বইয়ের মোড়ক খুলল পথশিশুরা

Looks like you've blocked notifications!

ধানমণ্ডির একটা বুফে রেস্টুরেন্ট, আবহটা একটু আলাদা, এর কারণ একটা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান হচ্ছে। মনদীপ ঘরাইয়ের লেখা ‘অল্প গল্প’ গল্পগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন। কিন্তু মিলছে না গতানুগতিক অনুষ্ঠানের হিসেব। নেই কোনো প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি কিংবা সভাপতি। লেখকের সাথে মূল চেয়ারগুলোতে বসে আছে তিনজন শিশু। মিরাজ,তানজিলা ও রাজু। বয়স ১০ থেকে ১২। ওরা পথশিশু। ওরাই করছে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন।

ব্যতিক্রমী এই আয়োজনের উদ্যোক্তা মনদীপ ঘরাই পেশায় সরকারি কর্মকর্তা হলেও বেশি পরিচিত তার লেখালেখি আর সমাজকর্মের জন্য। এবার নিজের প্রথম গল্পগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানেও আনলেন ভিন্নতা। মনদীপ ঘরাই বলেন, ‘লেখালেখির জগতটাকে সমাজকর্মের সাথে মিশিয়ে দিতেই এ উদ্যোগ। খরুচে অনুষ্ঠান করে মোড়ক উন্মোচন না করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাচ্চাগুলোকে সাথে নিয়ে একবেলা মন ভরে একসাথে খাওয়ার, ওদের কিছু উপহার দেওয়ার আর পরে বইয়ের সাথে পাকাপাকিভাবে যুক্ত করার।’

এই বইয়ের সাথে পাকাপাকিভাবে যুক্ত করার বিষয়েও আছে নতুনত্ব। ‘অল্প-গল্প’ বইয়ের লভ্যাংশের ২১ শতাংশ টাকা ব্যয় করা হবে এই তিন পথশিশুর শিক্ষা সহায়তায়। একুশে বইমেলা বলে সহযোগিতার শতাংশটাও ২১।

সেই সাথে মিল আছে বইয়ের গল্প সংখ্যাতেও। ২১টি গল্প আছে এই বইয়ে। যার মধ্যে সহজ শিশু নামে একটি গল্প আছে পথশিশুদের নিয়ে।

বর্ষাদুপুর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিতব্য এ বইয়ের প্রকাশক তন্ময় বলেন, ‘আমার প্রকাশনার জীবনে এমন মোড়ক উন্মোচন এই প্রথম। খুবই ভালো লাগছে এমন একটি অনুষ্ঠানের অংশ হতে পেরে। আশা করি ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানের মতো বইটিও পাঠকপ্রিয়তা পাবে।’

উদ্বোধকদের একজন মিরাজ। বয়স ১০।  তার অনুভূতি জানতে চাইলে সে বলে, “ খুব মজা লাগছে এইখানে এসে। মন ভইরা খাইছি। গল্প করছি। বইয়ের প্যাকেট খুলছি।”

দেশে এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। লেখকের আশা এমন উদ্যোগ উৎসাহিত করবে অন্যদেরও। এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব তপন কর্মকার, সঙ্গীত শিল্পী দীপক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্লাডম্যানের প্রতিষ্ঠাতা জিসান, বাংলাদেশ বেতারের উপস্থাপক সজীব দত্ত ও অন্যরা।

‘অল্প-গল্প’ পাওয়া যাবে বইমেলাতে। বর্ষাদুপুরের স্টলে।স্টল নং ২৯৬-২৯৭।