চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Looks like you've blocked notifications!
প্রয়াত চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী

বাংলাদেশের বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর)। ২০১৪ সালের আজকের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি একাধারে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও অধ্যাপক।

বাংলাদেশের চিত্রশিল্প প্রসারে পঞ্চাশের দশক থেকে শুরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেন। বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে শিল্প, সংস্কৃতি, সাংবাদিকতা ও শিক্ষাক্ষেত্রে একাধারে বিরামহীন কাজ করেছেন। দেশের সংবাদপত্র ও বই প্রকাশনার শৈল্পিক উৎকর্ষে যেসব শিল্পী ভূমিকা পালন করেছেন কাইয়ুম চৌধুরী তাঁদের অন্যতম। বইয়ের প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় নতুন এক ধারা সৃষ্টি করেন তিনি।

কাইয়ুম চৌধুরী ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি (১৯৪৯), ঢাকা আর্ট কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি (১৯৫৪) লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে ঢাকা আর্ট কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি কলেজে শিল্পী কামরুল হাসানের অধীনে ডিজাইন সেন্টার স্থাপন করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি পাকিস্তান অবজারভারে প্রধান শিল্পী হিসেবে যোগ দেন। একই সঙ্গে সাপ্তাহিক চিত্রালী ও দৈনিক পূর্বদেশে  কাজ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি পুনরায় যোগ দেন আর্ট কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৯৪ সালে অধ্যাপক কাইয়ুম চৌধুরী অবসরে যান। তবে তিনি ২০০২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান করেন। 

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় শিল্পীদের নিয়ে গঠিত ‘চারুকলা শিল্পী সংগ্রাম পরিষদ’-এর আহ্বায়ক ছিলেন তিনি।

চিত্রকলাকে দেশের গণ্ডি থেকে বহির্বিশ্বে পরিচিত করে তুলতে কাইয়ুম চৌধুরীর ভূমিকা অবিস্মরণীয়। বোদ্ধাদের কাছে তিনি ‘রঙের রাজা’ হিসেবেই পরিচিত। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে স্বীয় প্রতিভার আলোকচ্ছটায় অগ্রসর চিন্তার আলোকে করে রেখেছিলেন প্রাণবন্ত।

দেশের চিত্রশিল্পের প্রসারে তিনি পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেন। বইয়ের প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় কাইয়ুম চৌধুরী এনেছেন আধুনিকতা এবং নতুন ধারার সৃষ্টিশীলতা।

কাইয়ুম চৌধুরী একুশে পদক  (১৯৮৪) ও স্বাধীনতা পদক (২০১৪), বঙ্গবন্ধু পুরস্কার (১৯৭৪), জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের শ্রেষ্ঠ প্রচ্ছদ পুরস্কার (১৯৭৫), বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৭), সুলতান পদকসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন।