জন্মদিন
উন্মাদ সম্পাদক আহসান হাবীব
একজন পত্রিকার সম্পাদক সাধারণত গুরুগম্ভীর মানুষ হন, দেখা করতে চাইলে অনুমতি নিতে হয়। নতুন লেখক লেখা নিয়ে গেলে গম্ভীর মুখে লেখাটা নিয়ে বলে দেন, অমুক দিনে এসে জেনে নিতে লেখা ছাপা হবে কি না কিংবা পরবর্তী তিন সংখ্যায় নজর রাখতে, যদিও এখন এই কাজটি বিভাগীয় সম্পাদকরা করে থাকেন। লেখক আর সম্পাদকের মধ্যে এমন একটি দেয়াল সৃষ্টি করা থাকে যে নতুন অনেক লেখক অঙ্কুরেই ঝরে যায়। ‘উন্মাদ’ সম্পাদক আহসান হাবীব আবার এসবের ধারেকাছেও নেই। তিনি সবার বন্ধু, ছোট বা বড়; সবার সঙ্গে সহজেই মিশে যেতে পারেন। তাঁর সঙ্গে সহজেই দেখা করা যায়। সবার জন্য তাঁর অফিসের দরজা খোলা, যে কেউ যখন-তখন যেতে পারেন। আবার চলেও যেতে পারেন। তবে উন্মাদে প্রচলিত আছে, উন্মাদ অফিসে ঢোকার দরজা একটি আছে ঠিকই, কিন্তু বের হওয়ার কোনো দরজা নেই। না, আমরা কেউ বের হওয়ার দরজা খুঁজিনি। অর্থাৎ একবার যে ঢুকেছে, সে উন্মাদ অফিস থেকে বের হতে চায় না। তার কারণ আহসান হাবীব, একজন নির্ভেজাল মজার মানুষ।
উন্মাদে কেউ লেখা নিয়ে এলে হাবীব ভাই লেখাটি নিয়ে পড়তে শুরু করবেন। ওই সময়টুকুতে চা পানের বিরতি দেওয়া হয় লেখককে। পড়া শেষে জানিয়ে দেওয়া হয় লেখা ছাপা হবে কি না। এখানেই শেষ নয়। কোনো ঘষামাজা করে যদি লেখাটা ছাপানো যায়, সেটাও জানিয়ে দেওয়া হয় তাৎক্ষণিক। অনেক সময় দেখা গেছে, কয়েকবার কারেকশন করার পরও লেখাটি মানসম্পন্ন হয়নি, তখন তাদের বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য হাবীব ভাই নিজেই পুরো লেখাটা সম্পাদনা করে ছাপিয়ে দেন। লেখার ঠিক নিচে মোবাইল কোম্পানির বিজ্ঞাপনের শর্ত প্রযোজ্যের মতে ৯ পয়েন্টে ছেপে দিতেন ‘এটাই প্রথম এটাই শেষ’। লেখক তাঁর লেখা ছাপার পর খুশি হতো, তবে বুঝতে পারত মানসম্মত লেখা না লিখলে আর ছাপা হবে না। কেউ কেউ চেষ্টা চালিয়ে যেত, আবার কেউ কেউ ঝরেও যেত। প্রশ্ন হতে পারে, এত চেষ্টা কেন? ভালো লেখা না হলে হাবীব ভাই তো প্রথমেই বাদ দিতে পারতেন।
