Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এনটিভিতে উৎসবের আমেজ

জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি

রোমান্টিক শহরে মেহজাবীন

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

জন্মদিনে রুক্মিণী

মি. অ্যান্ড মিসেস মেসি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

ভিডিও
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৮
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৮
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআনুল কারিম : পর্ব ০১
কোরআনুল কারিম : পর্ব ০১
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৭০
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৭০
গানের বাজার, পর্ব ২৩৮
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৭
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
এই সময় : পর্ব ৩৮৪০
এই সময় : পর্ব ৩৮৪০
আসমা সুলতানা
১২:৪২, ০৫ এপ্রিল ২০১৯
আসমা সুলতানা
১২:৪২, ০৫ এপ্রিল ২০১৯
আপডেট: ১২:৪২, ০৫ এপ্রিল ২০১৯
আরও খবর
ফ্রান্সে প্রদর্শিত হবে চিত্রশিল্পী বাপ্পীর পেইন্টিং
হত্যা, সন্ত্রাস ও নাশকতার বিরুদ্ধে ঢাবিতে প্রতিবাদী গণচিত্রকর্ম প্রদর্শনী
পোট্রের্টের অষ্টম ফটোগ্রাফি কার্নিভাল
এসএম সুলতানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ২ দিনব্যাপী নানা আয়োজন
জাপানের কাহাল গ্যালারিতে চলছে রুমকির একক চিত্রপ্রদর্শনী

জর্জিয়া ও’কিফ : মোহিনী মার্গিক

আসমা সুলতানা
১২:৪২, ০৫ এপ্রিল ২০১৯
আসমা সুলতানা
১২:৪২, ০৫ এপ্রিল ২০১৯
আপডেট: ১২:৪২, ০৫ এপ্রিল ২০১৯

চিত্র ১ : তরুণ ও বৃদ্ধ বয়সে শিল্পী জর্জিয়া ও’কিফ

‘শিল্পকর্ম বলে কিছু নেই, শুধু আছে শিল্পী’— ব্রিটিশ শিল্পকলার ইতিহাসবিদ আর্নস্ট এইচ গমব্রিখের সেই অমর উক্তিটির সূত্র ধরে বললে, শিল্পকলার কোনো লৈঙ্গিক পরিচয়ও নেই, কিন্তু শিল্পীদের রয়েছে। শিল্পীর অস্তিত্ব রয়েছে বলেই শিল্পকলার জন্ম সম্ভব। অধিকিন্তু কোনো কিছু  সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ প্রক্রিয়া আর প্রস্তুতির। সেই প্রক্রিয়া অবশ্যই যন্ত্রণাময়; যন্ত্রণা ব্যতীত সৃষ্টি সম্ভব নয়। নারী বা পুরুষ সব শিল্পীরই সৃষ্টির জন্য যন্ত্রণাময় দীর্ঘ এই প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হয়। শেষ পর্যন্ত যাত্রাটাকে চালিয়ে নিতে যিনি পারেন, তিনি হন সফল শিল্পী। শিল্পী জর্জিয়া ও’কিফ (জন্ম : ১৫ নভেম্বর ১৮৮৭ – মৃত্যু : ৬ মার্চ ১৯৮৬) একবার বলেছিলেন শিল্পী হওয়া এক রাতের বিষয় নয়, যেটা কোনো লেখক বা সংগীতশিল্পীদের ক্ষেত্রে ঘটা সম্ভব যে, রাতারাতি কোনো একটি লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব, কিন্তু একজন চিত্রশিল্পী হতে গেলে দীর্ঘযাত্রা, প্রকৃত শিক্ষা এবং সাধনার প্রয়োজন।

