বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের ‘প্রাচ্যচিত্রকলা প্রদর্শনী’
প্রাচ্যধারার ধোয়া পদ্ধতিতে গতি, ভঙ্গি, ছন্দ ও ব্যঞ্জনা দিয়ে চিত্রকর্মে ভাবকে প্রকাশ করার রূপই প্রাচ্যচিত্রকর্ম হিসেবে পরিচিত। প্রাচ্যধারার চিত্রকর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রূপান্তর বা একরূপ থেকে অন্যরূপে পরিবর্তন। যার ফলে চিত্রকর্মগুলো দেখামাত্রই টেনে নিয়ে যায় চিত্রকর্মের গভীরে। বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের এমনই সৃজনধারার চিত্রকর্ম নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে গতকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে প্রাচ্যধারার চিত্রকর্ম প্রদর্শনী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগ ও ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপের আয়োজনে বাংলাদেশ ও ভারতের ৭৭ জন প্রবীণ-নবীন শিল্পীর ৯৬টি চিত্রকর্ম নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই ‘প্রাচ্যচিত্রকলা প্রদর্শনী’।
বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকজন প্রয়াত ও সমসাময়িক সময়ের বরেণ্য শিল্পীর শিল্পকর্মের পাশাপাশি ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাচ্যকলার সাবেক শিক্ষার্থী, বর্তমান শিক্ষক এবং সমকালীন প্রাচ্যচিত্র চর্চাকারী শিল্পীর চিত্রকর্মও স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে।
নৃত্য, আলোচনা ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী নবীন শিল্পীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ দিয়ে সাজানো হয় প্রদর্শনীর উদ্বোধনী আয়োজন। গতকাল বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের এবং সম্মানিত অতিথি ছিলেন শিল্প সমালোচক মইনুদ্দীন খালেদ, ভারতের কলকাতার 'গ্যালারি ইমেজ অ্যান্ড বিয়ন্ড'র কিউরেটর শারদ দুগার, ভারতীয় শিল্পী সমীর রায়। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেনের সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রদর্শনীর কিউরেটর এবং প্রাচ্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মলয় বালা।
আলোচনা পর্ব শেষেই এই আয়োজনে প্রাচ্যচিত্রকলা বিষয় সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া ভারতীয় শিল্পী স্বপন দাসের প্রশিক্ষণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী একটি ‘ওরিয়েন্টাল ওয়াস পেইন্টিং’ ওয়ার্কশপেরও উদ্বোধন করা হয়।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে প্রাচ্যধারার শিল্পকর্ম থেকে নির্বাচিত পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন নিপা রানী সরকার, দ্বিতীয় হয়েছেন রায়হান আহম্মাদ, তৃতীয় হয়েছেন সামিনা জামান। সম্মানসূচক পুরস্কার পেয়েছেন আবু হোসাইন ও হাসুরা আক্তার রুমকি। পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট, নগদ অর্থ ও সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।
প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ১১ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।