হ্যাঁ এটা ঠিক, উন্মাদ একটি স্পেশালাইজড পত্রিকা, অর্থাৎ রম্য পত্রিকা। মানুষকে হাসানোর মতো রম্য লেখাও মোটামুটি কঠিন কাজ। তাই এই লাইনে লেখক তৈরি করার জন্য হাবীব ভাইয়ের দীর্ঘ প্রচেষ্টা। সেটা কার্টুন কিংবা রম্য লেখা যেটাই হোক, সব জায়গাতেই হাবীব ভাইয়ের চেষ্টা থাকে কারো কোনো প্রচেষ্টা ফেলে না দিতে। চেষ্টা করে যান নতুন কার্টুনিস্ট বা রম্য লেখক তৈরি করতে। এখনো কাজটি করে যাচ্ছেন তিনি।
মজার এই মানুষটির সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল ১৯৯৫ সালে একুশে বইমেলায়। তার পর থেকে তাঁর সঙ্গেই আছি। ওই যে বলেছিলাম, উন্মাদে ঢোকার দরজা একটি, বের হওয়ার কোনো দরজা নেই। দীর্ঘ এই ২০ বছরে মজার অনেক ঘটনা আছে হাবীব ভাইয়ের সঙ্গে। সেসব মজার ঘটনার কয়েকটি বলা যাক।
প্রকাশক হাবীব ভাই
১৯৯৫ সালের এক বিকেলে বুয়েট থেকে এক ছেলে আমাদের বাসায় এসে হাজির। নাম আনোয়ার সাদাত। সম্ভবত ঈদের লম্বা ছুটি ছিল সে সময়। যথারীতি আমি বাসায় ছিলাম না, তাতে কী, আব্বার সঙ্গে আনোয়ার সাদাতের আড্ডা ভালোই জমেছিল। কারণ, তাঁরা দুজনই বুয়েটের ছাত্র। এর পর কোনদিন আসবে, জানিয়ে গিয়েছিল সাদাত। উদ্দেশ্য, আমার কাছ থেকে একটা গল্প আর আব্বার কাছ থেকে পড়ালেখার পরামর্শ নেওয়া। সে সময় আমি টুকটাক একটা-দুটো বই বের করছি। অর্থাৎ প্রকাশকরা বের করছেন। নির্দিষ্ট দিনে আনোয়ার সাদাত এলো। বলল, তার সম্পাদনায় একটি সায়েন্স ফিকশন সংকলন বের হবে। সেই সংকলনে আমার একটি লেখা চাই। প্রকাশক উন্মাদ সম্পাদক আহসান হাবীব। বইয়ের নাম সায়েন্স ফিকশন সংকলন। আমি রীতিমতো উত্তেজিত। হাবীব ভাইয়ের একটি প্রকাশনা সংস্থা ছিল। নাম দিনরাত্রী প্রকাশনী। সেই সংকলনে আমার গল্প ছাপা হবে! উত্তেজিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমি সাদাতকে গল্প দিয়েছিলাম। মেলায় বইটি প্রকাশ হয়। সেখানে গিয়ে দিনরাত্রীর স্টলে বইটি উল্টেপাল্টে দেখার পর হাবীব ভাইকে সরাসরি বলি, এই সংকলনে আমার একটি গল্প ছাপা হয়েছে। আমি কি লেখক কপি পেতে পারি?