জর্জিয়া নিজেও এমনই একজন শিল্পী, যিনি অত্যন্ত সফলভাবে তাঁর যাত্রাকে চালিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে, তাঁর সুদীর্ঘ জীবনের পথে। এবং সেই দীর্ঘ শিল্পযাত্রায় তিনি জন্ম দিয়েছিলেন অগণিত সন্তানতুল্য শিল্পকর্ম। কারণ জর্জিয়া ও’কিফের লৈঙ্গিক পরিচয় তিনি একজন নারী; প্রাকৃতিক নিয়ম মাফিকই মাতৃত্বের স্বাদ পেতে চেয়েছিলেন জীবনে। তাঁর জীবনের ভালোবাসা, প্রেমিক এবং স্বামীর কাছে তিনি  সন্তান প্রত্যাশা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তাঁর স্বামী তাঁকে শিল্পী হওয়ার প্রেরণা জুগিয়েছিলেন এবং তিনি মনে করতেন জর্জিয়ার পরিচয় সে একজন জাতশিল্পী, ঘর-সংসারের মতো সাধারণ বিষয় নিয়ে জীবন কাটানোর জন্য জর্জিয়ার জন্ম হয়নি। জর্জিয়ার জীবন গুরুত্বপূর্ণ এবং মহৎ উদ্দেশ্যে তাঁর জন্ম হয়েছে। জর্জিয়া আঘাত পেয়েছিলেন, কিন্তু শিল্পকলা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেননি কোনোদিনও এবং তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কও ছিন্ন করেননি। তবে অনেক অভিমানে  স্বামীর কাছ থেকে দূরে চলে গিয়েছিলেন। জর্জিয়ার শিল্পকর্মের মাধ্যমে আমরা সেই রহস্যময় জগতের সঙ্গে পরিচিত হই, যে জগৎটি জর্জিয়ার একান্ত ব্যক্তিগত। যেখানে তিনি আমাদের চিরচেনা প্রকৃতির সঙ্গে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেন। আর প্রকৃতিতে  জন্ম-মৃত্যু হলো অবধারিত সত্য। এই বৃত্তের বাইরে আর কিছু নেই। সেই বৃত্তের জাদুকরি আর্কষণে আমরা সবাই আকর্ষিত হই। যে বৃত্তের মার্গিক তিনি; মোহিনী মার্গিক।

চিত্র ২ : ওরিয়েন্টাল পপিস, ক্যানভাসে তৈলচিত্র, ১৯২৭

জর্জিয়া পরিব্রাজকের মতো পাহাড়ে চড়েছেন জীবনের বিভিন্ন সময়ে। তিনি মরুভূমিতে, ঝর্ণার ধারে, জঙ্গলে বৃক্ষদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন। মেঘ ও নক্ষত্র সঙ্গে তাঁর সখ্য আজীবনের। প্রকৃতির সঙ্গে ছিল তাঁর খুব অন্তরঙ্গতা। আবিষ্কারের নেশায়, অভিযানের  রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অধিগত করে শিল্পকর্মে রূপান্তরিত করতেন তিনি। যে সত্যের মুখোমুখি হতে অন্য শিল্পীরা সহস করবেন না, তিনি সেই সত্যের খোঁজে দিনের পর দিন একাকী সময় কাটিয়েছেন। জনমানব বিচ্ছিন্ন হয়ে, পাহাড়ের মাঝে মরুভূমিতে। শিল্পী হিসেবে তিনি সুদীর্ঘ সত্তর বছর ধরে নিজের শৈলী নিয়ে অবিরাম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গেছেন। যদিও তিনি বিখ্যাত এবং সুপরিচিত  তাঁর ফুলের চিত্রকলাগুলোর জন্য। যেগুলো অনেক ক্ষেত্রে ফুলের ক্লোজআপ বা বিরাটাকার বিন্যাস। সেগুলোকে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নারী যৌনাঙ্গের সঙ্গে সাদৃশ্যতা রয়েছে, মানব শরীরের বাঁকের সঙ্গে সাদৃশ্যতা রয়েছে। এমনকি যে পাহাড়ের ভাঁজ তিনি এঁকেছেন তার সঙ্গেও মানব শরীরের ভাঁজের সাদৃশ্য লক্ষণীয়।  একটি ছন্দে যেন সবাই গাঁথা। তাঁর সৃষ্টিতে দর্শক-সমালোচকরা একটি শক্তিশালী যৌন স্ফুরণ খুঁজে পান।  তিনি বারবার অস্বীকার করেছেন এই দাবি। বলেছেন মডেল রাখতে অক্ষম বলে ফুলের চিত্র নির্মাণ করতেন, কারণ ফুলকে পারিশ্রমিক দিতে হয় না। তাঁর শিল্পকলায় বাঁকানো রেখা খুব সহজাত। আমাদের মনে করিয়ে দেয় সংগীতের ধ্বনির কথা, বাতাসের সুরের কথা। জর্জিয়ার শিল্পকলার সামনে দাঁড়ালে যেন মাটির ঘ্রাণ পাওয়া যায়, এতটাই স্বতঃস্ফূর্ত তাঁর প্রকাশভঙ্গি। তিনি ক্রমাগতভাবে অস্বীকার করে গেছেন তাঁর লৈঙ্গিক প্রভাব বা পরিচয় এবং তিনি একজন স্বাধীন সত্তা হিসেবে কাজ করতে চেয়েছিলেন বলে, স্বামীর প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে বাঁচার একটা সংগ্রাম করে গেছেন। কিন্তু তিনি তাঁর শিল্পকর্ম সম্পর্কে কোনো ব্যাখ্যা রেখে যাননি। এবং তাঁর স্বামীর সহযোগিতাও তিনি আজীবন পেয়েছেন। এগুলোর কোনোটা ছাড়াই তিনি এককভাবে জর্জিয়া ও’কিফ নন।

চিত্র ৩ : গ্রে লাইনস উইথ ব্লাক, ব্ল অ্যান্ড ইয়ালো, ১৯২৩

সাধারণত শিল্পীরা বাস্তব ধর্মিতার চর্চার পরে, ক্রমান্বয়ে বিমূর্ততার দিকে ধাবিত হন। জর্জিয়ার বেলা ঘটেছিল উল্টোটা, তিনি যখন আর সবার মতো অন্য শিল্পীদের প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন তখন তিনি, শুধু চারকোল দিয়ে শুরু করেছিলেন বিমূর্ত রেখাচিত্র অঙ্কন। তারপরে জলরং বা গ্রাফাইট এবং জলরঙের মিশ্রণে, মিশ্র মাধ্যমে বিমূর্ততার চর্চা করেছেন। তিনি খুব স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁর মনের অনুভূতিগুলোকে কাগজে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। তিনি সফল হয়েছিলেন এবং ধীরে ধীরে তিনি আংশিক বিমূর্তায় চলে যান, যেখানে আমরা দেখি ফুল কিংবা গাছের অবয়ব। পাহাড় বা মৃত পশুর কঙ্কাল বা হাড়গোড় তাঁর শিল্পকলার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি সারি সারি মেঘের মিছিল বা নিউইয়র্কের আকাশচুম্বী  বিল্ডিংয়ের সারি তাঁর শিল্পকলার বিষয়বস্তুতে প্রাধান্য পেতে থাকে। জর্জিয়া ও’কিফের ফুলের চিত্রকলাগুলোর জন্য তিনি সুপরিচিত হলেও, তাঁর এই অসাধারণ ভূদৃশ্যগুলো শিল্পকলার জগতে ছিল নতুন এবং অধুনিক সংযোজন।

আশির দশকের পূর্বেই শিল্পকলার ইতিহাসের জগতে অনেকগুলো আধুনিক মতবাদ এবং ঘরানার সৃষ্টি হয়েছিল। শিল্পীরা উত্তরআধুনিক সময়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন তখন। আধুনিক মতবাদ এবং শৈলীর চর্চা করছেন। জর্জিয়াকে আমেরিকার আধুনিক চিত্রকলার জননী বলা হলেও তিনি সামগ্রিকভাবে আধুনিক শিল্পকলার ইতিহাসের জগতে একজন কর্ণধার। অভিব্যক্তিবাদ, বিমূর্তবাদ, পরাবাস্তববাদ এবং ধারণাপ্রধান শিল্পকলা, সবকিছু নিয়েই শিল্পীরা তখন চর্চা করে ফেলেছিলেন। সত্তর-আশির দশকে মারিনা আব্রাহমভিচের শিল্পকলার  ভিন্নধর্মী পরিবেশনাও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল। শিল্পকলার জগত তখন বেশ পরিপূর্ণ, এমন একটি কঠিন সময়ে খুব সহজ সাবলীলভাবে শুধু প্রকৃতির চিত্র এঁকে, সরলভাবে তিনি নিজের নিজস্বতা সৃষ্টি করেছেন, নিজস্ব শৈলী সৃষ্টিতে সফল হয়েছেন, যা একেবারেই অনবদ্য। তাঁর প্যাস্টেল রঙের বিন্যাসপূর্ণ ক্যানভাস হয়ে ওঠে তাঁর শিল্পীসত্তার সিলমোহর।

ব্যক্তি জর্জিয়া আর শিল্পী জর্জিয়াকে আলাদা করে দেখার উপায় নেই, তারা কোনো বিচ্ছিন্ন সত্তা নয়। জর্জিয়ার শিল্পকর্মগুলো  তাঁর মনের চিন্তার, গভীর ভাবনার অভিব্যক্তি। ব্যক্তি জর্জিয়া তিনি ছিলেন সাহসী, বুদ্ধিমতী, একরোখা, দৃঢ় মনোবল সম্পন্ন। তিনি ঝুঁকি নিতে এবং বলয় ভাঙতে পচ্ছন্দ করতেন। নিউইয়র্কের আরাম-আয়াস ত্যাগ করে তিনি মরুভূমিতে নিঃসঙ্গ জীবন বেছে নিয়েছিলেন। তাঁর সেই সাহসিকতার জন্য আজ এই পৃথিবীর মানুষ পেয়েছে অসংখ্য অসাধারণ শিল্পকর্ম।

