অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের টার্গেট করে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৪

Looks like you've blocked notifications!
গ্রেপ্তার প্রতারকচক্রের সদস্য। ছবি : সংগৃহীত

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের টার্গেট করে লাখ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগ। গত শুক্রবার মোহাম্মদপুরের পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি ও কলাবাগান থানার বশিরউদ্দিন রোড এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তার হওয়া কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বড় ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেদের স্মার্টলি উপস্থাপন করেন। তাদের সুমিষ্ট কথায় প্রলোভিত হয়ে অনেক বড় বড় কর্মকর্তারাও তাদের ফাঁদে ফেঁসে যান। তারা দীর্ঘদিন ধরে এ প্রতারণার জাল বিস্তৃত করলেও একই অফিসে দু’একটির বেশি প্রতারণা করে না।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—হায়দার আলী, রেজাউল করিম, নাসির উদ্দিন ও মো. আব্দুল কাদের। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মুঠোফোন ও প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ২০ লাখ তিন হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘চলতি মাসের শুরুতে অবসরপ্রাপ্ত একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রতারক চক্রের একজন ফোন করে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ড রিসাইক্লিং পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের কর্মচারী হিসেবে পরিচয় দেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে তিনি অতিরিক্ত সচিবকে তাদের প্রজেক্টে কনসালটেন্ট পদে চাকরির প্রস্তাব দেন। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য ওই ব্যক্তি গত ১৬ অক্টোবর প্রতারকদের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী মিরপুরের পীরেরবাগে একটি অফিসে যান। সেখানে অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে গ্রেপ্তার হায়দার আলীর পরিচয় হয় এবং কনসালটেন্ট পদে নিয়োগ সংক্রান্ত আলোচনা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘আলাপচারিতার পরের দিন ওই ব্যক্তি বায়োডাটা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সেই অফিসে প্রতারকচক্রের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময়ে প্রতারক চক্রের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে ব্যবসা সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা করেন।’

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘চক্রের এক সদস্য নিজেকে ইমপোর্টারের ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি অন্যান্য সদস্যদের জানান, তার ভারতীয় বস ১৬ কোটি টাকার চশমা, হাতঘড়ি ও ক্যামেরা কিনবে। এসব পণ্য ইমপোর্ট করে ভারতীয় বসকে সরবরাহ করলে ৩০ শতাংশ লাভ হবে। এসব মালের নমুনা সংগ্রহ করে ভারতীয় বসকে দেখাতে হবে যার জন্য ৭৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। প্রতারকচক্রের সদস্যরা ওই অতিরিক্ত সচিবকে উক্ত ব্যবসায় শেয়ারে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। তিনি প্রথমে রাজী না হলেও প্রতারকদের প্রলোভনের একপর্যায়ে ব্যবসায় বিনিয়োগে আগ্রহী হন। এজন্য তিনি ১৯ অক্টোবর প্রতারকদের কথা মতো পাঁচ লাখ টাকা দেন। এরপর শুরু হয় টালবাহানা। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তাদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। তখন তিনি ডিবি পুলিশের সহায়তা নেন।’

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেকের সঙ্গে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। হারুন জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এ প্রতারণার জাল বিস্তৃত করলেও একই অফিসে দু-একটির বেশি প্রতারণা করে না। এদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে।