শিল্পী ক্যামেলিয়ার স্মরণে ‘স্মৃতির অনুরণন’
বয়স আটকে আছে তেতাল্লিশে। ওই বয়সেই সবার চোখের আড়ালে চলে গেছেন ২০০৮ সালের ১৯ অক্টোবর। তিনি শিল্পী ক্যামেলিয়া পারভিন। আশির দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার প্রিয়মুখ। প্রয়াণের সাত বছর পর তাঁকে ঘিরে ওই তীর্থেই জয়নুল গ্যালারিতে সহপাঠী বন্ধুরা আয়োজন করেছে ‘স্মৃতির অনুরণন’ শিরোনামে একটি চিত্র প্রদর্শনীর।
গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টায় এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী ও অধ্যাপক নিসার হোসেন।
ক্যামেলিয়া ছবি আঁকতেন এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী জলরঙের ধোয়া পদ্ধতিতে। পটলচেরা চোখের নারী-পুরুষ-শিশু আর পটভূমিতে সবুজ নিসর্গ ও ফুল-পাখি-লতাপাতা মিলিয়ে দৃষ্টিনন্দন তাঁর ছবি। চিত্রপটের আবহ থেকে আলাদা করতে চিত্রে উপস্থাপিত বিষয়কে ছবির মাঝখানে প্রায় গোলাকারে তুলে ধরেছেন। ক্যামেলিয়ার নারী চরিত্রগুলো সমকালীন, তবে আঁকার ধরন পটুয়াদের মতো। ব্যক্তিজীবনে প্রথা মানেননি, তবে আঁকার ক্ষেত্রে প্রচলিতের পথে চলতে চলতে তাকিয়েছেন আরো অতীত ঐতিহ্যের দিকে।
সময় দ্রুত চলে যায়, জীবনের দৃশ্যপট পাল্টায়। পাল্টায় প্রকৃতিও, কখনো ছেঁড়া-খোঁড়া মেঘ, কখনো কাশফুলের শুভ্রতা, আবার কখনো অঝোরধারার বর্ষণ। কিন্তু স্মৃতি অবিরাম বয়ে চলে। এর মাঝে কোনো কোনো স্মৃতি বারবার তাড়িয়ে বেড়ায় পিছুটানে, মনে করিয়ে দেয় কাউকে কাউকে।
শিল্পী ক্যামেলিয়া পারভিন ছিলেন এমনই একজন, যিনি মিশে আছেন তাঁর বন্ধুদের সত্তায়। ক্যামেলিয়ার স্মৃতি তাঁর বন্ধুদের অনুরণিত করে এবং করছে। যাঁর স্মৃতি জাগরূক তাঁর বন্ধুদের কাছে। ক্যামেলিয়া পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন বন্ধু শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য্যের সঙ্গে।
শিল্পী ক্যামেলিয়ার আঁকা তিনটি চিত্রকর্মসহ তাঁর বন্ধুদের আঁকা অর্ধশতাধিক চিত্রকর্ম রয়েছে এ প্রদর্শনীতে।
প্রদর্শনী চলবে আগামী ২৪ অক্টোবর (প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা) পর্যন্ত। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।