চিত্র ৪: তিনটি শিল্পকর্ম :  নিউইয়র্ক স্ট্রিট উইথ মুন, নিউইয়র্ক নাইট,  রিটয কার্ল্টন নাইট, (১৯২৫-১৯২৯) 

জর্জিয়ার শিল্পকর্মের সঙ্গে সমসাময়িক শিল্পী মার্ক রথকোর শিল্পকর্মের সাদৃশ্যতা খুঁজে পাওয়া যায়। খুব অভিব্যক্তিময়, ভাবাবেগপূর্ণ, সীমিত রং, রেখা এবং আকারের ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ও বৃহৎ শিল্পকর্ম সৃষ্টি করার প্রবণতা। আরেক বিমূর্তবাদের শিল্পী, হেলেন ফ্রাঙ্কেনথালের শিল্পকর্মের সঙ্গেও সাদৃশ্যতা রয়েছে। যেমন রঙের আস্তর পাতলা করে ক্যানভাসে প্রলেপ দেওয়া। তা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন নিজস্বতায়, বৈচিত্র্যময়তা স্বকীয়। পরিসরের ওপরে রং মসৃণভাবে প্রলেপ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন।  এবড়োথেবড়োভাবে রং কখনই ব্যবহার করতেন না। নানা ভাবে তিনি আর সবার থেকে ভিন্নতা আনতে চেয়েছিলেন তাঁর চিত্রকলায়। যখন অন্য শিল্পীরা  জীবনের ভয়াবহতা প্রদর্শন করতে ব্যস্ত তিনি সিদ্ধান্ত নেন সুন্দরের কথা বলবেন। সবাই তাঁর শিল্পকলাকে ‘সুন্দর’ বলে সমালোচনা করলেও তিনি সেটাকে প্রশংসা হিসেবে গ্রহণ করতেন।

সামগ্রিক বিচারে জর্জিয়ার শিল্পকলা পরিপূর্ণভাবে বিমূর্ত নয়, আংশিক বিমূর্ত, পরাবাস্তববাদেরও আভাস মেলে তাঁর কাজে, তবে আধুনিক তো বটেই; সেই বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। কারণ জর্জিয়ার বিষয়বস্তু নির্বাচন থেকে শুরু করে সব কিছুতে ছিলেন স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র, যা তাকে দিয়েছিল ভিন্নতা। এবং আধুনিকতার পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর  উন্মুক্ত মনমানসিকতায়, সবাই যখন শহরমুখী ছিলেন তিনি প্রকৃতির কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তাঁর কাজের মাধ্যমে আধুনিকতার অর্থই হলো গ্রহণ করবার ক্ষমতা।

চিত্র ৫ : ব্ল্যাক মেসা ল্যান্ডস্কেপ, নিউ মেক্সিকো, ক্যানভাসে তৈলচিত্র, ১৯৩০

জর্জিয়ার পারিবারিক বিষয় সম্পর্কে, তাঁর কাছ থেকে আমরা তেমন কিছু জানতে পারি না। তাঁর পূর্বপুরুষরা ছিলেন আইরিশ-হাঙ্গেরিয়ান-ডাচ, বলা যায় মিশ্র  ইউরোপিয়ান। এবং আমেরিকাতে অভিবাসনের পরে তারা চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন, জর্জিয়া ছিলেন সাত ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। কিন্তু জর্জিয়ার স্বামী ছিলেন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব। আমেরিকার শিল্পকলার জগতে তিনি তখন প্রধান পুরুষ। আলফ্রেড স্টিগলিৎস (১৮৬৪-১৯৪৬), আমেরিকার বিখ্যাত আলোচিত্রকর এবং শিল্পকলার জগতে তাঁর অবদান ছিল বহুমুখী। আলফ্রেড  জর্জিয়ার মধ্যে বয়সের পার্থক্য ছিল তেইশ বছর। জর্জিয়ার সঙ্গে পরিচয় ঘটে তাদের কাজের মাধ্যমে। আলফ্রেড জর্জিয়াকে শিক্ষকতা ছেড়ে, শিল্পচর্চায় উদ্বুদ্ধ করেন। পরে দুজনের মধ্যে গভীর প্রণয় হয় এবং পরবর্তী সময়ে তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। যদিও তারা তাদের সম্পর্কের বেশিরভাগ সময় আলাদা থাকতেন, কিন্তু জর্জিয়া আলফ্রেডের কাছ থেকে আজীবন পেয়েছেন মানসিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা।