হাবীব ভাই বললেন, হ্যাঁ পারেন, মেলার শেষের দিকে লেখক কপি দেওয়া হবে। তবে এখন আপনাকে দুই কপি কিনতে হবে।
আমি সঙ্গে সঙ্গে দুই কপি কিনে ফেলি। এর পর মেলার শেষের দিকে লেখক কপি আনতে গেলে আমাকে লেখক কপি হাবীব ভাই নিজ হাতে তুলে দেন।
পরের বছর আবারো আনোয়ার সাদাতের আগমন। সেই একই উদ্দেশ্য। এবারের বইয়ের নাম ‘ক্রেমার’। বই বের হলো। দিনরাত্রী স্টলে গেলাম। হাবীব ভাই ছিলেন। সেই নিয়ম অনুযায়ী দুই কপি কিনলাম। মেলার শেষ দিকে লেখক কপি আনতে গেলাম। আমার হাতে কপি তুলে দিয়ে স্টলের ভেতর ডেকে নিলেন। চা খেতে দিলেন। আলাপের একপর্যায়ে তিনি আমাকে উন্মাদ অফিসে যেতে বললেন। পরে উন্মাদ অফিসে গিয়েছিলাম। সেই যে ঢুকেছি, এখনো আছি। এভাবেই আমার সঙ্গে হাবীব ভাইয়ের পরিচয় এবং উন্মাদ অফিসে প্রবেশ।
প্যাকেজ নাটক শুটিং
উন্মাদ একবার প্যাকেজ নাটক তৈরির জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল, অবশ্য এমন নিত্যনতুন জ্বরে উন্মাদ অফিসে সবাই আক্রান্ত হয়। সেই জ্বরাক্রান্ত হয়ে দুটো নাটক বানানো হয়েছিল, একটি একক, অন্যটি চার পর্বের। আজ আমি একক নাটকে ঘটে যাওয়া একটি মজার ঘটনার কথা বলি। নাটকটি ছিল সম্পূর্ণ অ্যাকশনধর্মী। নাম ‘শিকার’। বিদেশি কাহিনী অবলম্বনে গল্পটি লিখেছিলেন কাজীদা (কাজী আনোয়ার হোসেন)।
কক্সবাজার, রামু ও নুহাশপল্লীতে শুটিং হয়েছিল। রামুতে শুটিং করার সময় জানতে পারলাম, ওখানে বন্যহাতির উৎপাত আছে। আমরা পৌঁছানোর আগের দিন একজন পথচারীকে বন্যহাতির দল পিষে মেরেছে। আমরা সে কথা ভুলে গেলাম স্ক্রিপ্টের সঙ্গে মিলে যাওয়া প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে। পূর্ণ উদ্যমে শুটিং চলছে। বিকেল ৩টা কি ৪টার দিকে স্থানীয় চেয়ারম্যান দোনলা বন্দুক (হাতির হাত থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য দোনলা বন্দুক ব্যবহার করা হতো) হাতে দৌড়ে এসে জানালেন, বন্যহাতির একটি দল আমাদের শুটিং স্পটের দিকে আসছে। সঙ্গে সঙ্গে বন্যহাতির ভয়ে আক্তান্ত হলো পুরো ইউনিট। শুটিং প্যাকআপ। আমাদের সঙ্গে ছিল এক দুর্ধর্ষ স্ট্যান্টম্যান। জীবনের মায়া তার নেই। নাছোড়বান্দা এই স্ট্যান্টম্যানের নাম এনাম। হাবীব ভাইকে সে গিয়ে বলল, ক্যামেরা বন্ধ না করে একটা দৃশ্যের শুটিং করতে। নাটকের এক্সট্রা ফুটেজ। দৃশ্যটা এমন, বন্যহাতি তেড়ে আসছে আর সে পাল্লা দিয়ে দৌড়াচ্ছে। হাবীব ভাই শুটিং জোন ত্যাগ করতে করতে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে গেলেন, দৃশ্যটা শুট করা খুবই রিস্কি। কে শোনে তার কথা! শেষে বাধ্য হয়ে আমাকে হাবীব ভাই বললেন, মেকআপম্যান সেন্টু ভাইকে দিয়ে হাতিগুলোর মেকআপ দিতে থাকেন? আমরা আসছি। হাতিকে মেকআপ? এটা শুনে এনাম থ বনে গেলেন! ওদিকে মেকআপম্যান সেন্টু ভাইসহ ইউনিটের সবাই ভোঁ-দৌড়। কারণ, নাকে বন্যহাতির গন্ধ আসতে শুরু করেছে। তার মানে, আমাদের খুব কাছেই বন্যহাতির দল চলে এসেছে। এই হলেন উন্মাদ সম্পাদক আহসান হাবীব ভাই, যিনি প্রচণ্ড প্যানিকের ভেতরেও মজা করতে পারেন। পরের দুই দিন আমরা অবশ্য ওই একই স্পটে শুটিং করেছি। হাতি আর আসেনি।
