৯১তম জন্মদিন উদযাপিত

‘শামসুর রাহমান আমাদের চেতনার কাব্যিক রূপকার’

Looks like you've blocked notifications!
কবি শামসুর রাহমানের ৯১তম জন্মদিনের আয়োজনে বক্তব্য দিচ্ছেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। ছবি : সংগৃহীত

‘শামসুর রাহমানের কবিতা ধারণ করেছে আমাদের সমাজসত্তার সামগ্রিক বিবর্তন। তিনি আমাদের চেতনার কাব্যিক রূপকার। ভাষা আন্দোলন পূর্ববাংলার কবিতাকে যেভাবে বদলে দিয়েছে, শামসুর রাহমানের কবিতাকেও সেই প্রেক্ষাপটে বিচার করতে হবে। যতদিন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য থাকবে, ততদিন শামসুর রাহমানের কবিতা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে পঠিত হবে।’

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমানের ৯১তম জন্মদিনে তাঁকে স্মরণ করে এভাবেই বলেন বক্তারা।

বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ ও শামসুর রাহমান স্মৃতি পরিষদ-এর যৌথ উদ্যোগে গতকাল বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আলোচনা, নিবেদিত কবিতাপাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

আনিসুজ্জামান বলেন, ‘শামসুর রাহমান স্বৈরাচার-মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা এবং সব অশুভের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে অসাধারণ শিল্পনৈপুণ্যে কবিতা রচনা করে গেছেন। যতদিন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য থাকবে, ততদিন শামসুর রাহমানের কবিতা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে পঠিত হবে।’ 

শামসুর রাহমানকে ঘিরে স্মৃতিচারণ ও আলোচনায় অংশ নেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ। কবিকে নিবেদিত কবিতাপাঠে অংশ নেন রবিউল হুসাইন, আনোয়ারা সৈয়দ হক, কাজী রোজী, লিলি হক, শিহাব সরকার, ফারুক মাহমুদ, হাসান হাফিজ, রেজাউদ্দিন স্টালিন, নাহার ফরিদ খান, পিয়াস মজিদ, হানিফ খান। কবির কবিতা আবৃত্তি করেন রফিকুল ইসলাম, লায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলী, ফয়জুল আলম পাপ্পু ও শাহাদাৎ হোসেন নিপু। শামসুর রাহমানের কবিতা থেকে সংগীত পরিবেশন করেন রফিকুল আলম ও আবিদা রহমান সেতু। কবির কবিতা অবলম্বনে নৃত্য পরিবেশন করেন সাহিদা রহমান সুরভি।

অনুষ্ঠানে শামসুর রাহমানের ছেলে ফাইয়াজ রাহমান, পুত্রবধূ টিয়া রাহমান, পৌত্রী নয়না রাহমান, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, কথাসাহিত্যিক মোহিত কামাল, লেখক-সাংবাদিক নাসিমুন আরা হক, গবেষক ড. ইসরাইল খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজনের শুরুতে এদিন বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষের সামনে কবির প্রতিকৃতি উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলা একাডেমির সাবেক কর্মকর্তা প্রাবন্ধিক-অনুবাদক আরশাদ আজিজের প্রয়াণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বক্তারা বলেন, নিভৃত কাব্যলোক থেকে শামসুর রাহমান সমকালকে আলোড়িত হয়েছেন, জাতীয় জীবনের মূল কেন্দ্রস্বরকে তাঁর জীবনচেতনায় ভাস্বর করে তুলেছেন। নির্জনতা ও নিঃসঙ্গতা থেকে শামসুর রাহমান যেভাবে জনতার স্বাধীনতাকামী ময়দানে কবিতাকে নিয়ে এসেছেন, তা বাংলা কবিতার জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত ও বাংলা একাডেমির উপপরিচালক কবি আমিনুর রহমান সুলতান।