সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে উপন্যাস

Looks like you've blocked notifications!

আজ অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরু থেকেই জমে উঠেছে। বিকেল ৩টায় গ্রন্থমেলার প্রবেশপথ খুলে দেওয়ার পর পরই ক্রেতা-দর্শনার্থীরা দলে দলে আসতে শুরু করে। বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় লেখকদের আজ মেলায় স্টলে স্টলে দেখা গেছে। পাঠকরা তাদের প্রিয় লেখকের হাত থেকে এ বছরে প্রকাশিত নতুন বইগুলো নিচ্ছে। তবে কারো কারো আগের বই বেশি যাচ্ছে বলে জানান স্টলের বিক্রয়কর্মীরা। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে উপন্যাস, বলেন প্রথমার একজন বিক্রয়কর্মী। কবিতার বইও বিক্রি হচ্ছে বলে জানান চৈতন্য প্রকাশনীর স্টলের কর্মীরা। পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স থেকে জানা যায়, কয়েকজন তরুণ কবির কবিতার বইয়ের প্রথম মুদ্রণ শেষ। দ্বিতীয় মুদ্রণও শেষের দিকে। এদিকে নালন্দা প্রকাশনীর স্টলে কথা বলে জানা যায়, তাদের স্টল থেকে অনুবাদের বই বেশি যাচ্ছে। অর্থাৎ এবারের বইমেলায় স্টলভেদে বইবিক্রির প্রকৃতি আলাদা। এর কারণ হতে পারে, একেকটি প্রকাশনা সংস্থা একেক ধরনের বই প্রকাশ করে। যারা উপন্যাস বেশি প্রকাশ করে, তাদের স্টলে উপন্যাসের পাঠকের ভিড় বেশি। অনুরূপভাবে কবিতা ও অনুবাদকের পাঠক তাদের পছন্দের স্টলগুলোতে ভিড় করছে।

নতুন বই

গতকাল  সোমবার  পর্যন্ত নতুন বই জমা পড়েছে দুই হাজার ৬৮৭টি। গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদ-শিশুসাহিত্য সব ধরনের বই আছে এ তালিকায়। বাংলা একাডেমির হিসাবে, গত ১৫ তারিখ পর্যন্ত বই জমা পড়েছে : গল্প ৩১৮টি, উপন্যাস ৩২৬টি, প্রবন্ধ ১১৯টি, কবিতা ৬০২টি, গবেষণা ২৯টি, ছড়া ৪৫টি, শিশুতোষ ৫৬টি, জীবনীগ্রন্থ ৬১টি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ৫২টি, নাটক ১৬টি, বিজ্ঞানবিষয়ক বই ৩০টি, ভ্রমণকাহিনি ৩৩টি, ইতিহাসমূলক ৩০টি, রাজনীতিবিষয়ক ১৯টি, চিকিৎসাসংক্রান্ত ১২টি, রম্য ১৪টি, ধর্মীয় ৮টি, অনূদিত বই ১০টি, সায়েন্স ফিকশন/গোয়েন্দা ২৩টি এবং বাকিগুলো অন্যান্য।

আলোচনা পর্ব

প্রতিদিন বইমেলার মূলমঞ্চে বিকেল ৪টায় শুরু হয় আলোচনা পর্ব। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল, বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন বড়ুয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আলম তালুকদার, আসলাম সানী, লুৎফর রহমান রিটন, আমীরুল ইসলাম ও আনজীর লিটন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ। এরপর একইমঞ্চে শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও সংগীত সন্ধ্যা।

লেখক বলছি

অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের সংযোজন ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে আজ উপস্থিত ছিলেন লেখক মতিন্দ্র মানখিন, গদ্যলেখক ফারুক মঈনউদ্দীন, কবি বদরুল হায়দার, গল্পকার রেজা ঘটক ও কবি আলতাফ শাহনেওয়াজ।

এ মঞ্চে বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচজন করে লেখক উপস্থিত থাকেন। প্রত্যেকে ২০ মিনিট করে এই মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেন। সঞ্চালনায় থাকেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে এক কপি বই জমা দেবেন। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়। এর জন্য কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত বইয়ের লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি থেকে মনোনীত বই বাছাই উপকমিটি এই বই বাছাই করবে। বইয়ের প্রকাশকাল হতে হবে মার্চ ২০১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯।

মোড়ক উন্মোচন

মেলার উনিশতম দিনে মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ১৩টি বইয়ের। গত ১৮ দিনে প্রায় ছয় শতাধিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় বইমেলার এই মঞ্চে।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচনের জন্য বই জমা দেবেন। এজন্য তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেলে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়।

আগামীকাল বুধবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২০তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টার সময়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।