বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব

নাটকের সঙ্গে জীবনের মেলবন্ধন

Looks like you've blocked notifications!

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসবের গতকাল সপ্তম দিনে মঞ্চায়িত হয়েছে ‘সক্রেটিসের জবানবন্দী’। আলী মাহমুদের নির্দেশনায় নাটকটি প্রযোজনা করে ঢাকার দৃশ্যপট নাট্যদল। নাটকটি রচনা করেছেন শিশির কুমার দাস।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব-২০১৫ শুরু হয় গত ২৮ অক্টোবর। আটদিনব্যাপী এই নাট্যোৎসবের প্রথম দিনেই অনেক দর্শক টিকিট না পেয়ে ফিরে গেছে। এরপরের প্রদর্শনীগুলোতে কর্তৃপক্ষ মূল টিকিটের পাশাপাশি প্রিন্ট করে দর্শকের চাহিদা মিটিয়ে আসছে। গতকালের ‘সক্রেটিসের জবানবন্দী’তেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।

মঞ্চনাটকের প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই ব্যাপক আগ্রহ বিস্ময়ের সঞ্চারণ করেছে নাটকসংশ্লিষ্টদের মনে। মঞ্চনাটকে দর্শকদের এই ব্যাপক আগ্রহের কারণ এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন রাবি নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক ও উৎসবের আহ্বায়ক আরিফ হায়দার।

এনটিভি অনলাইন : বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসবে যে পরিমাণ দর্শকের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে তা সচরাচর দেখা যায় না। এর পেছনে কারণ কী?

আরিফ হায়দার : এর পেছনে একটা বিষয় কাজ করেছে। ‘কেহ কেহ কবি মানি না/ বাংলায় প্রকৃতি হাওয়া মাটি সবই কবি হবার অনুকূলে/ অতএব আমরা সবাই কবি’ জীবনানন্দ দাশের কথা। প্রত্যেকটি মানুষ আমরা ভিতরে সংস্কৃতি লালন করি। নিজের সংস্কৃতি লালন করি। যখন নিজের সাথে মেলবন্ধনটা মিলে যায় যে, এটা আমারই, আমারই দেশের, আমারই বাংলা ভাষা, আমারই কথা, নাটকে আমারই জীবনের কথা। এ সময় মানুষকে আর বেঁধে রাখা যায় না। ওই জায়গায়ই স্বতঃস্ফূর্ততা।

এনটিভি অনলাইন : মানে মানুষ নিজেকে খুঁজে পাচ্ছে নাটকে?

আরিফ হায়দার : কোথাও কোথাও মিলে যাচ্ছে বলেই দর্শক। (হেসে) কবি বলেছেন ওইভাবে, আমি বলছি এভাবে। এইটুকুই আর কি।

এনটিভি অনলাইন : আমিও নাটক দেখছি। আমারও ভালো লাগছে।

আরিফ হায়দার : ওই যে, ভালো লাগা। এত দিন হয়নি, এখন হচ্ছে। পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সবাই মিলে থাকার জায়গা হয়েছে।

এনটিভি অনলাইন : এর আগেও বিভিন্ন নাট্যসংগঠন নিয়ে আমাদের এখানে উৎসব হয়েছে কিংবা এককভাবে নাটক করেছে। সেক্ষেত্রে তো এতটা দর্শকের দেখা মেলেনি। এর পেছনে কারণ কী?

আরিফ হায়দার : একই মেয়ে প্রত্যেক দিন দেখ। কনে হিসেবে সাজানো হলে বলো, মেয়েকে একটু দেখে আসি। অলংকরণ যেটা করা হয়েছে, ওই অলংকরণের জায়গা থেকে সবার আগ্রহটা হয়েছে। ভাবছে, ভেতরে সাজানোটা একটু দেখে আসি। এই জায়গাটা। তারপরে হচ্ছে অ্যাকাডেমিশিয়ানরা নাটক করছে, পাশাপাশি গ্রুপ থিয়েটাররা নাটক করছে। অনেকে আসছে, এই দুটো নাটকের পার্থক্যটা দেখতে।

দ্বিতীয়টা হচ্ছে যে, একটা দেশের বাইরের দল এসেছে। এই দলে অনেকে প্রতিথযশা আছেন। অনেকে যাদের বই পড়েছেন, তাদের নাটক সম্পর্কে জেনেছেন, টেলিভিশনে দেখেছে-এমন সব পারফর্মাররা আছে। এই মানুষগুলোকে তো টেলিভিশনে দেখেছে সামনা-সামনি দেখে নাই। এই আগ্রহটাও কিন্তু একটা বিষয় হিসেবে কাজ করে।

এনটিভি অনলাইন : তার মানে খুব পপুলার মানুষ এসেছে, এটাও একটা ফ্যাক্ট।

আরিফ হায়দার : অবশ্যই। অবশ্যই। পপুলার নাট্যকার-নিদের্শকরা আসছে। তাদের একটু চোখে দেখার একটা ব্যাপার আছে না। এটাও কাজ করে।

এনটিভি অনলাইন : ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে হচ্ছে এটাও কি একটা ফ্যাক্ট?

আরিফ হায়দার : যৌথভাবে তো অবশ্যই সেটা একটা ফ্যাক্ট।

এনটিভি অনলাইন : সেটাও কি দর্শকদের টানছে?

আরিফ হায়দার : না। নাটক টানছে। যৌথভাবে টানছে, এইটা বলতে পারছি না। টানছে হচ্ছে যে, একটি নাটকের উৎসবে নাটক টানছে। আমি ওপার বাংলার বাংলা নাটক দেখতে যাচ্ছি। এপার বাংলার বাংলা নাটক দেখতে যাচ্ছি। আমি বলব যে, নাটক টানছে।

এনটিভি অনলাইন : ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।

আরিফ হায়দার : আপনাকেও ধন্যবাদ।