টেলিফোন
একদিন উন্মাদ অফিস বন্ধের পর হাবীব ভাই আমাকে বললেন, পরের দিন সকালে অফিসে আসতে। উদ্দেশ্য, নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখা। প্রস্তাবটা আমারই ছিল, হাবীব ভাই বলবেন, আমি লিখব। পরদিন অফিসে যেন কেউ না আসে, তার ব্যবস্থা হিসেবে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে অফিস বন্ধ থাকবে।
পরদিন সকাল ১০টায় অফিস চলে গেলাম। হাবীব ভাই আগেই এসেছিলেন। কাগজ-কলম, চা-পানির ব্যবস্থা করা ছিল। আমি অফিসে ঢোকার পর দরজা লাগিয়ে কাজে নেমে পড়লাম। হাবীব ভাই বলে যাচ্ছেন, আমি লিখে যাচ্ছি। মাঝেমধ্যে চা পানের বিরতি। হঠাৎ উন্মাদের ল্যান্ডফোনটা বেজে উঠল। দুজনই চমকে উঠি। কে ফোন করল? যেখানে সবাই জানে আজ অফিস বন্ধ! হাবীব ভাই ফোন ধরলেন। অফিসের পাশের বাড়িরই এক ভক্ত। দুজনে কথা বলছেন; আমি শুধু হাবীব ভাইয়ের কথাগুলো শুনতে পাচ্ছিলাম। সেই কথোপকথনে হাবীব ভাইয়েরটা ছিল এ রকম—
: হ্যালো।
: ওয়ালাইকুমুস সালাম।
: হ্যাঁ, ভালো আছি।
: না না, আমি অফিসে নেই। বাইরে।
: আচ্ছা, আচ্ছা।
: ধন্যবাদ।
আমি হাবীব ভাইয়ের একপেশে কথার শেষ অংশটুকু শুনে চমকে উঠলাম। তিনি অফিস ল্যান্ডফোনে বলছেন, ‘না না, আমি অফিসে নেই। বাইরে।’
হাবীব ভাইরে বললাম, ‘করেছেনটা কী?’
কেন কী করেছি?
আপনি তো ল্যান্ডফোনে বলেছেন অফিসে নেই।
চমকে উঠে হাবীব ভাই বললেন, ‘তাই নাকি? তাড়াতাড়ি অফিস বন্ধ করেন। যেকোনো সময় ও চলে আসতে পারে। পাশেই থাকে। অফিস থেকে বেরিয়ে বাইরে গিয়ে লুকিয়ে থাকি।’
অফিস তালা দিয়ে বাইরে বের হয়ে রাস্তার বাঁ দিকের একটি গলিতে গিয়ে লুকালাম। মাঝেমধ্যে দুজনই গলির মুখে এসে দেয়ালের আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে দেখলাম, ফোনকারী ব্যক্তি আসে কি না। চার্লি চ্যাপলিনের ‘দ্য কিড’ ছবির সেই দৃশ্যটার মতো, যেখানে চ্যাপলিন ও বাচ্চা ছেলেটা পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গলির দেয়ালের আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে দেখছিল, কতক্ষণ পরপর আমার ঠিক সেই দৃশ্যেই যেন অভিনয় করে যাচ্ছিলাম। ৩০-৪০ মিনিট পর বোঝা গেল ফোনকারী ভদ্রলোক আর আসবে না। অফিসে ফিরে আবার কাজ শুরু করলাম। সেদিন আর কোনো ফোন আসেনি। এমনকি কেউ অফিসেও আসেনি। সন্ধ্যার ভেতর স্ক্রিপ্ট লেখা শেষ। নাটকের নাম ‘মূল্য এক কোটি টাকা মাত্র’।
