নাট্যজন মমতাজউদদীন আহমদের ৯১তম জয়ন্তী আজ
নাট্যজন মমতাজউদদীন আহমদের ৯১তম জয়ন্তী আজ। এ উপলক্ষ্যে আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী নাট্যসংগঠন ‘থিয়েটার’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হবে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় ‘থিয়েটার’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে মমতাজউদদীন আহমদের নাটকে মুক্তিযুদ্ধ এবং ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’ প্রবন্ধ নিয়ে আলোচনা করা হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন প্রদীপ বণিক, জ্যেষ্ঠ সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ, থিয়েটার। আয়োজনের বিভিন্ন পর্বে পরিবেশিত হবে সঙ্গীত, আবৃত্তি, পাঠ-অভিনয়।
ভাষাসৈনিক, বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতা। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নবনাট্য আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ তিনি। মঞ্চ, টেলিভিশন, বেতার ও চলচ্চিত্র সব মাধ্যমেই তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য।
এ দেশের মঞ্চনাটকে পরিপূর্ণতা আনয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘সাতঘাটের কানাকড়ি’ এদেশের নাট্যাঙ্গনে মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। তুমুল জনপ্রিয় এই নাটকটি তৎকালীন স্বৈরশাসকের ভীত পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘বর্ণচোর’, ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’, ‘জমিদার দর্পণ’, ‘বটবৃক্ষের ধরমকরম’, ‘রাজা অনুস্বারের পালা’, ‘ফলাফল নিচাপ’, ‘যামিনীর শেষ সংলাপ’, ‘দুই বোন’, ‘ওহে তঞ্চক’, ‘খামাখা খামাখা’, ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’, ‘নাট্যত্রয়ী’, ‘হৃদয়ঘটিত ব্যাপার স্যাপার’ ইত্যাদি।
তার লেখা নাটক ‘কী চাহ শঙ্খচিল’ ও ‘রাজা অনুস্বারের পালা’ কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য তালিকাভুক্ত হয়েছিল। তার নিজ হাতে গড়া নাট্যসংগঠন ‘থিয়েটার’ দেশের অন্যতম প্রধান নাট্যদল। তার লেখা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘বাংলাদেশের নাটকের ইতিবৃত্ত’, ‘বাংলাদেশের থিয়েটারের ইতিবৃত্ত’, ‘নীলদর্পণ’ (সম্পাদনা) ও ‘সিরাজ উদ দৌলা’ (সম্পাদনা) ইত্যাদি।
২০১৯ সালে জানুয়ারি ৮৫তম জন্মদিনে বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে তাকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। নাট্যচর্চায় অবদানের জন্য মমতাজউদদীন আহমদ একুশে পদক পান ১৯৯৭ সালে। এছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, আলাউল সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। পেয়েছেন নাট্যকর্মী থেকে শুরু করে দেশের অগণিত মানুষের ভালোবাসা।