মেলা থেকে

বই সম্পাদনার জন্য পদ সৃষ্টি প্রয়োজন : সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা

Looks like you've blocked notifications!

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এসেছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা হলো তাঁর সঙ্গে। এনটিভি অনলাইনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেন বইমেলার নানা দিক নিয়ে। 

মেলায় কবে থেকে আসেন—জানতে চাইলে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘এসএসসি দেওয়ার পর থেকে নিয়মিতই আমি বইমেলায় আসি। তখন থেকে এখন পর্যন্ত হিসাব করে দেখলে বইমেলার পরিসর অনেক বেড়েছে। এবারের আয়োজনও অনেক বড়।’

এবারের বইমেলা সম্বন্ধে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা আরো বলেন, ‘এ বছর মেলার দুটি দিক বেশ লক্ষণীয়। এক. মেলার পরিসর বৃদ্ধি পেয়েছে, যাতে করে মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটতে পারছে, সহজে পছন্দের বইটি খুঁজে নিতে পারছে। দুই. স্টল বিন্যাসে নতুনত্ব এসেছে। প্যাভিলিয়নগুলোও বেশ প্রশস্ত ও নান্দনিক হয়েছে।’

অমর একুশে গ্রন্থমেলা মানেই প্রচুর সংখ্যক নতুন বইয়ের সমাহার, নতুন নতুন লেখক ও প্রকাশকের উন্মেষ। সে প্রসঙ্গে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘মেলায় প্রচুর বই বেরোচ্ছে। এটাকে অবশ্যই উৎসাহিত করতে হবে। অনেক লেখক তৈরি হচ্ছে, প্রকাশকের সংখ্যাও বেড়েছে।’

তবে বইয়ের গুণগত মানের দিকে আরো নজর দেওয়ার কথা জানান সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। তিনি বলেন, ‘প্রচুর বই যেমন বেরোচ্ছে, তেমনি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে বইয়ের মান যেন উন্নত হয়। প্রচুর বই আছে, যেখানে ব্যাকরণ না মেনে অসংখ্য ভুল শব্দ বা বাক্য রেখেই ছাপা হচ্ছে।’

বইয়ের মান বৃদ্ধিকরণ প্রসঙ্গে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, “আমাদের প্রকাশনা শিল্প এখন অনেক সমৃদ্ধ হয়েছে। তবে আরো মানসম্মত বইয়ের জন্য প্রকাশকদের বই সম্পাদনার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। ‘বই সম্পাদক’ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রকাশনা শিল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ। আমাদের এখানেও বই সম্পাদনার জন্য পদ সৃষ্টি প্রয়োজন। কিন্তু এখানে খণ্ডকালীন সম্পাদক দিয়ে কাজ চালানো হয়।”

অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে আন্তর্জাতিক বইমেলা করার কথা অনেকেই বলেন। এ প্রসঙ্গে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘অমর একুশে স্মরণ করে বাংলা একাডেমি এই বইমেলা আয়োজন করে থাকে। সে হিসেবে মেলার বর্তমান রূপকাঠামো ঠিকই আছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বইমেলা হতে পারে, সেটার দায়িত্ব নিতে পারেন প্রকাশকরা। তবে আমার মনে হয়, আন্তর্জাতিক বইমেলা করার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি বা সাংগঠনিক দক্ষতা, তা আমাদের এখনো হয়ে ওঠেনি।’

তবে আন্তর্জাতিক বইমেলা করার আগে সাহিত্যকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করেন সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। এ জন্য তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রচুর অনুবাদের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রসারে ই-বুক জনপ্রিয় হচ্ছে দিন দিন। এতে করে ছাপার বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে যাচ্ছে কি না কিংবা তা প্রকাশনা শিল্পে ব্যাঘাত করবে কি না—জানতে চাইলে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘আমার তা মনে হয় না। আমি মনে করি, বই পড়তে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা হাতে নিয়ে বইপড়ার আনন্দই পেতে চান।’

মেলায় আসা সবাই বইক্রেতা নন, শুধু ঘুরতেও আসেন অনেকে। এ প্রসঙ্গে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘বইমেলায় যাঁরা আসছেন, তাঁরা সবাই ক্রেতা না হলেও তাঁদের স্বাগত জানাতে হবে।’

এ বছর মেলায় সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার ‘গণমাধ্যমের লড়াই’ নামে প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। গণমাধ্যম নিয়ে নানা অভিজ্ঞতার আলোকে রচিত বইটি প্রকাশ করে অন্যপ্রকাশ।