একটি সায়েন্স ফিকশন পত্রিকা
হাবীব ভাইয়ের মাথায় সব সময় নিত্যনতুন আইডিয়া খেলে বেড়ায়। নতুন কিছু করা বা নতুন ম্যাগাজিন বা বই বের করা তাঁর প্রতিদিনকার বিষয়। একদিন হাবীব ভাই আমাকে জানালেন, তাঁর এক বন্ধু ‘মৌলিক’ নামে একটি ম্যাগাজিনের ডিক্লারেশন নিচ্ছেন। তিনি ওই ম্যাগাজিনটি হাবীব ভাইকে দিতে চান প্রকাশ করার জন্য। হাবীব ভাই আমার কাছে জানতে চাইলেন, কী করা যায়। বললাম, সায়েন্স ফিকশন ম্যাগাজিন হিসেবে বের করেন। দেশে এই জাতীয় ম্যাগাজিন নেই। বিষয়টি হাবীব ভাইয়ের মনে ধরল। দুই-চারটি মিটিংয়ের পর সিদ্ধান্ত পাকা, ওটা সায়েন্স ফিকশন ম্যাগাজিন হবে। ভরসা আমি। কারণ, আমার কাছে ৪০-৫০টি বিদেশি সায়েন্স ফিকশন ম্যাগাজিন ও দেড় থেকে দুই হাজার সায়েন্স ফিকশন বই আছে। এই ভরসায় হাবীব ভাই কঠিন এক নতুন কাজে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। হাবীব ভাই সম্পাদক, আমি নির্বাহী। প্রথম সংখ্যা থেকেই ম্যাগাজিন হিট। উন্মাদ আর মৌলিক একই অফিসে ছিল। হাবীব ভাই ব্যস্ত উন্মাদ নিয়ে আর আমি মৌলিক নিয়ে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর তরুণ লেখকের আগমন ঘটে উন্মাদ অফিসে, মানে মৌলিক অফিসে। দিন যত যেতে থাকল মৌলিকের পাঠক-লেখকে পূর্ণ হয়ে উঠতে লাগল উন্মাদ অফিস। বেগতিক দেখে হাবীব ভাই প্রতিদিন বিকেলে একটি বিজ্ঞান আড্ডার ব্যবস্থা করলেন। এই বিজ্ঞান আড্ডা দিন দিন জমে উঠতে লাগল। এর ফলে উন্মাদের স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটতে লাগল। একদিন হাবীব ভাই আমাকে ডেকে বললেন, ‘উন্মাদ কি বন্ধ করে দেব?’ (হাবীব ভাই কিন্তু সিরিয়াসলি বলেননি, বলেছিলেন মজা করে)। উন্মাদ বন্ধ হয়নি; তবে মৌলিক বন্ধ হয়ে গেছে আত্মপ্রকাশের দুই বছর পর অর্থের অভাবে।
গ্লাস ভাঙা
উন্মাদের অফিস আড্ডার জন্য বেশ বিখ্যাত। আড্ডার ব্যাপ্তি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এর ভেতর উন্মাদ পত্রিকার ফিচারের আইডিয়া বের হচ্ছে। লেখালেখির কাজ, কার্টুন আঁকা সবই চলছে। যা বলছিলাম, উন্মাদে আড্ডা দিতে দিতে এমন একপর্যায়ে চলে যায়, তখন আশপাশে কী ঘটছে তার কোনো খেয়ালই থাকে না। আড্ডার মধ্যে হঠাৎ শোনা গেল গ্লাস ভাঙার ঝনঝনাৎ শব্দ। সবাই চমকে ওঠে; পিনপতন নীরবতা। শব্দের উৎস সন্ধানে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে সবাই। ঘটনাটা ঘটিয়েছেন হাবীব ভাই। তুঙ্গে থাকা আড্ডার দম নেওয়ার জন্য হাবীব ভাই টেবিলের ওপর থেকে গ্লাস কিংবা চায়ের কাপ দেয়ালে ছুড়ে মারতেন, যাতে আড্ডার সাময়িক বিরতি হয়।
তাই উন্মাদ অফিসে আগে প্রায়ই নতুন গ্লাস কিংবা কাপ কিনতে হতো!