একজন শিল্পীর জন্য অর্থনৈতিক স্বাধীনতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেই পৃষ্ঠপোষকতা যদি পাওয়া যায় আপনজনের নিকট থেকে, সেটা হয় আরো নির্ভরতার। তাদের  সম্পর্ক ছিল, বেশ সংবেদনশীল, ভাবাবেগপূর্ণ, গভীর ভালোবাসাপূর্ণ। তাঁরা ছিলেন একে অপরের অনুপ্রেরণার উৎস, সমালোচক এবং বন্ধু। একই সঙ্গে, তাদের মধ্যে তিক্ততার বিষয়ও ছিল কিছু। প্রথমত ও’কিফ সন্তান কামনা করতেন, আলফ্রেড করতেন না এবং দ্বিতীয়ত, আলফ্রেডের সঙ্গে অন্য এক তরুণীর সম্পর্কের বিষয়টি ও’কিফকে খুব আহত করে।

চিত্র ৬ : ও’কিফের লেখা চিঠি, দ্য উইন্ড ব্লোজ এভরি আফটারনুন, উইন্ড ব্লোজ

আলফ্রেডকে আমরিকার আধুনিক আলোকচিত্রের জনক বলা হলেও শিল্পকলার ইতিহাসের জগতে তাঁর অবদান অসীম এবং অতুলনীয়। তিনি সমসাময়িক ইউরোপিয়ান শিল্পীদের তাঁর নিজস্ব গ্যালারি ‘গ্যালারি ২৯১’-এ প্রদশর্নীর সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আমেরিকাতে তাদের পরিচিত করিয়েছিলেন। তা ছাড়া তাঁর পত্রিকাতে নিয়মিত প্রকাশিত হতো শিল্পকলার খবরাখবর। তিনিই প্রথম আলোকচিত্রকে শিল্পকলার মর্যাদা দিতে সফল হন। শুধু তাই নয়, তিনি শিল্পীদের আর্থিকভাবে সাহায্য-সহায়তার মাধ্যমেও অবদান রাখতেন।

জর্জিয়া একবার বলেছিলেন, আলফ্রেড তাঁর নিজের কাজ থেকে জর্জিয়ার কাজ নিয়ে বেশি উদগ্রীব ছিলেন।  ও’কিফ এবং আলফ্রেডের মধ্যে স্থানগত দূরত্বের কারণে পত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল অনেক। ও’কিফের হাতের লেখাও ছিল অসাধারণ। নিজস্ব একটি ভঙ্গিমায় লিখতেন তিনি, ক্যালিগ্রাফি যেন। তাঁর হাতের লেখার শৈলী দেখলে কবি এমিলি ডিকিন্সন বা গার্ট্রুড  স্টেইনের অদ্ভুত হাতের লেখার কথা মনে হতে পারে। যারা লেখার মধ্যে অদ্ভুত অর্থহীন চিহ্ন ব্যবহার করতেন। এমনকি সমসাময়িক চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলোর সঙ্গেও ও’কিফের পত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ হতো। একবার একটি চিঠিতে ও’কিফ তাঁর চলচ্চিত্র পরিচালক বন্ধুকে লিখছেন ‘প্রতিদিন বিকেলবেলা বাতাস বয়।’ তারপরে লম্বা একটি ঢেউখেলানো রেখা টেনে, যেন বাতাস বুঝিয়েছেন, আবার বলছেন ‘বাতাস বয়’। তাঁর মধ্যে  কবি বা সংগীতজ্ঞের মতো সুর খেলা করত। তিনি শৈশবে প্রথমে সংগীতজ্ঞই হতে চেয়েছিলেন। তিনি তাঁর স্বপ্নের দিক পরিবর্তন করেন যখন  তাঁর বয়স মাত্র দশ বছর। তবে তিনি তাঁর স্বপ্নের প্রতি ছিলেন সৎ। তিনি নিজেও ছিলেন অনেক শিল্পী এবং আলোকচিত্রীর অনুপ্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু। শুধু তাঁর স্বামী নয়, তিনি অনেক আলোকচিত্রীর শিল্পকলার বিষয়বস্তু ছিলেন। সেই কাজটিও তিনি করেছেন সফলভাবে।

