, প্রখ্যাত গণসংগীত শিল্পী এবং ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় একাডেমি চত্বরে দেখা মিলল তাঁর। এনটিভি অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বইমেলা নিয়ে বলেন, ‘’অমর একুশে বইমেলা শুধু বইমেলা নয়, শুধু বাণিজ্য নয়, শুধু লেনদেন নয়। সব ছাপিয়ে এই বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা, জ্ঞানের মেলা।’

বিভিন্ন দেশের বইমেলার সাথে অমর একুশের গ্রন্থমেলার বিশেষ পার্থক্য  রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ফকির আলমগীর বলেন, ‘ফ্রাঙ্কফুট বইমেলা বলুন, আর কলকাতা বইমেলা বলুন, তার অর্ধেকটায় থাকে বাণিজ্য, আর বাকি অর্ধেকটায় থাকে অন্যান্য দিক। আর আমাদের বইমেলা পুরোটাই মহান ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত দলিল। যেদিকেই তাকাই সেদিকেই যেন ইতিহাস। একাডেমি চত্বরের এই যে ভাষা শহিদদের ভাস্কর্য, এই যে বর্ধমান হাউস—সব মিলে যেন আমরা ইতিহাস বহন করে চলছি।’

মেলায় আয়োজন প্রসঙ্গে ফকির আলমগীর বলেন, ‘‘মেলাটি এবার খুব পরিপাটি, প্রসারিত এবং নান্দনিক মনে হচ্ছে। সামনে পয়লা ফাল্গুন আছে,  ভালোবাসা দিবস আছে। আমার মনে হয় মেলাটি সামনে আরো জমে উঠবে এবং সফল হবে। বইমেলায় এবার যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন। যেটি মেলার আরো উজ্জ্বলতা বাড়াবে।’ 

বইমেলায় লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের মিলনমেলা ঘটে। অনেক গুণী লেখকই আমাদের মাঝে আর নেই। তাঁদের স্মরণ করে ফকির আলমগীর বলেন, ‘এখন আর মেলায় রুদ্রকে চোখে পড়ে না, কোনো স্টলে দেখি না হুমায়ুন আজাদকে। এখানে আর মুখরিত হয় না শামসুর রাহমান, কাইউম চৌধুরী, কবীর চৌধুরী, রাষ্ট্রভাষা মতিন, যাঁদের পদচারণা মেলায় দেখা যেত এক সময়। দেখা যায় না হুমায়ূন আহমেদকেও। মেলায় তাঁদের দেখা না গেলেও আমি মনে করি তাঁরা আছেন, আমাদের হৃদয়পটে এখনো তাঁরা বিরাজমান।’

গানের মানুষ হলেও ফকির আলমগীর নিয়মিত লেখালেখি করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি গানের মানুষ হলেও প্রথমত আমি লেখক। আমি বাংলা একাডেমির একজন ফেলো। নিয়মিত আমি বিভিন্ন দৈনিক ও ম্যাগাজিনে লিখে থাকি।’

এ বছর মেলায় ফকির আলমগীরের চারটি বই এসেছে। একাডেমি চত্বরে ‘ঋঝিজ শিল্পী গোষ্ঠী’র ৩৪ নম্বর স্টলে বইগুলো পাওয়া যাবে, পাওয়া যাবে গানের সিডিও।