বইমেলায় বাড়ছে শিক্ষার্থীদের ভিড়

Looks like you've blocked notifications!

অমর একুশে গ্রন্থমেলার পঞ্চম দিন  আজ মঙ্গলবার। আজ মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায়। শুরুতেই ঝাঁকে ঝাঁকে স্কুল কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়েদের দেখা গেছে মেলা প্রাঙ্গণে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থেকে এসেছে। আপাতত মেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখাই উদ্দেশ্য। সামনে আরো কয়েকবার তারা আসতে চান মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে পছন্দের বইগুলো কিনতে। একজন জানান, হুমায়ূন আহমেদের সব বই পড়া শেষ। তাই তিনি নতুন লেখকের সন্ধান করছেন যিনি হুমায়ূন আহমেদের মতো করে তাকে ধরে রাখতে পারবেন। ছাত্রদের মধ্যে একজনের হাতে বেশ কিছু অনূদিত থ্রিলার বই দেখা যায়। তিনি বলেন, দেশি থ্রিলার বইগুলোর থেকে বিদেশি থ্রিলার বই পড়তে ভালো লাগে।   

নতুন বই

মেলার চতুর্থ দিন প্রতিটা প্রকাশনী সংস্থা থেকে বেশকিছু নতুন বই এসেছে। এ দিনে বাংলা একাডেমিতে নতুন বই জমা পড়েছে ১৪২টি। প্রথম দিন নতুন বই জমা পড়েছিল সাতটি। দ্বিতীয় দিনে ৮১টি। তৃতীয় দিনে ১৩৮টি ও চতুর্থ দিনে ১৪১টি। গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদ-শিশুসাহিত্য সব ধরনের বই আছে এ তালিকায়। তবে এখন পর্যন্ত কবিতা এগিয়ে আছে। গল্প ও উপন্যাসের বইও এসেছে পর্যাপ্ত। প্রবন্ধ ও অনুবাদের বই সামনে আরো আসবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

আলোচনা পর্ব

দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু হয়েছে বইমেলার মূল মঞ্চের আলোচনা পর্ব। আলোচনা পর্বটি শুরু হয় বিকেল ৪টায়। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল : কবি সিকানদার আবু জাফর : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি। মূল প্রবন্ধকার নাসির আহমেদের উপস্থাপিত প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন রফিকউল্লাহ খান, শিরীন আখতার ও বায়তুল্লাহ কাদেরী। সভাপতিত্ব করেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এরপর শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও সংগীত সন্ধ্যা।

লেখক বলছি

অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের সংযোজন 'আমি লেখক বলছি' মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অনুবাদক আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া, শিশুসাহিত্যিক আলম তালুকদার, কবি আয়শা ঝরনা, কথাশিল্পী হামীম কামরুল হক ও কবি অরবিন্দ চক্রবর্তী।

উল্লেখ্য, এ মঞ্চে বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচজন করে লেখক থাকেন। প্রতি লেখক ২০ মিনিট করে এই মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেন। সঞ্চালনায় থাকেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা।

লেখক হিসেবে অংশগ্রহণের নিয়মাবলি

এই মঞ্চে আলোচক হিসেবে অংশ নেওয়ার পদ্ধতি হলো, আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে এক কপি বই জমা দেবেন। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়। এর জন্য কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত বইয়ের লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি থেকে মনোনীত কমিটি এই বই বাছাই করবে। বইয়ের প্রকাশকাল হতে হবে মার্চ ২০১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯।   

মোড়ক উন্মোচন

মেলার মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে মোড়ক উন্মোচন করা হয় বিভিন্ন বইয়ের। চতুর্থ দিন নয়টি, তৃতীয় দিন আটটি ও দ্বিতীয় দিন সাতটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়।

অংশগ্রহণের নিয়মাবলি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচনের উদ্দেশে বই জমা দেবেন। এজন্য তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়।  

লিটলম্যাগ চত্বর

লিটলম্যাগ চত্বরের এবারের বিশেষ আকর্ষণ কয়েকটি বিশেষ সংখ্যা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলার অধ্যাপক শহীদ ইকবাল সম্পাদিত চিহ্ন পত্রিকাটির উত্তরাধুনিক সংখ্যা এবারের মেলায় এসেছে। সংখ্যাটিতে উত্তরাধুনিক সাহিত্যের তত্ত্ব ও প্রবণতা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রবন্ধের পাশাপাশি নিয়মিত আয়োজন হিসেবে গল্প-কবিতাও আছে। গল্পকথার স্টলে পাওয়া যাচ্ছে হাসান আজিজুল হক, রিজিয়া রহমান, সেলিনা হোসেন, আবদুশ শাকুর, শওকত আলী, রাজিয়া খান সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। অল্প  কিছুদিনের মধ্যে আহমদ ছফা সংখ্যা চলে আসবে বলে জানান পত্রিকাটির সম্পাদক অধ্যাপক চন্দন আনোয়ার। 

আগামীকাল বুধবার মেলার ষষ্ট দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।