চিত্র ৭ : ঘোড়ার কঙ্কাল এবং গোলাপি গোলাপ, ক্যানভাসে তৈলচিত্র, ১৯৩১, ৪০ বাই ৩০ ইঞ্চি

জর্জিয়া ও’কিফ আমেরিকা তথা সারাবিশ্বের একজন খ্যাতিনামা শিল্পী যিনি জীবদ্দশাতেই ছিলেন পরিচিত এবং খ্যাত। তাঁর শিল্পকলার শিক্ষা প্রাপ্তি যেমন আমেরিকা মাটিতে তেমনি তিনি তাঁর জন্মভূমি থেকে পেয়েছেন সর্বোচ্চ স্বীকৃতি। একজন শিল্পীর জন্য নিজ দেশ ও মানুষের ভালোবাসা হলো সর্বোচ্চ প্রাপ্তি। সেইদিক থেকে বিবেচনা করলেও ও’কিফের জীবন সার্থক। তাঁর জীবনে তেমন কোনো বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছিল না, তাই  আক্ষেপও ছিল না। তিনি তাঁর স্বাধীন মতো জীবনযাপন করেছেন, ও শিল্পসৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। তিনি রেখে গেছেন বিশাল এক শিল্পভাণ্ডার, শিল্পকলার ইতিহাসে যা অমূল্য সম্পদ। তাঁর শিল্পকর্মগুলো নতুন প্রজন্মের  জন্য প্রেরণা, নতুন সৃষ্টির তাড়না, রহস্য উন্মোচনের তৃষ্ণা, অনুসন্ধিৎসু মনের খোরাক।

জর্জিয়া আজীবন নারীবাদী বা নারী-সুলভ কোনো তকমা নিতে অস্বীকৃতি জানালেও; প্রকৃতির অংশ হিসেবে তিনি প্রকৃতিকে নিজের হৃদয়ে ধারণ করেছেন এবং তাঁর সৃষ্টিতে অমর করে রেখে গেছেন,  সেই মাতৃশক্তিকে। কিন্তু প্রকৃতি যেমন সত্য, জন্মপ্রক্রিয়া সত্য, লৈঙ্গিক পরিচয়ও সত্য। এবং একজন জীবনের মার্গিক হিসেবে তিনি সত্যের অনুসন্ধানই করে গেছেন। শিল্পীর যেমন লৈঙ্গিক পরিচয় আছে, আছে মৃত্যুও তবে শিল্পকলার কেনো লিঙ্গ নেই, নেই মৃত্যু; শিল্পকলা বলে কিছু নেই আছে শুধু শিল্পী- সেই শিল্পীর দেখা আমরা পাই তাঁর সৃষ্টিতে। জর্জিয়া একবার বলেছিলেন, ‘আমি যখন মৃত্যুর কথা ভাবি একটি মাত্র অনুশোচনাই কাজ করে আমার মধ্যে তা হলো, মৃত্যুর পরে এই সুন্দর দেশটাকে দেখতে পারব না। যদি না ইন্ডিয়ানদের কথা সত্যি হয়, আর মৃত্যুর পরে আমার আত্মা হেঁটে বেড়ায় এখানে।’

চিত্র ৮ : একসময় জর্জিয়ার বাড়ি এখন জর্জিয়া ও’কিফ মিউজিয়াম, সান্টা ফে, নিউ মেক্সিকো

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ছেলের ধর্ম ‘ফাঁকা’ রাখলেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা, কারণ...
  2. ফ্লপের ধুলো ঝেড়ে ৭ বছর পর হিট দিলেন আমির
  3. বিবাহবিচ্ছেদের গুজব আর নয়, স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন অভিষেক
  4. বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল
  5. মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই
  6. সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান
সর্বাধিক পঠিত

ছেলের ধর্ম ‘ফাঁকা’ রাখলেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা, কারণ...

ফ্লপের ধুলো ঝেড়ে ৭ বছর পর হিট দিলেন আমির

বিবাহবিচ্ছেদের গুজব আর নয়, স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন অভিষেক

বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল

মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই

ভিডিও
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩০
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৯
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
গানের বাজার, পর্ব ২৩৮
সকাল বেলার নিমন্ত্রণে : পর্ব ০১
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯১
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x