অবশেষে সার্জেন্ট মহুয়ার মামলা নিল পুলিশ

Looks like you've blocked notifications!
মনোরঞ্জন হাজং ও ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজং। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ির ধাক্কায় ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা মনোরঞ্জন হাজংয়ের এক পা হারানোর ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার পর অবশেষে ‘অজ্ঞাতনামা’ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে পুলিশ। বনানী থানায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, গাড়ির নম্বর উল্লেখ করে গাড়ির চালকসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।

গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় সড়কে দ্রুতগতির বিএমডব্লিউ গাড়ির চাপায় আহত হন মনোরঞ্জন হাজং। পরে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্যামলীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) নেওয়া হয়। গুরুতর অবস্থার কারণে অস্ত্রোপচার করে তাঁর ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এরপর তাঁকে শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

 

ঘটনার পর থেকে মহুয়া হাজং বনানী থানায় একাধিকবার মামলা করার জন্য গেলেও পুলিশ মামলা নিতে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে মানুষ। অবশেষে বাধ্য হয়ে ঘটনার ১৪ দিন পর মামলা নিল বনানী থানা-পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা তিন জনকে আসামি করা হয়।

আহত মনোরঞ্জন হাজং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার। তাঁর মেয়ে মহুয়া হাজং ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত। দুর্ঘটনার পর পথচারীরা চাপা দেওয়া সেই বিএমডব্লিউ গাড়ি এবং এর চালকসহ অন্য যাত্রীদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও তাঁরা ছাড়া পেয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় বিএমডব্লিউ গাড়িতে চালকের আসনে ছিলেন বিচারপতি রেজাউল হাসানের ছেলে সাঈদ হাসান। তাঁর স্ত্রী অন্তরা সাঈদ আর বন্ধু রোয়াদও গাড়িতে ছিলেন। দুর্ঘটনার পরপরই প্রভাবশালীদের চাপে সাঈদসহ গাড়িটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। একইসঙ্গে তারা মহুয়া হাজংয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আপসের চেষ্টা চালায়। কিন্তু মহুয়া হাজং মামলার বিষয়ে অটল থাকায় এবং গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। অনেক পুলিশ কর্মকর্তাও বিচারপতির ছেলে বলে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে ক্ষুব্ধ হন।

পরে, বনানী থানা পুলিশ মহুয়া হাজংয়ের মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করলেও আসামিদের অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে। এজাহারে সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮-এর ৯৮ ও ১০৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর ৯৮ ধারায় বেপরোয়া গতি ও নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গাড়ি চালানোর অপরাধে চালকের অনধিক তিন বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক তিন লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর ১০৫ ধারায় দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বা কেউ মারা গেলে অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান আছে।