মেলা থেকে
বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমেনি : মীজানুর রহমান
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা মিলল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানের। এনটিভি অনলাইনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এবারের বইমেলা নিয়ে কথা বলেন।
বইমেলার পরিসর বৃদ্ধি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে মীজানুর রহমান বলেন, ‘বইমেলা আগের চেয়ে বিস্তৃত হয়েছে। তবে মানুষ যাতে সহজেই বিভিন্ন স্টল খুঁজে পেতে পারে, সেদিকে আরেকটু নজর দিলে ভালো হতো।’
মেলায় বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য বই বের হয়। শুধু গল্প-উপন্যাস-কবিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বেরোচ্ছে প্রবন্ধ, ভ্রমণ সাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ নানা গবেষণামূলক বই। এ প্রসঙ্গে মীজানুর রহমান বলেন, ‘অমর একুশে বইমেলায় প্রচুর বই বের হচ্ছে। শুধু যে কবিতা, গল্প বা উপন্যাসের বই বের হচ্ছে, তা নয় কিন্তু। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ বিভিন্ন গবেষণাধর্মী বইয়ের প্রাচুর্য দেখা যাচ্ছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। সব ধরনের বই পাঠক কমবেশি কিনছে।’
তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ বিকাশে ছাপা বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমেনি বলে মনে করেন মীজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম আমাদের তরুণ প্রজন্ম ইন্টারনেট, ফেসবুক, টুইটার নিয়েই থাকে। কিন্তু মেলায় এসে দেখলাম, তরুণ প্রজন্ম প্রচুর বই কিনছে। তথ্যপ্রযুক্তির কারণে বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমেনি।’
বইয়ের মান যেন যথাযথ ঠিক করে বই প্রকাশ করা হয়, সেদিকে লেখক-প্রকাশক সবার প্রতি নজর দিতে আহ্বান করেন মীজানুর রহমান। প্রকাশনাশিল্প আগের চেয়ে উন্নতর হলেও সম্পাদনার ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। মীজানুর রহমান বলেন, ‘বইয়ের প্রচ্ছদ, ছাপা, বাঁধাইসহ নানা ক্ষেত্রে আমরা আগের চেয়ে অনেক ভালো করেছি। কিন্তু বই সম্পাদনা যাকে বলে, সেদিকে একটা সংকট রয়েই গেছে। প্রকাশকদের উচিত হবে তাঁরা যেন ভালো সম্পাদক ও প্রুফরিডার রাখেন। সম্পাদনার অভাবে অনেক বই ভুল বাক্য ও বানানে প্রকাশিত হয়। তাই এদিকে খুব নজর দেওয়া দরকার বলে আমি মনে করি।’
বাংলা আন্দোলনের অমর স্মৃতিকে ঘিরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজিত হচ্ছে। আমাদের ভাষা আন্দোলন পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। কিন্তু বাংলা ভাষার সাহিত্যকে আমরা সেভাবে অনুবাদ করে অন্য ভাষার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারিনি। এ প্রসঙ্গে মীজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এখানে অনুবাদের ক্ষেত্র অত্যন্ত দুর্বল। এদিকে আরো জোর দিলে ভালো অনুবাদ আমরা পেতে পারি।’
এ বছর বইমেলায় মীজানুর রহমানের ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও উন্নয়ন ভাবনা’ নামে একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে মেরিট ফেয়ার প্রকাশনী।